Posts

উপন্যাস

“মিথ্যার আড়ালে” পর্ব ৩

November 13, 2025

Shiam Bin Zahid

18
View

প্রশ্নের জন্ম

রিশানের মাথা এখন নতুন এক দুনিয়ার খোঁজে ভরপুর।
তার আগের অধ্যায়গুলো যেন ফিকে, যেখানে সে শুধু অন্যদের কথা বিশ্বাস করত, আর নিজের ভিতরের গলায় চুপ ছিল। কিন্তু আজ সে জানতে শুরু করেছে—জ্ঞান মানে শুধু শেখা নয়, বরং প্রশ্ন করা।

ক্লাসে বসে যখন অধ্যাপক নতুন বিষয় আলোচনা করতেন, রিশান দেখতে পেত তার মন প্রশ্নে ভরে ওঠে। সেই প্রশ্নগুলো এতটাই অদ্ভুত মনে হতো তার, যে হয়তো অন্য কেউ তা ভাবতেই পারতো না।
সে নিজের কাছেই বলত, “এই প্রশ্নগুলো কি ঠিক? নাকি আমি আবার ভুল পথে যাচ্ছি?”

একদিন টিউশনের পর সোহেল তার পাশে এসে বলল,
— “রিশান, তুমি তো অনেক বদলে গেছো। আগে যেখানে সবাই কিছু বিশ্বাস করতো, তুমি আজকে প্রশ্ন করো। তুমি কি ভেবেছো, তোমার এই প্রশ্নগুলো তোমাকে কোথায় নিয়ে যাবে?”

রিশান হেসে উত্তর দিল,
— “আমি জানি না। কিন্তু আমার মনে হয়, এই প্রশ্নগুলো ছাড়া আমার ভাবনার কোনো গতি নেই। আমি জানি, সত্য খুঁজে পাওয়ার জন্য প্রশ্ন করা জরুরি।”

তবু মাঝে মাঝে তার মনে ভয় কাজ করত।
“যদি প্রশ্নের কারণে কেউ আমার সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখে? যদি সবাই আমার ভাবনাকে অবজ্ঞা করে?”
কিন্তু রিশান জানত, এই ভয়কে তাকে জয় করতে হবে।

একদিন রিশান একটা বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছিল, যেখানে লেখা ছিল—

“যারা প্রশ্ন করে, তারা জীবনের অর্থ খুঁজে পায়। যারা প্রশ্ন করে না, তারা জীবনের বাইরে থেকে জীবনটা দেখে।”

এই বাক্য তার মনে একটা আলো জ্বালিয়ে দিল।

সে ভাবল, “আমি এখন থেকে নিজেকে প্রশ্ন করব, অন্যদের কথাও। আমি চাই সত্যিকার অর্থে বুঝতে। না হয় ভুল হলেও, চেষ্টা করব।”

রিশান বুঝতে পারছিল, প্রশ্ন করা শুধু বুদ্ধিমানের কাজ নয়, এটা সাহসের কাজ।এটা নিজেকে জানার, নিজের ভুল ধরার, আর নিজের অবস্থান বুঝবার উপায়।

সে জানল, এই যাত্রাটা দীর্ঘ, কষ্টকর, কিন্তু প্রয়োজনীয়।

চিন্তার প্রশ্ন:

১. আপনি কি কখনো এমন কোনো প্রশ্ন করেছেন যা অন্যদের অস্বস্তিতে ফেলেছে? আপনি কী অনুভব করেছিলেন?
২. প্রশ্ন করা কেন গুরুত্বপূর্ণ? আপনি কেন প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকেন?
৩. নিজের জীবন ও বিশ্বাস নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য আপনি কী পদক্ষেপ নিতে পারেন?

Comments

    Please login to post comment. Login