Posts

উপন্যাস

শেষ চাবির রহস্য

November 16, 2025

mr cgm

Original Author Md Jubayed Ahmed Mihan

48
View

শেষ চাবির রহস্য – অধ্যায় ১

“অদ্ভুত ঘড়ি ও রাতের নিস্তব্ধতা”

রাত তখন প্রায় ১০টা। মিহান তার ছোট্ট ঘরে বসে নতুন ব্যাগ খুলছিল। ব্যাগের ভেতরে বই, কাগজপত্র আর তার প্রিয় ল্যাপটপ রাখা। কিন্তু চোখ পড়ল ব্যাগের এক কোণে থাকা ভাঙা ঘড়িটিতে।
ঘড়ি… যে ঘড়িটা সে কয়েক দিন আগে স্থানীয় জঙ্গলে পাওয়া ভাঙা বাড়ি থেকে এনেছিল।

ঘড়ির কাঁটা থেমে আছে ১০:৩৫–এ। কিন্তু আজ যেন কিছু অদ্ভুত; ঘড়ির কাঁচে খোদাই হয়ে আছে একটি শব্দ—

“উদ্ধার”

মিহানের চোখ বড় হয়ে গেল। সে ব্যাগের ভিতর তাকাল, আশেপাশে তাকাল—ঘর একদম নিস্তব্ধ।

“এটা কি সত্যিই এখানে এসেছে?”—মিহান নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করল।

ঠিক তখনই মেহেরাব তার পাশে উঠে এল। মেহেরাব মিহানের ছোট ভাই, বয়স মাত্র ১২, কিন্তু মিহানের মতোই রহস্যপ্রেমী।

“কি হলো?”—মেহেরাব কৌতূহলভরে জিজ্ঞেস করল।

“ঘড়িতে লেখা আছে ‘উদ্ধার’… আর তা নিজেরাই কাঁপছে।”—মিহান কণ্ঠ কাঁপতে কাঁপতে বলল।

মেহেরাব ঘড়ি নিল। হঠাৎ ঘড়ি থেকে বেরিয়ে এল একটি ক্ষীণ টিক… টিক… টিক… শব্দ।

“ওরে না! এটা কি কাজ করছে?”—মেহেরাব ভয়ে চেঁচালো।

মিহান মাথা নেড়ে বলল, “আমরা যাচ্ছি বাইরে… এই রহস্যটা শেষ করতে হবে।”


 

ঘর থেকে বেরিয়ে যাত্রা

মিহান ও মেহেরাব ল্যাম্প আর ফোন নিয়ে বের হল।
রাস্তায় তারা দেখল—অন্ধকার প্রায় সব জায়গা ঢেকে দিয়েছে। চারপাশে শুধু ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দ, দূরে কুকুরের ডাক।

“আমাদের সাথে আদর, মিহাদ, জোবায়েদ আর ওমায়েরও আসছে। তারা ঠিক লেকের পাশে অপেক্ষা করছে।”—মিহান বলল।

দুরন্ত হাওয়া বইছে। লেকের দিকে যেতে যেতে তারা প্রতিটি পা সতর্কভাবে বাড়াচ্ছে।


 

লেকের ধারে প্রথম রহস্য

উত্তরা লেকের পাশের ছোট জঙ্গলের মধ্য দিয়ে পথ। সেখানে গিয়ে তারা দেখল—লেকের ধারে ছোট্ট একটি ভাঙা চেম্বার, যার ঢাকনা আধখোলা।

“দেখছ?”—আদর বলল। সে মিহানের বন্ধু, বুদ্ধি ও কৌশলে চতুর।

মিহাদ, যিনি ফিজিক্যাল অ্যাকশন ও সাহসিকতায় এগিয়ে, বলল—
“আমি প্রথমে যাচ্ছি। যদি কিছু ঘটে, আমরা সবাই সাপোর্টে থাকব।”

জোবায়েদ চশমা ঠিক করল, “আমার ফোনে ফ্ল্যাশ চালু, আমি আলো রাখব। যদি কোন যন্ত্র বা সংকেত থাকে, সেটা ধরব।”

ওমায়ের ধীরে ধীরে বলল, “ভয় পাস না, আমরা একসাথে।”

দু’জনে ঢুকতেই অদ্ভুত কাঁপন অনুভব করল। চেম্বারের ভিতরে এক ছোট্ট ছেলে বসে আছে—চোখ লালচে, বয়স ১০–১১ বছর। তার হাতে একটি অদ্ভুত যন্ত্র।

“তোমরা… আমাকে দেখতে পাচ্ছ?”—ছেলেটি কাঁপা কণ্ঠে বলল।

“হ্যাঁ!”—মিহান বলল।

ছেলেটি ধীরে বলল, “আমার নাম রায়েদ… আমি আটকে আছি সময়ের ভেতরে।”

দু’জনের চোখ বড় হয়ে গেল।


 

রায়েদের ভয়ংকর গল্প

রায়েদ জানাল, সে ১৯ বছর ধরে সময়ের লুপে আটকে আছে। তার সাথে সম্পর্কিত ছিল আরিব হোসেন, যিনি মৃত, কিন্তু রহস্যের কেন্দ্র।

“আরিফুল হক নামের একজন আমাকে এখানে আটকে রেখেছে। সে সময় নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।”—রায়েদ কাঁপা কণ্ঠে বলল।

মিহান, আদর ও জোবায়েদ দ্রুত ঘড়ি পরীক্ষা করতে লাগল। ঘড়ির কাঁটা উল্টো দিকে ঘুরছে, যা তাদের ভেতরে থাকা সময়ের লুপ ভেঙে দিতে পারে।

মিহাদ বলল, “আমরা তার জন্য কিছু করতে হবে। আরিফুল যেন আর কাউকে ক্ষতি না করে।”

ওমায়ের বলল, “প্রথমে রায়েদকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাই।”


 

প্রথম সংঘর্ষের পূর্বাভাস

মিহান, মেহেরাব, আদর, মিহাদ, জোবায়েদ ও ওমায়ের একসাথে রায়েদকে চেম্বারের ভিতর থেকে বের করার চেষ্টা করল।

হঠাৎ—
জঙ্গলের মধ্যে ধীর, ভারী পায়ের শব্দ শুনতে পেল সবাই।
“কেউ আসছে… খুব কাছেই।”—আদর বলল।

ফিরে তাকাতে পারল না। তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে আরিফুল হক, লম্বা, কালো চশমা, হাতে বিশাল সময় নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র।

“এবার দেখব, কে এগিয়ে থাকবে…”—আরিফুল হেসে বলল।

মিহান কণ্ঠ জোরে করল—“আমরা তোমাকে থামাব।”

ঘড়ির কাঁটা উল্টো ঘুরতে থাকল। চারপাশ হঠাৎ জমে গেল, সময় থমকে গেল।

রাতের হাওয়া নীরব হয়ে গেল। লেকের পানি শান্ত।
রায়েদ প্রথমবার দীর্ঘসময় শ্বাস ফেলল।
“তোমরা… আমার জীবন বাঁচালো।”

মিহান ঘড়ি ধরে বলল, “এখানে শেষ নয়। আরও রহস্য আছে।”

দেখে মনে হলো—এটি শুধু রহস্যের শুরু, সময়ের ভেতরের যুদ্ধ এখন শুরু হলো।
 

চলবে…

Comments

    Please login to post comment. Login

  • mr cgm 2 weeks ago

    কেমন হয়েছে গল্প টি ১০ এ কত রেটিং দিবেন