মৃত্যুর এক শতাব্দীরও বেশি সময় পরে মরণোত্তর লাইব্রেরি কার্ড পেয়েছেন বিখ্যাত আইরিশ লেখক অস্কার ওয়াইল্ড। সম্প্রতি ব্রিটিশ লাইব্রেরি তার মৃত্যুর ১২৫ বছর পর তার নামে নতুন করে একটি লাইব্রেরি কার্ড ইস্যু করেছে।
১৮৯৫ সালে সমকামিতার অভিযোগে এই আইরিশ কবি, উপন্যাসিক এবং নাট্যকারকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এরপর তৎকালীন ব্রিটিশ মিউজিয়াম রিডিং রুমে (বর্তমানে ব্রিটিশ লাইব্রেরি) তার প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সে সময়ে সমকামিতা একটি ফৌজদারি অপরাধ ছিল। লাইব্রেরি নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লাইব্রেরি কার্ড বাতিল হয়ে যেত।
এদিকে চলতি বছরের ৩০ নভেম্বর অস্কার ওয়াইল্ডের ১২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়। এই উপলক্ষে বিখ্যাত এ লেখকের প্রতি সম্মান জানাতে ব্রিটিশ লাইব্রেরি তার নামে নতুন একটি লাইব্রেরি কার্ড ইস্যু করেছে। এই প্রতীকী নতুন কার্ডটি তার নাতি ও লেখক মার্লিন হল্যান্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নতুন কার্ডে ওয়াইল্ডের মৃত্যুর দিন ১৯০০ সালের ৩০ নভেম্বর কার্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ লেখা হয়েছে।
মার্লিন হল্যান্ড বলেছেন, 'লাইব্রেরি যখন ওয়াইল্ডকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন তিনি কারাগারে ছিলেন। তাই তিনি এই বিষয়ে জানতেন না। আমি মনে করি সে সময় যদি তিনি জানতেন, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ লাইব্রেরি তাকে নিষিদ্ধ করেছে। তার দুঃখ আরও বেড়ে যেত।'
তিনি আরও বলেন, 'তবে আমার দাদু যদি জানতেন তার লাইব্রেরি কার্ড, যা রিডার পাস নামে পরিচিত তা আবার ইস্যু করা হয়েছে, তাহলে তিনি খুশি হতেন। এমনকি যদি তা প্রতীকীভাবেও হয়।'
হল্যান্ড জানান, তিনি সবেমাত্র অস্কার ওয়াইল্ড সম্পর্কে একটি বই লেখা শেষ করেছেন।
উল্লেখ্য, সমকামিতার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ওয়াইল্ডকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তাকে ইংল্যান্ডের রিডিংয়ের একটি সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে এই জেল জীবনের স্মৃতি নিয়ে তিনি 'দ্য ব্যালাড অব রিডিং গাওল' নামের একটি কবিতা লিখেন। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর, তিনি ফ্রান্সে চলে যান। জীবনের শেষ কয়েক বছর তিনি নির্বাসনে কাটিয়েছিলেন। ১৯০০ সালের ৩০ নভেম্বর ৪৬ বছর বয়সে প্যারিসে মারা যান তিনি।
সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস