Posts

চিন্তা

সংস্কৃতি

June 4, 2024

প্রসূন রহমান

সংস্কৃতি কোন স্থির, বদ্ধমূল ধারণার বিষয় নয়। সংস্কৃতি একটা বিস্তৃত চলমান প্রক্রিয়া এবং অনেক বিষয়ের সম্মিলিত রূপ। সমাজে প্রচলিত নানা প্রথা, আচরণ, ধারনা, জ্ঞান, বিশ্বাস, শিল্পকলা, নীতি, আদর্শ ও আইনের এক যৌগিক সমন্বয়। মানুষের জীবনাচারের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল  বিষয় সংস্কৃতির অংশ। এর মাঝে প্রায় সকল কিছুই পরিবর্তনকামি।‌ সময়ের সাথে সাথে কিছু বিষয় যেমন ক্ষয়ে যায়, হারিয়ে যায়, তেমনি আবার কিছু বিষয় নতুন করে যুক্ত হয়। 
জীবনের অনুসঙ্গ পরিবর্তিত হওয়ার সাথে সাথে সংস্কৃতি পরিবর্তিত হতে থাকে। নদীর ভাঙনে, আবহাওয়া ও জলবায়ুর প্রভাবে ভূপৃষ্ঠে যে পরিবর্তন আসে, প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সাথে জীবনাচারে যে পরিবর্তন আসে, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কারনে সমাজের অভ্যন্তরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যে পরিবর্তন আসে, দিনশেষে তার সবই সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখে। গ্রামীণ সংস্কৃতির কিছু অংশ নগরে এসে মূলধারায় যুক্ত হয়ে যায়, আবার নগর সংস্কৃতির কিছু অংশও গ্রামীণ জীবনে এসে মিশে যায়। 

অগ্রসর চিন্তার মানুষেরা নতুনকে স্বাগত জানায়, প্রয়োজনীয় অংশটুকু জীবনচর্চায় যুক্ত করে নেয়। অতীতমুখি বা কট্টরপন্থীদের পরিবর্তন মেনে নিতে কিছুটা কষ্ট হয়। নতুনকে যুক্ত করে নিতে কষ্ট হয়। প্রথম দিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত হতেও অনেকের অস্বস্তি ছিল। এখন এটি ভাবনা বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে জীবনাচার ও সংস্কৃতির অংশ। 

সাংস্কৃতিক বিবর্তন অন্য সকল বিবর্তনের মতোই স্বাভাবিক ঘটনা। মত-পথ-বিতর্কও সমাজে বিদ্যমান চিন্তার স্রোত থেকেই উঠে আসে। তাই কোনো চিন্তাকেই এক কথায় খারিজ করে দেয়া যায়না। কোনো চিন্তার উপরেই খড়গ হাতে ঝাঁপিয়ে পড়া যায়না।
ইংরেজীতে 'আনকালচারড' শব্দটি গালি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর অর্থ যদি 'অ-সাংস্কৃত' বা সংস্কৃত বোধের অভাব ধরা হয়, তবে এর বোধ হচ্ছে, অন্যের মতামতের উপড় যুক্তিহীনভাবে ঝাঁপিয়ে না পরা। 

সকল ক্ষেত্রেই সুস্থ আলোচনা জারি থাকুক।  পরমত সহিষ্ণুতাই সংস্কৃতির প্রথম শিক্ষা। 

*
প্রসূন রহমান 
১৪ এপ্রিল, ২০২৪ 
 

Comments

    Please login to post comment. Login