Posts

প্রবন্ধ

বরই গাছ।

November 3, 2025

Shafin pro

44
View

সকালবেলা মর্নিং ওয়াক সেরে। বারান্দায় এসে দেখি কতগুলো টেবিলের উপরে বরই পড়ে আছে। সাথে দেখি একটু লবণ বডিতে লবনও আছে। তখন খুবই ক্লান্ত লাগতেছিল যেহেতু দুই তিন কিলো হেঁটে এসেছি। ইজি চেয়ারে বসতে টেবিল থেকে দুইটি বড়ই নিয়ে মুখে বিয়ে দেখলাম। খুবই ভালো লাগতেছে। টপ টপ মিষ্টি এর সাথে একটু লবণ মিশিয়ে দেখি যে খুবই ভালো লাগতেছে। বরই দুটি খেয়ে আটি দুটো হাতে নিলাম। ফেলে দেওয়ার সময় হঠাৎ করে হোঁচট খেলাম। হাত থেকে আর বরই আটি দুটো পড়ে গেল না। হঠাৎ কেন যেন মনে হল এই আঁটি দুটো দিয়ে তো আমরা দুটি বড়ই গাছ গাছের বিষ তৈরি করতে পারি। হাটি দুটো আমি বিচের জন্য রেখে দিলাম। তখন আমার মনে হল একটি বিচ একটি গাছে জন্ম দিতে পারে।  

     বরই গাছের রচনা শুরু করিতেছি: বরই বিচি দুটিকে খুব ভালো করে শুকিয়ে নিলাম। তারপরে গেলাসের পানিতে ভিজিয়ে রাখলাম। দু তিন দিন পর দেখি যে বিচি দুটো থেকে অঙ্কুরিত হচ্ছে। দিন চার দিন পাঁচ দিনের মাথায় বিচি দুটোকে উঠিয়ে নিলাম গ্লাসের পানির ভিতর থেকে। দুটি ছাদের উপরে টপে ভালো করে মাটি মিক্স করে সার মিশিয়ে বিচি  দুটি দুইটি টপে লাগিয়ে দিলাম। সাত দিনের মাথায় দেখতে পেলাম মাটি ভেদ করে গাছ বের হয়ে গিয়েছে। মাথা উপরে দেখতে সাদা সাদা উপরে একটি খোসার আবরণ লেগে আছে। আমি পানির স্প্রে নিয়ে চারা গাছ দুটিকে পানি দিলাম। এভাবে প্রতিদিন সকাল বিকাল দুবেলা করে পানি ঢালতেছি চারা গাছটিতে। চারা গাছটি সকালের পূর্ব আকাশের রৌদ পেয়ে তর তর করে বরই গাছ দুটি বেড়ে উঠলো। বরই গাছটি দুই তিন বছরের মাথায় ফল ধরে গেল। সাধারণত অন্য জায়গায় বরুই গাছ ২০ থেকে ৩০ ফুটেরও বেশি লম্বা হয়ে থাকে ।আমার ছোটবেলায় আমি তো যে বড়ই গাছটিতে উঠতাম গাছ টি না হলেও ৫০ ফুট লম্বা হয়েছিল। আমার মনে হয়। আমার যতটুকু মনে পড়ে সেই গাছটি প্রথম অবস্থায় এমন লম্বা ছিল যে ৩০ ফুট পর্যন্ত একটানা তার হয়ে  চলে গেছে। এরপর দুইদিকে দুইটি ডাল চলে গেছে। এরপর মাঝখান থেকে আবার উঁচু হয়ে গেছে ২০ ফুট লম্ব। আমি সেই উঁচু গাছে উঠে ম্যাক্সিমাম সময় বড়ই পেড়ে ব্যাগে তুলে নিতাম। এরপরে আমি নিচের ডালে আসতাম। নিচের ডাল দুই দিকে ছিল ডাল দুইটি থেকে এরপর বড়ই পারতাম। বড়ই পাতাগুলো এত বড় ছিল যা সাধারণত এখন অত বড়ই পাতা বড় হয় না। এর কারণই জানিনা। আগের দিনের ফল গুলো এত মজা ছিল। বর্তমানের বরই খেলে মনে হয় যে শুধু পাংশা আর পামছা। ছোটবেলার সেই বরই গাছটি এত শক্ত ছিল যে ডালের একদম চিকন মাথায় গেল মনে হয় চুলে ভেঙ্গে পড়বে কিন্তু কখনোই ভাঙতো না। হয়তো ভাঙ্গেনি এই কারণে যে তখন আমার বয়স কম ছিল এবং  ওজন  গাছে ঢাল বহন করতে পারত বিদায় গাছের ডাল ভাঙতো না। তবে সাধারণত বড়ই গাছের ডাল খুবই শক্ত হয়ে থাকি। কিন্তু সবচাইতে আশ্চর্য জিনিস হল। যার এত বড় গুন তার আবার কাটাও আছে। বরই পারতে গিয়ে কখনো কাটায় গুতা লাগতো এবং অনেক সময় চামড়া খসে শাল বেরিয়ে যেত সময় সময় রক্ত বের হতো। তারপরও কখনো আমি বড়ই গাছটা উঠা বাদ দিতাম না। এবং আমার সাথে ওই বড়ই গাছটিতে ওঠে কেউই পারতো না তাই আমি উপরের ডালে উঠে। বুকে ধরে দুই হাত চেপে খুব করে খুব জোরে ঝাঁকি দিতাম আমার ঝাকির কারনে বরই গুলো টপটপ করে নিচে পড়তো আর বাচ্চারা সবাই টুকাইয়া ঢুকাইয়া সেই বইগুলো জামার পকেট ও প্যান্টে এর পকেট এ ঢুকা তো। বড়ই গাছের ছাল গুলো খুবই শক্ত ছিল কিন্তু অন্যান্য গাছে তুলনা আমি যখন তখন মনে হতো যে সালগুলো সফট ছিল। আবার যখন বৃষ্টি হত তখন এত পিচল হতো যা গাছে ওঠার সম্ভব ছিল না। আমরা সাধারণত দ্বিতীয় যে ডাল দুটি ছিল সে ডাল দুটিতে বাঁশের কঞ্চি নিয়ে বাড়ি ফিরলে টপটপ করে বরই গুলো নিচে পড়ে যেত। বেশিরভাগ পাকা  বরই গুলোই পড়তো। বড়ই গাছটি একদিন কেটে ফেলল এই গাছের কার্ড গুলো খুবই শক্ত ছিল  । কার্ডগুলো দিয়ে আমরা ফার্নিচার তৈরি করলাম আলমারি। অনেকদিন পর সকালবেলা গিয়ে দেখি বড়ই গাছে যে ঘুরাঘুটি ছিল। এই ঘোড়াগুলো থেকে আবার অঙ্কুরিত হয়। গোড়া থেকে লম্বা লম্বা ৩ থেকে টি ডাল বের হয়ে গেছে। আমরা আবার এক বছর পর আবার শহর থেকে গ্রামের বাড়িতে যখন যাই‌‌। তখন গিয়ে দেখি আবার ওই গাছটি খাটো হয়ে বরই ধরেছে। এভাবে আমার মনে হয় প্রতিটি গাছি বড় ছোট হয়ে আসছে। এখন তো আমরা ছাদে লাগালে বড়ই গাছ হয় টবে লাগালেও বড়ই গাছ হয় বারান্দার টবে লাগানো সেই গাছে বড়ই ধরে যার কারনে বড়ই গাছ আর অত ৫০-৬০ ফুট লম্বাও হয় না। বরই গাছের সাধের বড়ই হয় না বরই তো অত ভালো লাগে না। বরই গাছ যদি আমরা টপে লাগাই। সেই বড় বরুই কতই বা সাধ হতে পারে। আর টপ এর গাছ দিয়ে কি কখনো ফার্নিচার তৈরি করা যায়। আমরা এবছর লাগালে আগামী বছরই যদি খেতে চাই সেখানে আর গাছটা কত বড় মোটা হবে যে সেটা দিয়ে আবার ফার্নিচার কাঠ তৈরি করা হবে। এটা কোনদিনই সম্ভব না। একটা গাছে কার জন্মাতে হলে । সেই কার্ড নরমালি ৮-১০ বছর না গেলে সেটা দিয়ে ফার্নিচার অন্তত করা সম্ভব না। এখন তো বিভিন্ন ধরনের পুরাই বেড় হয়েছে । কুল বরই মিষ্টি বরই টক বরুই আপেল বরই ইত্যাদি। আসুন আমরা বেশি বেশি বড় ই ফলন বৃদ্ধি করি। বেশি বেশি বড়ই চারা রোপন করি । শক্ত মজবুত বড়ই কাট থেকে ফার্নিচার তৈরি করি। বরুই পাতা থেকে যা কিছু উপকার হয় সেগুলো আমরা ভালো করে বিশ্লেষণ করে পরীক্ষা করি। আমরা আসলে অনেকেই জানিনা যে বড়ই পাতা দিয়ে মানুষের কত রকমের রোগ নিয়ে নিরাময় করা হয়। তাহা আমাদের অনেকের ধারণাই নাই। রচনাটি এখানেই শেষ করছি।

Comments

    Please login to post comment. Login

  • Shafin pro 1 month ago

    রচনাটি লিখতে গিয়ে আমার মনে হয়ে গেল যে ছোটবেলায় যে বড় বড়ই গাছগুলো দেখতাম আমাদের প্রজন্মরা এগুলো বিশ্বাস করতে পারবে না