Posts

উপন্যাস

শেষ চাবির রহস্য ৫

November 20, 2025

mr cgm

Original Author Md Jubayed Ahmed Mihan

44
View

শেষ চাবির রহস্য – পর্ব ৫

“সময়ের কবরঘর ও রায়েদের ভয়াবহ ভবিষ্যৎ”

ঘড়ির টাওয়ারের দ্বিতীয় পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু সময় নেই—আরিফুল হক আগেই বলে দিয়েছে, পরের দরজা খুলবে মাত্র একবার, আর খুললেই শুরু হবে তৃতীয় পরীক্ষা।

টানেলের সামনে দাঁড়িয়ে ঘড়িটি আবার জ্বলে উঠল।
লিখা হলো—

“পরীক্ষা ৩: সময়ের কবরঘর”

মিহান ফিসফিস করল—
“শুনলেই ভয় লাগে…”

রায়েদ সাদা হয়ে গেল।
“ওটা… ওটা সবচেয়ে ভয়ংকর জায়গা। সেখানে যারা সময়ের ভুলে হারিয়ে গিয়েছিল, তাদের ছায়া আটকে আছে…”

ওমায়ের গলা শুকিয়ে গেল—
“মানে মানুষ না, ছায়া আমাদের আক্রমণ করবে?!”

রায়েদ মাথা নেড়ে বলল—
“হয়তো… শুধু ছায়া না, তাদের কথা, তাদের ভয়, তাদের ব্যথা—সব তোমাদের দিকে ছুটে আসবে।”

মিহাদ:
“চলো। ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। কাজ করতে হবে।”

দরজা ধীরে ধীরে খুলল…

  অদ্ভুত কবরঘর

ভেতরে পা রাখতেই তারা অনুভব করল জমাট শীতল বাতাস।
চারপাশে অসংখ্য পাথরের ফলক… কিন্তু এগুলো মানুষের কবর নয়।

প্রতিটি কবরের উপরে লেখা—

“Lost 5 minutes”

“Lost 12 years”

“Lost 1 lifetime”

“Lost Forever”


মেহেরাব ভয়ে মিহানের হাত চেপে ধরল।

হঠাৎ কবরের ভেতর থেকে শোঁ-শোঁ শব্দ।

ছায়ারা উঠতে শুরু করল।

কালো, দাগহীন, মুখহীন ছায়া—
যারা সময়ের মধ্যে আটকে ছিল,Escape চেষ্টা করেছে, ব্যর্থ হয়েছে।

রায়েদ কাঁপা গলায় বলল—
“ওরা হারানো মানুষ না… হারানো সময়… সময়ের রূপ!”

ছায়ারা লম্বা হাত বাড়িয়ে তাদের দিকে এগোতে থাকে।

জোবায়েদ তাড়াতাড়ি ঘড়ি জ্বালিয়ে ধরে—
কিন্তু এবার কোনো লেখা দেখা যায় না।

আদর চিৎকার করল—
“ঘড়ি কাজ করছে না!”

ঠিক তখন পিছন থেকে এক ভয়ঙ্কর কণ্ঠ—

“এটা পরীক্ষা… বাঁচতে হলে তোমাদের নিজেদের হারানো সময় ফিরিয়ে দিতে হবে…”

সবাই ঘুরে দাঁড়াল।

একটি বিশাল ছায়ার রূপ—একজন মানুষের চেহারায়—
কিন্তু চোখ নেই, মুখ নেই।

রায়েদ ফিসফিস করল—
“এটা Time Guardian… কবরঘরের রক্ষক।”


 

  হারিয়ে যাওয়া সময়ের মুখোমুখি

রক্ষক বলল—
“প্রত্যেকে জীবনে কোনো সময় নষ্ট করেছ… সেই সময় ফিরিয়ে দাও। নাহলে বাঁচবে না।”

এ কথা শুনে সবাই হতবাক।

মিহান হাত শক্ত করল—
“কিন্তু আমরা কীভাবে সময় ফেরত দেব?”

রক্ষক আঙুল তোলে—
চারপাশের দেয়ালে হঠাৎ ভেসে উঠল ছেলেদের নিজের স্মৃতি।

মিহান— একটি দিন যখন সে হতাশ হয়ে বন্ধুর সাথে খারাপ আচরণ করেছিল।
আদর— এক সময় যখন সে ভয় পেয়ে সত্য বলেনি।
মিহাদ— এমন সময় যখন সে রাগে একটি সম্পর্ক ভেঙে ফেলেছিল।
জোবায়েদ— যে সময় সে স্বপ্ন ছেড়ে দিয়েছিল।
ওমায়ের— যেদিন সে নিজের ভুলকে গোপন করেছিল।
আরিব— যে দিনে সে নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে গিয়েছিল।

সব স্মৃতি বাতাসে ভাসছে।

মেহেরাব কাঁদতে লাগল—
“এগুলো… এগুলো আমাদের ভুল…”

রক্ষক বলল—
“হ্যাঁ। এগুলোই তোমাদের হারানো সময়। এগুলো স্বীকার না করলে সামনে যেতে পারবে না।”

সবাই একে একে স্বীকার করল নিজেদের ভুল।
প্রতিটি স্বীকারোক্তি আকাশে জ্বলে ওঠে, তারপর কবরের ফাঁক দিয়ে অদৃশ্য হয়ে যায়।

শেষে ছায়ারা থেমে যায়।

দরজাটি খুলে গেল।


 

 রায়েদের ভয়াবহ ভবিষ্যৎ প্রকাশ

দরজা খুলতেই সামনে দেখা গেল একটি বড় হল।
মাঝে একটি লাল গোল চিহ্ন।
চিহ্নের মাঝে উঠে এল একটি হোলোগ্রাম।

কিছু দেখাচ্ছে।

রায়েদ যখন বড় হবে— ভবিষ্যতে তার জীবন…

সবাই স্তব্ধ হয়ে গেল।

ভবিষ্যতে দেখা যাচ্ছে—

রায়েদ একজন বিজ্ঞানী হয়েছে, কিন্তু একদিন সে ভুল করে সময়ের যন্ত্র সক্রিয় করে ফেলে।
জায়গাটা বিস্ফোরিত হয়।
সময় ভেঙে পড়ে তার ওপর।

সে সময়ের ফাঁদে পড়ে যায়।

আরিফুল হক তখনি তাকে ধরে এই দুনিয়ায় বেঁধে রাখে।

রায়েদ কাঁপতে কাঁপতে বলল—
“আমি… আমি নিজেই ভবিষ্যতের ভুলের কারণে আটকেছিলাম…”

মিহান রায়েদের কাঁধে হাত রাখে—
“তাহলে… আমাদের কাজ শুধু তোমাকে বাঁচানো না, তোমার ভবিষ্যৎও ঠিক করা।”

হঠাৎ স্ক্রিনে আরিফুল হক দেখা গেল।

আরিফুল:
“তোমরা সত্য জানতে পারলে… কিন্তু মনে রেখো— রায়েদকে বাঁচাতে গেলে সময়ের বিরুদ্ধেই দাঁড়াতে হবে।
তোমাদের আগামী পরীক্ষা—

‘অসমাপ্ত সময়ের গোলকধাঁধা’

যেখানে ভুল করলে তোমরা… কখনোই ফিরে আসতে পারবে না।”

স্ক্রিন বন্ধ হয়ে গেল।

রায়েদ চোখ মুছল—
“তোমরা… কি আমাকে বাঁচাবে?”

সবাই একসাথে চিৎকার করল—
“হ্যাঁ!”

পর্ব ৫ সমাপ্ত
চলবে..

Comments

    Please login to post comment. Login