
হযরত হাওয়া (আ) জান্নাতে হেঁটে বেড়াচ্ছিলেন। ইবলিস তাঁর নিকট খুবই উত্তম সুরতে কল্যাণকামী সেজে এলো। বলল, আল্লাহ তোমাদের দুনিয়াতে পাঠিয়ে দেবেন, এই জান্নাতে রাখবেন না।
ইবলিসের এই কথাটি ছিল সত্য।
“এবং যখন তোমার রাব্ব মালাইকাদের বললেনঃ নিশ্চয়ই আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করব।”
সূরা বাকারাহ, আয়াত- ৩০
আল্লাহ তাআলা আদমকে দুনিয়াতে পাঠানোর জন্যই তৈরি করেছেন। ফেরেশতাদের জানিয়েও দিয়েছেন। কিন্তু শয়তান তার কথাটি দিয়ে ভিন্ন ফায়দা নিতে চাইল।
ইবলিস আরও বলল, আর দুনিয়াতে এই এই কষ্ট, এত পরিশ্রম। জান্নাতের তুলনায় কি নিকৃষ্টই তার হালৎ!
সে হাওয়া (আ) এর মনে ভয় প্রবেশ করাতে চাচ্ছিল। শয়তান দুনিয়ার জীবনের কষ্টের বিষয়টি বড় করে তুলে ধরল, যেন সে হাওয়া (আ) এর প্রতি সে অনেক সহানুভূতিশীল।
শয়তান আরেকটি কাজ করল। একটি তথ্য গোপণ করল। তথ্যটি হলো– বেহেশতে আবার ফিরে আসা সম্ভব।
শয়তান থেমে থাকল না। এবার সে দুনিয়াতে যাওয়ার বিপদ থেকে বাঁচার উপায় হিসেবে একটা খুব সহজ কাজ প্রস্তাব করল– শুধু একটি ফল খেতে হবে। এই ফল খেলে চিরদিন বেহেশতে থাকা সম্ভব!
যেন শয়তান অনেক বড় জ্ঞানী ও আদম (আ) ও হাওয়া (আ) এর অত্যন্ত কল্যাণকামী। শয়তান সেই (নিষিদ্ধ) ফল খেতে হাওয়া (আ) কে তাড়া দিল। নেক কাজ দ্রুতই সেরে নেয়া ভালো!
শয়তানের এই সমস্ত প্রবঞ্চনায় হাওয়া (আ) সাদামনে প্রভাবিত হলেন। তিনি স্বামী আদমের (আ) সতর্কতার কথা ভুলেই গেলেন।
তাহলে শয়তানের অস্ত্রগুলো কী কী?
১ম অস্ত্র– খুবই কল্যাণকামী সেজে আসা
২য় অস্ত্র– সত্য তথ্য জানিয়ে আস্থা অর্জন
৩য় অস্ত্র– তথ্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিকৃত করে ব্যাখ্যা করা, অন্তরে মিথ্যা প্রবেশ করানো।
৪র্থ অস্ত্র– বিপদ থেকে বাঁচার ম্যাজিকাল কোন উপায় প্রস্তাব করা, বিশাল সফলতার লোভনীয় স্বপ্ন দেখানো। যেগুলো আসলে মিথ্যা ও ধ্বংসের ফাঁদ।
৫ম অস্ত্র- নিজ উদ্যোগে ধংসের রাস্তায় উঠিয়ে তবে ক্ষান্ত হওয়া
শয়তানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অনুসারীরাও একই অস্ত্র প্রয়োগে মানুষকে সর্বশান্ত করে, বিপদে ফেলে।