বর্ণবাদের অভিযোগে আমেরিকার কিংবদন্তী শিশু সাহিত্যিক এবং ইলাস্ট্রেটর ডক্টর সিউসের ছয়টি বই আর প্রকাশিত হবে না বলে জানিয়েছে ডক্টর সিউস এন্টারপ্রাইজেস। প্রতিষ্ঠানটি লেখকের সব সৃষ্টিশীল কর্ম দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে।
ডক্টর সিউস এন্টারপ্রাইজেস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা থিওডোর সিউস গিজেলের ছয়টি বই প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বইগুলোতে মানুষকে এমনভাবে চিত্রিত করা হয়েছে যা বেদনাদায়ক এবং অন্যায়। বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেলের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, ডক্টর সিউসের প্রকৃত নাম ছিল থিওডোর সিউস গিজেল।
ডক্টর সিউসের অদ্ভূত খেয়ালি শিশুতোষ গল্পগুলি বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ শিশু এবং বয়স্কদের আনন্দ দিয়েছে। তার যেসব বই প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সেগুলো হলো, ম্যাকএলিগোটস পুল (১৯৪৭), অন বিয়ন্ড জেবরা (১৯৫৫), স্ক্রাম্বলড এগস সুপার (১৯৫৩), দ্য ক্যাটস কুইজার (১৯৭৬), ইফ আই র্যান দ্য জু (১৯৫০) এবং এন্ড টু থিংক দ্যাট আই স ইট অন মালবেরি স্ট্রিট (১৯৩৭)। ডক্টর সিউস ছদ্মনামে ১৯৩৭ সালে তিনি প্রথম এন্ড টু থিংক দ্যাট আই স ইট অন মালবেরি স্ট্রিট বইটি লিখেন।
ডক্টর সিউসের বইগুলো উদ্ভট চরিত্র এবং ছন্দের কারণে বছরের পর বছর ধরে পাঠকদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এছাড়া গল্পগুলোতে ইতিবাচক বিষয়ের প্রতি গুরুত্বও দেয়া হয়েছে। আমাদের এই গ্রহের প্রতি দায়িত্বপালনের উপরও জোর দেয়া হয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সমালোচকরা বলছেন, তার কিছু কিছু বই বর্ণবাদী এবং কোন কোন জনগোষ্ঠীকে ক্ষতিকারক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
এন্ড টু থিংক দ্যাট আই স ইট অন মালবেরি স্ট্রিট বইয়ে একটি চরিত্রকে চায়নাম্যান হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এছাড়া ইফ আই র্যান দ্য জু বইয়ে দুটি চরিত্রের উল্লেখ আছে যারা আফ্রিকার দ্বীপ ইয়ারকা থেকে এসেছে। এদের শার্ট এবং জুতা ছাড়া আঁকা হয়েছে। এদের চেহারার সঙ্গে বানরের সাদৃশ্য রয়েছে। মূলত এশিয়ান এবং আফ্রিকানদের প্রতি বর্ণবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে এই বইগুলোর বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, থিওডোর সিউস গিজেল মার্কিন শিশু সাহিত্যিক, পলিটিক্যাল কার্টুনিস্ট, ইলাস্ট্রেটর, কবি, অ্যানিমেটর এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা। ডক্টর সিউস ছদ্মনামে তিনি ৬০টির বেশি বই লিখেছেন। বইগুলোর ছবিও তিনিই এঁকেছেন। বিপুল জনপ্রিয় এই শিশু সাহিত্যিকের বই ৬০০ মিলিয়নের বেশি বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ২০টির বেশি ভাষায় তার বই অনূদিত হয়েছে। ১৯৯১ সালে ৮৭ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস