রফিক একটা সাধারণ গার্মেন্টস কর্মচারী। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করে সংসার চালায়—মা, স্ত্রী, আর এক বছরের মেয়েকে নিয়ে ছোট্ট ঘরে তাদের জীবন। কিন্তু দিন দিন কাজের চাপ, কম বেতন আর সংসারের চাপে রফিকের হাসিটা হারিয়ে গিয়েছিল।
প্রতিদিন মনে হতো, "জীবনটা বোধহয় এর চেয়ে ভালো হতে পারত না। আমি তো কিছুই পারব না।"
একদিন রাতে কাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে রফিক দেখল, এক অন্ধ বৃদ্ধ রাস্তার পাশে বসে বাশির সুর তুলছে। হাতে একটি পুরনো টিনের কৌটা, তার মধ্যে কিছু কয়েন।
রফিক একটু থেমে জিজ্ঞেস করল,
— “চাচা, আপনি তো দেখতে পান না, তবু এভাবে বসে থাকেন কেন?”
বৃদ্ধ হেসে বলল,
— “দেখতে না পারা কষ্ট না বাবা, চেষ্টা না করা কষ্ট।”
এই একটা বাক্য যেন রফিকের ভেতর ঝড় তুলল।
সেই রাতে ঘুম আসেনি। সে ভাবল, “আমি তো দেখতে পাই, হাত-পা ঠিক আছে, তবু শুধু অভিযোগ করি কেন?”
পরের দিন থেকে রফিক কাজের পাশাপাশি অনলাইনে সেলাই শেখা শুরু করল। কয়েক মাসের মধ্যে সে নিজের হাতে জামা বানিয়ে বিক্রি করতে শুরু করে। প্রথমে বন্ধুদের মধ্যে, তারপর অনলাইনে।
এক বছরের মধ্যেই সে ছোট একটা অনলাইন ব্যবসা গড়ে তোলে। গার্মেন্টসের চাকরি ছেড়ে দেয়।
আজ রফিকের নিজের ছোট একটা দোকান আছে, মা ও স্ত্রী তার গর্বের কারণ।
প্রতিদিন দোকানের সামনে লেখা থাকে একটা বাক্য—
“দেখতে না পারা কষ্ট না, চেষ্টা না করা কষ্ট।”