❤ PART–2:
রিদয় ফিরে আসার পর দিনগুলো যেন বদলে গেল।
আগে যে ঘরটা ফাঁকা লাগতো, সেই ঘরেই এখন হাসি, গল্প আর চোখে চোখ রাখার নরম মুহূর্তগুলো জমা হতে লাগল।
মায়া কখনো বুঝতে পারেনি—
কারো উপস্থিতি কিভাবে বাতাসের মতো লাগে।
যাকে ছোঁয়া যায় না, তবুও তাকে ছাড়া নিশ্বাস নেওয়া যায় না।
আজ শনিবার।
বাইরে সূর্য আছে, কিন্তু বাতাসে এখনো গতকালের বৃষ্টির হালকা গন্ধ।
মায়া রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে চা বানাচ্ছিল।
রিদয় চুপচাপ এসে পেছন থেকে তার কোমরে হাত রেখে বলল—
“জানো?
তুমি রান্নাঘরে কাজ করো, আর আমার মাথায় আজব আজব কবিতা আসে।”
মায়া হেসে বলল,
“কি কবিতা আসে শুনি?”
রিদয় তার কান বরাবর মুখ এনে ফিসফিসিয়ে বলল—
“চায়ের কাপে ধোঁয়া উঠুক,
তোমার গালে লজ্জা ফুটুক,
আর তুমি যদি আমার হও—
জীবনটা কবিতায় ভরে উঠুক।”
মায়া অস্থির হয়ে গেল।
তার হৃদপিণ্ডটা যেন নতুন করে কাঁপতে লাগল।
সে হালকা রাগী গলায় বলল—
“তুমি খুব দুষ্টু হয়ে গেছো!”
রিদয় চোখ টিপে বলল—
“আমি সবসময়ই দুষ্টু ছিলাম…
তুমি শুধু দূরে ছিলে তাই টের পাওনি।”
মায়া চা হাতে দিলে রিদয় কাপটা নেয়নি।
বরং বলল—
“চা পরে হবে।
প্রথমে তোমাকে কাছে নিয়ে কিছু বলা দরকার।”
মায়া চমকে গেল।
রিদয় ধীরে তার দুই হাত ধরলো,
যেন কাঁচের মতো ভেঙে যেতে পারে।
“মায়া…”
তার গলা ভারী হয়ে এলো,
“আমি দুই বছর তোমাকে ভুলতে চাইনি।
চেয়েছিলাম সময় আমাকে বদলে দিক…
কিন্তু যতদিন কেটেছে,
আমি ততই বুঝেছি—
তুমি না থাকলে আমার জীবন অর্থহীন।”
মায়ার চোখে নীরব অশ্রু জমল, কিন্তু মুখে হাসি।
“তুমি ফিরেছো—
এটাই আমার জন্য যথেষ্ট,” সে বলল।
কিন্তু রিদয় মাথা নাড়ল।
“না, আজ শুধু ফিরে আসা নয়…
আজ আমি একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে এসেছি।”
মায়ার বুকটা ধড়ফড় করতে লাগল।
রিদয় পকেট থেকে ছোট্ট একটা রুপালি আংটি বের করলো।
ঘরের সবকিছু যেন থেমে গেল।
সে ধীরে এক হাঁটুতে বসে বলল—
“মায়া…
তুমি শুধু আমার প্রেম নও।
তুমি আমার শান্তি, আমার সকাল, আমার ঘর।
তুমি আমার প্রশ্নের উত্তর।
আমার জীবনের বাকি পথটা
তোমার হাত ধরে কাটাতে চাই।
তুমি কি হবে…
আমার জীবনের বাকি অধ্যায়?”
মায়া কাঁদতে কাঁদতে বলল—
“হ্যাঁ… হাজারবার, লক্ষবার হ্যাঁ।”
রিদয় আংটি পরিয়ে দিল,
আর সেই মুহূর্তে মায়া হঠাৎ তাকে জড়িয়ে ধরল।
দুজনেই নিঃশব্দ।
তবু সেই নীরবতাই সবচেয়ে জোরে কথা বলছিল।
বাইরে হালকা বাতাস বইছিল,
আর মনে হচ্ছিল—
পুরো পৃথিবী জানে,
দুইটা হৃদয় অবশেষে তাদের ঠিকানা পেয়ে গেছে। 💍❤️