Posts

উপন্যাস

“অন্তরীক্ষের ফাঁদ: হারিয়ে যাওয়া তিন ছায়া”

November 25, 2025

Nasrin Islam

37
View

অন্তরীক্ষের_ফাঁদ
#নাসরিন_ইসলাম
#পর্ব_১

তুবা: নিশান ভাই আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি আমার আসক্তি তে পরিনত হয়েছো। দয়া করে আমাকে গ্রহণ করো নিশান ভাই। 
নিশান রেগে তুবার গালে একটা থাপ্পড় দিয়ে দাঁত কটমট করে বলে
নিশান: এই আপদ জন্মের পর থেকেই জালাচ্ছিস। নিজের চেহারা দেখেছিস। তোকে দেখলেই তো আমার বমি পায়। কি যোগ্যতা আছে তোর আমাকে পাওয়ার। আর কখনো 
আর কিছু বলার আগেই ঠাস। কি হলো বুঝলেন না তো তুবা নিশান কে থাপ্পড় মেরেছে। চোখ লাল করে বললো: নিজেকে কি হাতির লেজ ভাবো। এহ যে না চেহারা নাম রাখছে পেয়ারা। এই টা আমার ডেয়ার ছিল তোমাকে বাংলায় প্রোপজ করা। তাই করলাম নয়তো তোমার মত নাক উঁচু সাদা বান্দর কে আমি প্রোপজ করবো ছ্যেহ্। 
নিশান হাঁ করে তাকিয়ে আছে। 
তুবা: শোন আমি আমার ভি কে ছেড়ে তোমার মত বান্দর এর দিকে তাকাবো হাউ ফানি 😏
বলে চুল উড়িয়ে চলে যায়। 
নিশান দাঁতে দাঁত চেপে বিরবির করে‌ শব্দ করে দরজা লাগিয়ে দেয়।
চলুন পরিচয় জানা যাক।
খান বাড়ির কর্তা মিরাজ খান এর তিন ছেলে দুই মেয়ে স্ত্রী তাহেরা খান 
বড় ছেলে তায়েব খান, স্ত্রী নুসরাত খান, এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে নিশান খান, একরোখা গম্ভীর আর জেদী,চাচাতো ভাই আর বন্ধুর সাথে বিজনেস করে সাথে রাজনীতি করে।
মেয়ে তিশা খান, দুষ্টু মিষ্টি স্বাভাবের মেয়ে। অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে।

মেজ ছেলে তায়েফ খান, স্ত্রী আদিবা খান, এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে তূর্য খান, নিশান এর বিজনেস+ রাজনৈতিক পাটনার। বেস্ট ফ্রেন্ড ও বলা চলে।
মেয়ে তুবা খান তূর, জেদী একরোখা আর দুষ্টুমি তে সেরা। আর হ্যাঁ BTS এর বিগ ফ্যান বলা চলে তিশা আর তুবা কে। তুবা ও অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে।
ছোট ছেলে তারেক খান, স্ত্রী সুমি খান। জমজ দুই মেয়ে মায়রা টায়রা। মায়রা চুপচাপ গম্ভীর আর টায়রা চঞ্চল। দুজন ই পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে।

বড় মেয়ে তানিশা খান। মারা গেছে ১৫ বছর আগে।

ছোট মেয়ে তানিয়া খান, স্বামী আদিত্য চৌধুরী, আদিবা খান এর বড় ভাই সাথে তায়েব খান এর বন্ধু । তাদের দুই ছেলে এক মেয়ে। মেয়ে বড় রিমি চৌধুরী, তিশা তুবার বেস্ট ফ্রেন্ড। ওদের সাথেই পড়ে। দুই ছেলে রুবাব আর রাব্বি। রুবাব বড় রাব্বি ছোট। রুবাব ইন্টার ফার্স্ট ইয়ার আর রাব্বি ক্লাস টেন এ পড়ে। 

নিশান আর তুবা একজন আর একজনকে দেখতে পারে না। দুজন ই একি রকম একজন আর একজনের ছায়াটাও সহ্য করতে পারে না। 
গল্পে ফেরা যাক,

সকাল হতে না হতেই খান বাড়িতে হইচই  পড়ে গেছে । খান বাড়ির বড় দই মেয়ে গায়েব। গিন্নীদের কান্নার রোল পড়ে গেছে বাড়িতে। ড্রয়িং রুমে সবাই বসে আছে। তূর্যর হাতে একটা চিঠি। তাতে লেখা:

চিঠি

"বাড়ির সবাইকে আসসালামুয়ালাইকুম । শোন আমি রিমি আর তিশা চলে গেলাম কবে ফিরবো ঠিক নাই । হুদাই খুঁজে ও লাভ নাই। আমরা ধরা না দিলে কারো ক্ষমতা নেই আমাদের ধরার। আর বড় আব্বু তুমি আর তোমার ভাই বোন রা টেনশন নিয়ো না আমাদের কোন ক্ষতি হবে না নিজেদের আত্মরক্ষা করতে পাড়ি আমরা। সো চিল মারো। আর বড় আব্বু তোমার সাদা বান্দর টা কাল রাতে অমাকে থাপ্পড় মেরেছিল তাই ওর কার্ড টা চুরি করেছি পাসওয়ার্ড ও জানা, তোমাদের বলছি কারন তোমার যতক্ষন এ জানবে ততক্ষণ এ কার্ডের সব টাকা তুলে নিবো। তোমার বলদ টা বাথরুমে আটকে রেখে এসছি কফি তে ঘুমের ট্যাবলেট মিশিয়ে ছিলাম। আমার কিউট আব্বু তোমার ডাইনি বউ টা কে পেশার এর ঔষধ দিয়ো তার সখের নিশান বাবার বউ এর জন্যে তুলে রাখা বালা জোড়া নিয়ে গেলাম। ভালো থাকো"

চিঠি পড়ে সবাই হ্যাঁ করে বসে আছে আর তূর্য দৌড়ে নিশান এর রুমে গিয়ে দেখে ও বাথরুমের ফ্লোরে ঘুমিয়ে আছে। ওকে টেনে বিছানায় তুলে।

আদিবা খান চেঁচিয়ে উঠে তায়েফ খান এর উপর।
আদিবা খান: আরো মাথায় তোল মেয়েদের। 
নুসরাত খান: কি দরকার ছিল ওদের ছেলেদের মত মারামারি শেখানোর। সব দোষ এদের।
তাহুরা খান: আরে হচ্ছে টা কী। আমার নাতনি রা যেখানে খুশি যাক কেউ তাদের বাঁধা দিবে না। 
আদিবা: মা আপনি আর আপনার ছেলেরাই ওদের বিগড়ে দিয়েছেন । 
বলেই তিন গিন্নী চলে যায় রান্না ঘরে।
তায়েব খান: আম্মা আমি তানিয়াকে কল দিয়ে বলি সব মেয়েগুলো যে কি করে না।

এদিকে সকাল দশটায় নিশান ঘুম থেকে উঠে ফোন চেক করে দেখে একটা মেসেজ এসেছে তার কার্ড থেকে সব টাকা তুলা হয়েছে। নিশান চেঁচাতে চেঁচাতে নিচে নেমে নুসরাত খান কে ডাকে।
নিশান: আম্মু!!! দেখ তোমার মেয়ে কি করেছে। 
নিশান এর চিৎকার শুনে সবাই বাহিরে বেরিয়ে আসে। আজ শুক্রবার বার তাই সবাই বাড়িতেই ছিল। 
নুসরাত: কি হয়েছে আব্বু।
নিশান: আম্মু আমার কার্ড এর সব টাকা তোলা হয়েছে। আমার কার্ড এর পাসওয়ার্ড শুধু তিশাই জানতো কোথায় তোমার মেয়ে ডাকো ওকে। 
তায়েব খান: কর ছিল তোমার কার্ড এ।
নিশান: ৩ কোটি। 
তায়েব খান: এটা আমি তোমার কার্ড এ পাঠিয়ে দিবো। 
নিশান: আপনার কি আমাকে ভিক্ষারী মনে হয়। আমার একার যা আছে তার চার ভাগের এক ভাগ ও তো আপনাদের নেই। 
তায়েব খান: তাহলে চেঁচামেচি করছো কেন। 
নিশান: আমার ঘরে বিনা পারমিশনে ঢুকার সাহস কই পেল ও। 
আদিবা খান নিশান কে জড়িয়ে ধরে ওকে শান্ত করে। 
সবাই যার যার ঘরে চলে যায়।
তুবারা চলে গেছে আজ এক মাস হলো। নিশান এখনো জানে না যে যুবা তিশা বাড়িতে নেই।  
নিশানের মনে কোথাও যেন একটা শূন্যতা কাজ করছে। কিন্তু কি তা বুঝতে পারছে না। 
সকালে ডাইনিং টেবিলে বসে সবাই নাস্তা করছে এমন সময় সুমি খান বললো 
সুমি খান: বড় ভাইজান আজ এক মাস হয়ে গেলো মেয়েদের কোন খোঁজ খবর নেই। আপনারা কিছু করুন। 
তায়েব খান: আমি সেদিন ই ওদের খুঁজে লোক লাগিয়েছি কিন্তু ওদের খোঁজ কোথাও পায়নি। ওদের শেষ দেখা ইয়ার পোর্ট এ। সেখান থেকে আর খোঁজ পাইনি। 
নিশান অবাক হয়ে বলল 
নিশান: কোন মেয়েদের কথা বলছো ছোট আম্মু।
সুমি খান হতাশ হয়ে বললো: তিশা,তুবা,আর রিমির কথা আব্বু। 
নিশান বললো: মানে??
তূর্য: ওকে সেদিন এর সব কথা ওকে খুলে বললো। 
নিশান ওহ্ বলে চলে গেল। ভিতর টা কেমন জানি ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। কিন্তু কার জন্যে বুঝতেছে না।

সাত বছর পর

চলবে

Comments

    Please login to post comment. Login