Posts

উপন্যাস

শেষ চাবির রহস্য ২

November 17, 2025

mr cgm

Original Author Md Jubayed Ahmed Mihan

62
View

শেষ চাবির রহস্য – অধ্যায় ২

“সময় চেম্বারের প্রথম পরীক্ষা”

রাত তখন আরও গভীর। আকাশে মেঘ জমে আছে, যেন প্রকৃতিও বুঝতে পেরেছে—
একটা ঝড় আসছে, কিন্তু সেটা সাধারণ ঝড় নয়… সময়–এর ঝড়।

 আরিফুল হকের হুমকি

লেকের ধারে সবাই স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে, সামনে আরিফুল হক।

তার হাতে থাকা যন্ত্রটি অদ্ভুত নীল আলোর মতো জ্বলজ্বল করছে।
যন্ত্রটি যেন তাদের বুকের ভেতরের বাতাস চুষে নিচ্ছে।

আরিফুল হক (ঠাণ্ডা কণ্ঠে):
“তোমরা ভাবছ শুধু চাবি পেলেই রায়েদকে উদ্ধার করতে পারবে?
সময়কে নিয়ে খেলা এত সহজ নয়।”

মেহেরাব সামনে এসে দাঁড়ায়, যদিও ভয়ে হাত কাঁপছে।

মেহেরাব:
“তুমি কেন এই ছেলেটাকে আটকে রেখেছ? সে তোমার কী ক্ষতি করেছে?”

আরিফুল কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলল—
“ক্ষতি নয়… প্রয়োজন ছিল।
সময়ের শক্তি বুঝতে হলে একজনকে বন্ধ করতে হয়।
সে শুধু প্রথম ধাপ ছিল।”

এ বলে সে যন্ত্রটি ঘুরিয়ে দেয়।
হঠাৎ চারপাশের সময় থেমে যায়—
লেকের ঢেউ মাঝ আকাশে জমে যায়,
হাওয়া থেমে যায়,
পাখিরা নড়াও না।

শুধু মিহান, মেহেরাব, আদর, মিহাদ, জোবায়েদ, ওমায়ের, আর রায়েদ
তারাই নড়তে পারছে।

রায়েদ ফিসফিস করে বলল—
“এটা Time Freeze Field… এটা ভাঙতে হলে চাবিগুলো জাগাতে হবে…”

 রহস্যময় চাবির জাগরণ

হঠাৎ মিহানের ব্যাগের ভেতর থেকে
ভাঙা ঘড়িটি জ্বলতে শুরু করল।

ঘড়ির কাঁচে নতুন শব্দ ফুটে উঠল—

“পরীক্ষা ১: সঠিক পথ বেছে নাও”

আদর দ্রুত বলল—
“এটা কোনো রকম পরীক্ষা দিচ্ছে! আমাদের পথ বাছতে হবে!”

ঠিক তখন তাদের পায়ের নিচে মাটি কাঁপতে শুরু করল।
লেকের ধারে তিনটি উজ্জ্বল দরজা তৈরি হলো:

  1. দরজা ১ — অতীত
  2. দরজা ২ — বর্তমান
  3. দরজা ৩ — ভবিষ্যত

দরজাগুলোর সামনে বালিতে লেখা—

“ভুল দরজা = সময়ের মৃত্যু”

ওমায়ের কণ্ঠ কাঁপল—
“মানে ভুল পথ নিলে শেষ?”

মিহাদ বলল—
“আমরা ভয় পেলে কিছুই করতে পারব না।
প্রথমে দেখে বুঝতে হবে কোনটা নিরাপদ।”

জোবায়েদ তাকিয়ে দেখল—
ভবিষ্যতের দরজায় অদ্ভুত ধোঁয়া…
অতীতে আগুনের মতো আলো…
বর্তমান দরজাটা সবচেয়ে শান্ত।

রায়েদ মাটিতে বসে শ্বাস নিতে নিতে বলল—
“আমি জানি…
আমাকে ১৯ বছর ধরে ভবিষ্যতের টাইম লুপে আটকে রাখা হয়েছিল…
ওই দরজা খোলা—মানে মৃত্যুফাঁদ।”

মিহান মাথা নেড়ে বলল—
“তাহলে Future বাদ।
Past আর Present—কোনটা?”

হঠাৎ আদর ঘড়ির পিছনে একটা লুকানো প্রতীক দেখে—
P-2
মানে হয়তো—

“Present – Door 2”

সাদিয়া (গভীর কণ্ঠে):
“আমরা দরজা ২–এ যাব।”

 বর্তমান দরজার পরীক্ষায় প্রবেশ

মিহান দরজায় হাত রাখতেই
একটি প্রচণ্ড আলো চারপাশ ঢেকে দিল।

চোখ খুলতেই তারা দেখে—

তারা আর লেকের ধারে নেই।
বরং—

একটি বিশাল ঘড়ির টাওয়ারের ভেতরে দাঁড়িয়ে।

ঘড়ির কাঁটা প্রচণ্ড শব্দে নিচে ঝুলছে।
ভূমিতে অসংখ্য ভাঙা ঘড়ি।

আর সামনে—

একটি কালো ছায়া।
রায়েদ চিৎকার করল—

“ভয় পেয়ো না… এটা আরিফুলের ছায়া ফাঁদ!”

ছায়াটি ভয়ঙ্কর কণ্ঠে বলল—

“সঠিক সময় বের করো…
এক মিনিটের মধ্যে…
না হলে সবাই সময়ের বাইরে পড়ে অদৃশ্য হয়ে যাবে।”

দেয়ালে ১২টি ঘড়ির ডায়াল।
সবগুলো এবার কাঁটা দ্রুত ঘুরতে শুরু করেছে।

মেহেরাব ভয়ে কাঁদতে যাচ্ছিল, কিন্তু
আরিব (এবার সে আছে) সামনে এসে বলল—

“ঘড়ির কাঁটা থামছে না…
কিন্তু ১০:৩৫–এ থেমে থাকা ভাঙা ঘড়ির কথা মনে আছে?”

মিহানের চোখ জ্বলে উঠল—

“হ্যাঁ! সেটাই সঠিক সময়!”

মিহাদ বলল—
“সব ঘড়ির সিস্টেম রিসেট করতে হবে ওই সময় দিয়ে।”

তারা দ্রুত ১২টি ডায়ালে গিয়ে
একসাথে সবগুলো ১০:৩৫–এ ঘুরিয়ে দিয়েছে।

টাওয়ার কেঁপে ওঠে,
কাঁটা থেমে যায়,
ছায়াটি ভেঙে গুঁড়ো হয়ে যায়।

চেম্বারের দরজা খুলে গেল।

রায়েদ ধীরে বলল—
“তোমরা প্রথম পরীক্ষা পেরিয়েছ…”

  আরিফুলের সতর্কবার্তা

হঠাৎ ঘড়ির টাওয়ারে কালো স্ক্রিন জ্বলে ওঠে।

স্ক্রিনে দেখা যায়—
আরিফুল হকের মুখ।

আরিফুল:
“অভিনন্দন… তোমরা প্রথম লেভেল পারলে।
কিন্তু মনে রেখো—
সময়কে চ্যালেঞ্জ করলে সময়ও তোমাদের আঘাত করবে।
দ্বিতীয় পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ৩০ মিনিট পর।”

স্ক্রিন হঠাৎ বন্ধ।

মিহান:
“দ্বিতীয় পরীক্ষা কী হবে?”

রায়েদ চোখ নামিয়ে শুধু এতটাই বলল—

“মৃত সময়ের ঘর…”

সবাই চুপ।

দ্বিতীয় পরীক্ষা যে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর হবে—
এটা তাদের মুখের ভঙ্গিতেই বোঝা যাচ্ছিল।

অধ্যায় ২ সমাপ্ত

চলবে…

Comments

    Please login to post comment. Login