একটি অজানা স্বপ্ন
রোহান ছোট্ট শহরের এক শান্ত পাড়ায় থাকত। সে ছিল স্বপ্নময়, কল্পনাশক্তিতে ভরপুর কিশোর। স্কুলের পড়াশোনা শেষে সে ঘরে ফিরে এসে প্রাতঃরাশের চায়ে ডুবে যেত। কিন্তু তার জীবনের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল গল্প লেখা।
রোহানের বাবার ছোট বইয়ের আলমারি ছিল তার প্রিয় স্থান। সেখানে জমে থাকা পুরনো কাগজপত্র, কবিতা, ছোট গল্প—সবই তার কল্পনার জগতে নিয়ে যেত। সে নিজের নোটবুকে লিখত নতুন চরিত্রের নাম, শহরের নতুন রাস্তা, রহস্যময় ঘটনা। প্রতি রাতেই সে চুপচাপ বসে গল্প লিখত, কখনও কখনও রাত জেগে।
একদিন রোহান দেখল শহরের প্রবীণ লাইব্রেরিতে একটি পুরনো, ধুলোমাখা বই রয়েছে, যার নাম “অজানা জগতের গল্প”। বইটি হাতে নিলেই যেন অন্য দুনিয়ায় প্রবেশ করল। বইয়ের প্রতিটি পাতা তাকে নিয়ে যাচ্ছিল নতুন শহর, নতুন মানুষ, নতুন সমস্যার মধ্যে। রোহান বুঝতে পারল, এই বইয়ের মধ্যে এক রহস্য লুকানো আছে যা কেবল সাহসী ও ধৈর্যশীল মানুষের জন্য।
রোহান ঠিক করল, সে নিজেও এমন একটি গল্প লিখবে। গল্পের প্রধান চরিত্র রাখল আলিয়া, একজন কিশোরী যিনি সবসময় সত্যের পথে চলতে চায়। আলিয়ার জীবন এক অদ্ভুত শহরে, যেখানে প্রতিটি মানুষের মুখোশের আড়ালে রহস্য লুকানো। শহরটি তার নিজের ভেতরের কল্পনারই প্রতিফলন।
রোহান লিখতে লিখতে নিজেকেই বিস্ময়কর জগতে ভেসে যেতে লাগল। শহরের প্রতিটি ঘটনা, মানুষের হাসি, কান্না, তাদের ছোট ছোট বিশ্বাস—সবই গল্পের পাতায় জমতে লাগল। সে প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় দিল গল্প লেখায়। কখনও কখনও সে বাইরে গিয়ে প্রকৃতির দৃশ্য দেখে, মানুষের আচরণ দেখে নতুন চরিত্র বা সংলাপ তৈরি করত।
রোহান নতুন চরিত্র যোগ করল—সায়ন, আলিয়ার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। সায়ন সবসময় আলিয়াকে সাহস দিত, তাকে অনুপ্রাণিত করত, কিন্তু মাঝে মাঝে নিজের সমস্যার কারণে সে আলিয়াকে ভুল বোঝত। এই দ্বন্দ্ব গল্পকে আরও বাস্তব ও আকর্ষণীয় করে তুলল।
শহরের অন্যান্য চরিত্রও ধীরে ধীরে গল্পে প্রবেশ করল—মায়া, এক বৃদ্ধী যিনি শহরের ইতিহাসের ধারক; তুষার, একজন যুবক যে রহস্য উদঘাটনে উৎসাহী; এবং রিনো, এক রহস্যময় কিশোর যে কখনও প্রায় অদৃশ্য হয়ে যায়। প্রতিটি চরিত্রের ব্যক্তিত্ব, স্বপ্ন এবং অভ্যাস গল্পের জগতে নতুন মাত্রা যোগ করল।
একদিন শহরে এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটল। এক বৃদ্ধ মানুষ গাছের নিচে পড়ে আছেন, আর কেউ তার সাহায্য করছে না। আলিয়া এবং সায়ন সঙ্গে গিয়ে তাকে সাহায্য করল। রোহান লিখল, কিভাবে ছোট ছোট সাহায্য বড় প্রভাব ফেলে। এই দৃশ্য গ্রামের মানুষের হৃদয় স্পর্শ করল, পাঠকও শিখল মানবিকতা এবং সহানুভূতির মূল্য।
রোহান গল্পের প্রতিটি দৃশ্যে শহরের জীবনের সব রং দেখাল—সকালবেলার হালকা কুয়াশা, দুপুরের রোদের উষ্ণতা, বিকেলের হালকা বাতাসে শিশুরা খেলাধুলা, এবং রাতের চাঁদের আলোয় শীতল নিস্তব্ধতা। প্রতিটি দৃশ্য পাঠকের মনে গভীর আবেগ তৈরি করত।
গল্পের মধ্যে নতুন সংকট আসে—শহরে অদ্ভুত চুরি এবং রহস্যময় অদৃশ্য ঘটনা। আলিয়া ও সায়ন তাদের বুদ্ধি এবং সাহস দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করতে চায়। রোহান দেখাল কিভাবে মিশ্র অনুভূতি—ভয়, সাহস, আশ্বাস, ও বিশ্বাস—এক গল্পকে প্রাণবন্ত করে।
শেষমেষ, রোহান গল্প লিখে শেষ করল। সে বুঝল, লেখার আনন্দ শুধু নিজের জন্য নয়; এটি অন্যদের হৃদয়েও ছুঁয়ে যায়। গল্প শেষ হবার পর রোহান বইটি লাইব্রেরিতে রেখে আসল, যাতে অন্য কেউ নতুন জগতে প্রবেশ করতে পারে।
রোহানের জীবনের শিক্ষা স্পষ্ট—কল্পনা, ধৈর্য এবং ভালোবাসা থাকলে, একটি গল্প মানুষের জীবনেও পরিবর্তন আনতে পারে।
সম্মানিত শামীম সাহেব, আমি চাইলে এটিকে আরও ধারাবাহিক উপন্যাসে ৫০–৬০ রিস্তার পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে পারি, যাতে প্রতিটি চরিত্র, ঘটনাপ্রবাহ, রহস্য ও আবেগ বিস্তারিতভাবে ফুটে ওঠে।
আপনি কি চাইবেন আমি সেই বৃহৎ ধারাবাহিক সংস্করণ লিখি?