Posts

গল্প

বিশ্বাস করা মানুষ।

December 10, 2025

Md Josam

Original Author মোঃ জসিম

Translated by মোঃ জসিম

27
View

গল্প: “বিশ্বাস করা মানুষ” — 

ধনকুবের আব্দুর রহমানের জীবন ছিল আলো–ছায়ার জটিল এক গোলকধাঁধা।
টাকা, সম্মান, ক্ষমতা—সব ছিল তার হাতে, কিন্তু সেই ঝড়ের রাত বদলে দিল সবকিছু।

অন্ধকার রাস্তায় ছুরি হাতে ছিনতাইকারীদের মাঝে পড়ে সে মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়েছিল।
ঠিক তখনই অচেনা এক যুবক—সায়েদ—ঝাঁপিয়ে পড়ে তাকে বাঁচিয়ে দিল।

আব্দুর মনে করল, আল্লাহ তাকে বিশেষভাবে রক্ষা করেছেন।
সেই কৃতজ্ঞতা থেকে সে সায়েদকে নিজের ঘরে তুলল—ভাইয়ের মতো, আপনজনের মতো।

রাতের আড্ডায়, চায়ের কাপে, নীরব কথায়—সায়েদ ধীরে ধীরে বাড়ির ভেতরে জায়গা করে নিল।
সে মানুষের অভ্যাস, আচরণ, সম্পর্ক—সব নিঃশব্দে পড়ে নিল, যেন দেয়ালের কানও তার কাছে লুকোতে পারে না।

সায়েদ এমনভাবে হাসত, এমনভাবে কথা বলত—যাতে কেউ সন্দেহ করতে পারত না।
অথচ প্রতিদিনই সে পর্দার আড়ালে হিসাব বদলাচ্ছিল, সন্দেহ ছড়াচ্ছিল, মন ভাঙাচ্ছিল।

আব্দুর ভাবত—“এ মানুষ ছাড়া আমি আর কাউকে বিশ্বাস করতে পারি না।”
আর ঠিক সেই বিশ্বাসই সায়েদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হয়ে উঠল।

দিনের পর দিন—
নথির তারিখ বদলাল,
ব্যাংকের লেনদেন অদ্ভুত হল,
কর্মচারীদের মাঝে বিভাজন তৈরী হল—
তবুও আব্দুর টের পেল না।

কারণ বিশ্বাসঘাতকতা কখনো শব্দ করে না—
এটা মানুষের ভরসার ভেতরেই বড় হয়।

তারপর এল সেই ভয়ঙ্কর ভোর—
নথি নেই।
চাবি নেই।
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি।
কর্মচারীরা অস্থির।
আর সায়েদ—সম্পূর্ণ অদৃশ্য।

আব্দুর বুঝে গেল—যে মানুষ তাকে প্রথম রাতে “বাঁচিয়েছিল”,
সেই মানুষই আসলে বহু আগে থেকেই তার জীবনকে ধ্বংস করার যাত্রা শুরু করেছিল।

সে বসে রইল নীরবতায়—ভাঙা বিশ্বাসের ঠাণ্ডা অনুভূতি নিয়ে।
কারণ সবচেয়ে কঠিন সত্য হলো—

মানুষ হত্যাকারীকে দূর থেকে চেনে,
কিন্তু বিশ্বাসঘাতককে চেনে ঠিক তখনই,
যখন সবকিছু শেষ হয়ে যায়।

Comments

    Please login to post comment. Login