Posts

নিউজ

শব-ই-আরুস: সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে রুমির মিলনের রাত

December 7, 2025

নিউজ ফ্যাক্টরি

Featured Image
26
View

বিশ্ববিখ্যাত সুফি সাধক, কবি এবং ধর্মতত্ত্ববিদ মাওলানা জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি ১২৭৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর তুরস্কের কোনিয়াতে মারা যান। রুমি ভক্তরা তার মৃত্যুকে সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে মিলন বলে উল্লেখ করে থাকেন। এজন্য তার মৃত্যুবার্ষিকী পালনের বিশেষ রাতকে শব-ই-আরুস বা মিলনের রাত বলা হয়। 

প্রতিবছর ৭ থেকে ১৭ ডিসেম্বর, ১০ দিন ধরে রুমির মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়। ত্রয়োদশ শতকের এ ইসলামী কবি, পন্ডিত এবং সুফি সাধকের মৃত্যুবার্ষিকী পালনের জন্য হাজার হাজার মানুষ কোনিয়াতে এসে হাজির হন। এ সময় রুমির মাজারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ৮০ বছরের বেশি সময় ধরে কোনিয়ায় এই উৎসবটি পালন করা হচ্ছে।    

এই উৎসবের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অংশ হলো শব-ই-আরুস। ১৭ ডিসেম্বর রাতে এটি উদযাপন করা হয়। রুমি তার মৃত্যুকে স্রষ্টার সঙ্গে পুনর্মিলন বলে মনে করতেন।

শব-ই-আরুসের মূল আকর্ষণ ঘূর্ণায়মান দরবেশ নৃত্য। পবিত্র কোরআন শরীফ থেকে আয়াত তেলাওয়াতের মাধ্যমে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সময় দরবেশরা কাফনের কাপড়ের মত লম্বা সাদা পোশাক পরেন। কালো রঙের বেল্টের মত একটি কাপড় কোমরে বেঁধে রাখেন, এটিকে কবরের প্রতীক বলে মনে করা হয়। এছাড়া কবরের উপর যে স্মৃতিস্তম্ভ থাকে, তার প্রতীক হিসেবে তারা মাথায় লম্বা টুপি পরে থাকেন।      

দরবেশরা একে অপরকে অভিবাদন জানাতে জানাতে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এরপর তারা বৃত্তাকারে ঘুরতে থাকেন। এ সময় তাদের ডান হাত প্রতীকীভাবে সৃষ্টিকর্তার দিকে উর্ধ্বমুখী থাকে। আর বাম হাত ভূমির দিকে নিম্নমুখী থাকে। তাদের বিশ্বাস এভাবে তারা সৃষ্টিকর্তার সঙ্গে একত্রিত হতে পারেন। এরপর প্রার্থনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়। ২০০৫ সালে ঘূর্ণায়মান দরবেশ নৃত্যকে মানব ঐতিহ্যের একটি মাস্টারপিস বলে ঘোষণা করেছে ইউনেস্কো। 

উল্লেখ্য, মাওলানা জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি ১২০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানের বালখ নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। ১২৭৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর ৬৬ বছর বয়সে তুরস্কের কোনিয়ায় মারা যান তিনি। কোনিয়ায় রুমির মাজারকে কেন্দ্র করে একটি যাদুঘরও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। 

সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড  

Comments

    Please login to post comment. Login