নীরবতের ভেতরে তুমি
পর্ব ৯: শেষ চিঠির আগের দিন
ভোরের আলোয় জানালা ভিজে আছে শিশিরে।
রিশাদ আজ অনেক শান্ত—যেন তার ভেতরের ঝড় থেমে গেছে।
টেবিলের ওপর খোলা খাতা, পাশে একটা কলম, আর মগভর্তি কালো চা।
আজ সে লিখবে শেষ চিঠি—নিজের জীবনের শেষ অধ্যায়ের জন্য।
স্মৃতিগুলো তার মনে ভাসে—
তানিয়ার হাসি, মায়ের মুখ, গ্রামের ছোট নদীর পাড়, বন্ধুদের কণ্ঠ,
আর কিছু অপূর্ণ ভালোবাসা যা হয়তো কোনোদিন শেষও হবে না।
সে লিখতে শুরু করে—
“প্রিয় জীবন, আমি তোমাকে অনেক ভালোবেসেছি, কিন্তু তুমিই আমাকে বুঝতে পারোনি।”
চিঠিটা লেখার সময় তার হাত কাঁপছিল।
প্রতিটি শব্দ যেন তার বুকের গভীর থেকে উঠে আসছিল।
সে বুঝেছিল, জীবনের মানে শুধু টিকে থাকা নয়—
কিছু অনুভূতি বাঁচিয়ে রাখাও একধরনের বেঁচে থাকা।
বাইরে হঠাৎ একটা হাওয়া বইতে লাগল। জানালার পর্দা দুলে উঠল।
আকাশের রঙ তখন ধূসর। দূরে কোথাও বজ্রপাত হলো,
আর সেই আলোয় রিশাদের মুখটা ঝলসে উঠল—
একটা ক্লান্ত কিন্তু শান্ত মুখ।
সে চিঠিটা শেষ করে টেবিলের ওপর রাখে।
তারপর মোমবাতিটা জ্বালায়,
চিঠিটার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে,
“এই পৃথিবীতে আমি হারিয়ে যাচ্ছি না, আমি ছড়িয়ে যাচ্ছি।
যে কেউ আমার লেখা পড়বে, সে আমাকেও একটু পাবে।”
রাতের বৃষ্টি থেমে গেছে। জানালার বাইরে একটুখানি চাঁদের আলো পড়েছে মেঝেতে।
রিশাদ ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ায়,
বাতাসে তার কণ্ঠ মিশে যায়—
“তানিয়া, তুমি সুখে থেকো…”
তারপর নীরবতা।
চিঠিটা টেবিলের ওপর পড়ে থাকে,
আর জানালার বাইরে ভোরের প্রথম পাখির ডাক ভেসে আসে।
সম্মানিত শামীম সাহেব, এখন গল্পটি শেষের দিকের আবেগময় স্থানে এসেছে।