আপনি হয়তো মনে করেন, কাজ ফেলে রাখা মানে আপনি অলস; দরজা ঠিক মত বন্ধ করা হল কিনা বারবার পরীক্ষা করলে আপনি অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণ; কিংবা সহকর্মীদের নিয়ে আড়ালে কথা বললে আপনি একটু গুটিবাজ। কেমন হবে যদি বলি এসব তথাকথিত “খারাপ অভ্যাস” আসলে আপনাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আপনার মস্তিষ্কের কৌশল?
আমাদের দৈনন্দিন এবং অভ্যস্ত আচরণগুলোর আড়ালে লুকিয়ে আছে অসংখ্য দৈনন্দিন আচরণ। টেনশনে থাকলে আমরা যেমন অঙ্গভঙ্গি করি, কোনো কিছু বারবার যাচাই করা, বিচিত্র ছোট ছোট রীতিনীতি—যেগুলো হাজার হাজার বছরের বিবর্তনে গড়ে ওঠা টিকে থাকার প্রবৃত্তির চিহ্ন। আজ যেগুলো অস্বস্তিকর বা হাস্যকর মনে হয়, একসময় সেগুলোই জীবন-মৃত্যুর পার্থক্য তৈরি করত।
প্রাচীন তৃণভূমি থেকে শুরু করে আজকের কংক্রিটের জঙ্গলে বসবাস করলেও আমাদের শরীর ও মস্তিষ্ক এখনো এমন এক জগতের জন্য প্রস্তুত যেখানে শিকারি আছে, সামাজিক হুমকি আছে, আর সম্পদ দুষ্প্রাপ্য। আজ যেসব আচরণ বিব্রতকর বা বিরক্তিকর মনে হয়, একসময় সেগুলোর ওপরই নির্ভর করত পরদিন সূর্যোদয় দেখব কি না, নাকি অন্য কারও খাদ্য হয়ে যাব।
এই তালিকায় আমরা উন্মোচন করব মানুষের এমন দশটি দৈনন্দিন আচরণ, যা আসলে ছদ্মবেশে থাকা টিকে থাকার প্রবৃত্তি। কিছু আপনাকে হাসাবে, কিছু অস্বস্তিতে ফেলবে, আর কয়েকটি হয়তো ভাবিয়ে তুলবে—আপনার প্রতিদিনের রুটিন সত্যিই কতটা আপনার নিজের। এই লেখাটি পড়া শেষ করলে আপনি আপনার স্বভাবগত অভ্যাসগুলোকে হয়তো সম্পূর্ণ নতুন এক বিবর্তনমূলক দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করবেন।
১০. জিনিসপত্র জমিয়ে রাখা
ব্যবহার্য জিনিসপত্রের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বেশ জটিল। এরকম অসংখ্য মানুষ আছে যারা ২০০৯ সালের একটি মোজা, পুরোনো ম্যাগাজিন, বাজারের লিস্ট, মোবাইলের কাভার, ভাঙা স্ট্যাপলার, এমনকি খালি বোতলও ফেলতে পারে না। বাইরে থেকে দেখলে একে অলসতা মনে হতে পারে। কিন্তু জিনিস জমিয়ে রাখার এই প্রবণতার পেছনে গভীর বিবর্তনমূলক ইতিহাস রয়েছে।
প্রাচীন মানুষের জন্য সম্পদ জমিয়ে রাখা ছিল প্রাণধারনের জন্য অপরিহার্য। কারণ তখন প্রকৃতির কাছে মানুষ ছিল অসহায়। সুপারমার্কেট বা ফ্রিজ ছিল না। যদি অতিবৃষ্টি হয়, যদি শীতে সব বরফে ঢাকা পড়ে যায়, এই ভয়ে কাজে লাগতে পারে এমন যেকোনো কিছু সংরক্ষণ করাই ছিল শীতকাল পার করা আর অনাহারে মরার মধ্যকার পার্থক্য।
এই প্রবণতা জন্ম নিয়েছে এক আদিম অভাব-মানসিকতা থেকে: আগামীকাল সম্পদ হারিয়ে যেতে পারে, তাহলে আজই সব ধরে রাখো। আধুনিক দুনিয়াতেও এই প্রবৃত্তি রয়ে গেছে। গবেষণায় দেখা যায়, মানুষ চাপ বা অনিশ্চয়তার সময় জিনিস ধরে রাখার প্রবণতা বাড়ায়, ঠিক যেমন আমাদের পূর্বপুরুষরা অস্থির পরিবেশে করত। রমজান মাস আসার আগেই দেখবেন মানুষ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় এবং আগে থেকেই চিনি, লেবু, পিঁয়াজ ইত্যাদি কিনে ঘরে জমা করে। মানুষের এই বিবর্তনমূলক অভ্যাসটাকেই কাজে লাগায় ব্যবসায়ীরা। ধরুন, সয়াবিন তেলে ২০% ডিসকাউন্ট দেয়া হল। যদি আপনি মধ্যবিত্ত হন তো ইচ্ছে করবে কিনে রাখি, কারণ ভবিষ্যতে দাম বাড়বে বলে শোনা যাচ্ছে।
তাই পরেরবার কেউ আপনার “যত্ন করে সাজানো অপ্রয়োজনীয় জিনিসের স্তূপ” নিয়ে সমালোচনা করলে, নির্দ্বিধায় বলতে পারেন—আপনার ভেতরের গুহাবাসী এখনো বেঁচে আছে, সুস্থ আছে, আর আপনাকে নিরাপদ রাখার জন্য নিরলস কাজ করে চলেছে।
৯. বারবার ফোন চেক করা
শুনতে অবাক লাগছে না? মোবাইল ফোনের সাথে আমাদের আদিম গুহাবাসীদের কী সম্পর্ক? আছে, সম্পর্ক আছে। গভীর সম্পর্ক। পাঁচ মিনিটে দশবার ইনস্টাগ্রাম রিফ্রেশ করা, কিংবা মোবাইলে ভৌতিক ভাইব্রেশন অনুভব করা, অথচ হয়ত কোনো নোটিফিকেশন আসেনি। হয় না এরকম? আপনি একা নন। এটি ডিজিটাল আসক্তি মনে হলেও, আসলে এটি এক প্রাচীন সতর্কতা ব্যবস্থার আধুনিক সংস্করণ।
আমাদের পূর্বপুরুষদের সারাক্ষণ চারপাশে নজর রাখতে হতো—শিকারি, প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী, হঠাৎ ঝড়ের জন্য। অতিসতর্কতা তাদের বাঁচিয়ে রেখেছিল। আজ সেই একই স্নায়বিক সার্কিট নজর রাখছে… নোটিফিকেশনের ওপর।
প্রতিটি ‘ভাইব্রেশন’ মস্তিষ্কে সামান্য ডোপামিন নিঃসরণ ঘটায়, যা আবার চেক করার তাগিদ বাড়ায়। মস্তিষ্ক “বিপদ আসছে” আর “আপনার পার্সেল পাঠানো হয়েছে”—এই দুটির পার্থক্য বুঝতে পারে না।
এর সঙ্গে যুক্ত হয় অনিশ্চিত পুরস্কারের চক্র—কখন মেসেজ বা লাইক আসবে, কেউ জানে না। ফলে তৈরি হয় এমন এক বাধ্যতামূলক চেক করার অভ্যাস, যা যে কোনো শিকারি-সংগ্রাহকের গর্বের বিষয় হতে পারত।
তাই ভোর দুইটায় যদি আপনি ‘ডুম-স্ক্রলিং’ করেন, মনে রাখবেন—আপনার মস্তিষ্ক নষ্ট নয়। সে শুধু আলো ঝলমলে পর্দার দুনিয়ায় পুরোনো সফটওয়্যার চালাচ্ছে।
৮. গসিপ করা
গসিপ বন্ধুত্ব ভাঙতে পারে, অফিসে নাটক তৈরি করতে পারে—তবু বিবর্তনের দৃষ্টিতে এটি মানুষের অন্যতম কার্যকর টিকে থাকার হাতিয়ার। স্মার্টফোন বা মধ্যযুগীয় ঘোষণাকারীদের বহু আগে, মানুষ ফিসফিস করে কথোপকথনের ওপর নির্ভর করত—দলের কথা গোপন রাখার জন্য, হুমকি চিহ্নিত করার জন্য, আর গোষ্ঠীর ভারসাম্য বজায় রাখতে।
প্রাগৈতিহাসিক গোষ্ঠীতে কে বিশ্বাসযোগ্য, কে প্রতারক, কে অস্থির হয়ে উঠছে—এই তথ্য জীবন বাঁচাতে পারত। গসিপ ছিল এক আদিম গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক, যা বিপদ এড়াতে ও সামাজিক সংহতি গড়তে সাহায্য করত। নৃতত্ত্ববিদরা দেখেছেন, স্বাভাবিক কথোপকথনের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই সামাজিক মূল্যায়ন।
আজ আপনি কোনো সহকর্মীকে নিয়ে গসিপ করুন, অথবা টং দোকানে চায়ে চুমুক দিয়ে অফিসের বসের বদনাম করুন—আপনার মস্তিষ্ক ঠিক সেটাই করছে, যার জন্য সে বিবর্তিত হয়েছে: সামাজিক জঙ্গলে টিকে থাকতে সুনাম রক্ষা।
গসিপ তুচ্ছ মনে হতে পারে, কিন্তু বিবর্তন একে গড়ে তুলেছে উচ্চঝুঁকির তথ্য ব্যবস্থাপনা হিসেবে। আর সত্যি বলতে—আপনার ভেতরের গুহাবাসী এতে বেশ দক্ষ।
৭. কাজ ফেলে রাখা (প্রোক্রাস্টিনেশন)
ডেডলাইন সামনে রেখে আলসেমি করা? করব, করছি, করে যত দেরিতে করা যায়? চিরাচরিত প্রোক্রাস্টিনেশন। আধুনিক সংস্কৃতি একে অলসতা বললেও, বিবর্তনের দৃষ্টিতে এটি অনেক বেশি কৌশলী।
প্রাচীন মানুষের শক্তি সংরক্ষণ করতে হতো এবং অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি এড়াতে হতো। তাড়াহুড়ো বিপদ ডেকে আনতে পারত, আর অপেক্ষা করে আরও তথ্য জোগাড় করা প্রায়ই জীবন বাঁচাত। প্রোক্রাস্টিনেশন আসলে মস্তিষ্কের বার্তা: “থামো। মূল্যায়ন করো। প্রয়োজন না হওয়া পর্যন্ত শক্তি জমাও।” লক্ষ বছর আগে বিপদ ছিল হিংস্র প্রাণি বা প্রতিপক্ষ গুহাবাসী দল। আজ বিপদটা কোনো শিকারি নয়—একটা স্প্রেডশিট। তবু মস্তিষ্ক ডেডলাইনকে একই ক্রমবর্ধমান হুমকি হিসেবে দেখে। বিপদ যখন অনিবার্য হয়ে ওঠে, অ্যাড্রেনালিন বাড়ে, উৎপাদনশীলতা হঠাৎ বেড়ে যায়—ঠিক যেমন পূর্বপুরুষরা হঠাৎ দৌড়ে পালাত।
তাই পরেরবার কাজের বদলে সিরিজ দেখলে, একে নির্দ্বিধায় “প্রাগৈতিহাসিক ঝুঁকি মূল্যায়ন” বলে চালিয়ে দিতে পারেন।
৬. হঠাৎ চমকে ওঠা
হঠাৎ শব্দে লাফিয়ে ওঠা, কেউ কাছে এলে চমকে যাওয়া, হরর মুভির জাম্প স্কেয়ার। এগুলো কোনো ব্যক্তিত্বের ত্রুটি নয়। এগুলো সূক্ষ্মভাবে গড়া এক টিকে থাকার যন্ত্রের প্রমাণ।
চমকে ওঠার প্রতিক্রিয়া মানবদেহের দ্রুততম প্রতিক্রিয়াগুলোর একটি। প্রাচীন পরিবেশে মিলিসেকেন্ডের মূল্য ছিল। ঘাসে শব্দ মানে হয়তো কিছুই নয়—আবার হতে পারে এক্ষুনি একটা মাংসাশী প্রাণি আপনার উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে যাচ্ছে।
আধুনিক যুগে শহরে বাঘ সিংহ ঘোরে না। আধুনিক হুমকি হল হঠাৎ কলিং বেল, বাইরে আচমকা দুম করে শব্দ, কানের কাছে হঠাৎ কেউ চেঁচিয়ে ওঠা। স্নায়ুতন্ত্র এখনো বিপদের জন্য প্রস্তুত। অতিসংবেদনশীল হওয়া নাটক নয়—এটি এক উচ্চমানের প্রাথমিক সতর্কতা ব্যবস্থা।
৫. কুসংস্কার ও আচার
কোথাও বেরনোর সময় পিছু না ডাকা, হোঁচট খেলে দুই মিনিট বসে তারপর কাজে যাওয়া, কালো বিড়াল এড়ানো—শুনতে বোকা লাগলেও এগুলোর শিকড় আদিম টিকে থাকার প্রবৃত্তিতে। প্রাচীন মানুষ অনিশ্চিত জগতে বাস করত, যেখানে প্রকৃত বিপদ ভরপুর। এমনকি ভুল হলেও, নিদর্শন চিনে নেওয়া কখনো কখনো সুবিধা দিত। এই প্রবণতাকে বলা হয় ‘প্যাটার্নিসিটি’। ঘাস নড়লে শিকারি ধরে নেওয়া—ভুল হলেও নিরাপদ। সময়ের সঙ্গে এই প্রতিরক্ষামূলক আচরণ আচার ও কুসংস্কারে রূপ নেয়। এগুলো বিশৃঙ্খল জগতে নিয়ন্ত্রণের ভ্রম দিত। আজও অনিশ্চয়তা আমাদের আদিম সতর্কতা ব্যবস্থাকে সক্রিয় করে। মস্তিষ্ক জানে কালো বিড়াল ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে না, কিন্তু আচার উদ্বেগ কমায়—হাজার বছরের বিবর্তিত সান্ত্বনার কম্বল। তাই হ্যাঁ, লবণ ছোড়া হাস্যকর লাগতে পারে। কিন্তু বিবর্তন আপনাকে বাজি ধরে নিরাপদ থাকতে শিখিয়েছে।
৪. চর্বিযুক্ত ও মিষ্টি খাবার পছন্দ করা
চকলেট কেন গাজরের চেয়ে বেশি টানে—এ নিয়ে দোষ দেবেন বিবর্তনকে, ইচ্ছাশক্তিকে নয়। প্রাচীন মানুষের জন্য ক্যালোরি-সমৃদ্ধ খাবার ছিল দুষ্প্রাপ্য ও মূল্যবান। মধু, বাদাম, চর্বিযুক্ত মাংস দুর্ভিক্ষ বা দীর্ঘ যাত্রায় জীবন বাঁচাত। চিনি ও চর্বির সঙ্গে শক্তিশালী ডোপামিন প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল: উচ্চ ক্যালোরি মানে বেঁচে থাকা আর বেঁচে থাকা মানে বংশবিস্তার। কাজেই এই ব্যবস্থা ভালোই কাজ করত—যতদিন না সুপারমার্কেট এল। আজ প্রাচুর্য এই প্রবৃত্তিকে ফাঁদে ফেলেছে। মস্তিষ্ক এখনো ভাবে প্রতিটি ডোনাট জীবনরক্ষাকারী শক্তির ভাণ্ডার। তাই হ্যাঁ, ডায়েটে ব্যর্থ হওয়ার জন্য আপনাকে বিবর্তনই তৈরি করেছে। অন্তত আপনার পূর্বপুরুষরা আপনার নাস্তার প্রতি নিষ্ঠায় গর্ব করত।
৩. নতুন পরিস্থিতিতে চোখের যোগাযোগ এড়ানো বা লাজুক হওয়া
কেউ নতুন জায়গায় আত্মবিশ্বাসী, কেউ বিব্রত। প্রেমের শুরুর দিকে প্রেমাস্পদের চোখের দিকে তাকাতে লজ্জা করে। মনে হয় আমার ভেতরের সবকিছু বুঝি দেখে ফেলল। লাজুকতা বা চোখে চোখ না রাখা কেবল স্বভাব নয়—এগুলো আদিম টিকে থাকার কৌশল। অনেক প্রাইমেট প্রজাতিতে সরাসরি তাকানো আধিপত্য বা চ্যালেঞ্জ বোঝায়। প্রাচীন মানুষের ক্ষেত্রে অপরিচিতের দিকে তাকানো সংঘর্ষ ডেকে আনতে পারত। চোখ সরানো মানে ছিল সতর্কতা ও অহুমকি। আজও লাজুকতা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কাজ করে। সতর্কতা দুর্বলতা নয়—এটি মানবজাতির প্রাচীনতম অস্ত্র।
২. ভুল সময়ে হেসে ফেলা
শেষকৃত্যে হাসি, গম্ভীর বৈঠকে খিলখিল, বা ভুল উচ্চারণে হেসে ফেলা—লজ্জাজনক হলেও মানবিক। স্নায়ুচাপজনিত হাসি এক আদিম সামাজিক টিকে থাকার কৌশল। হাসি নিরাপত্তা সংকেত দেয়, আগ্রাসন কমায়, সংঘর্ষ প্রশমিত করে। প্রাগৈতিহাসিক গোষ্ঠীতে সময়মতো হাসি উত্তেজনা থামাতে পারত। আজ ঝুঁকি কম, কিন্তু প্রতিক্রিয়া রয়ে গেছে। অস্বস্তিকর নীরবতায় হাসলে আপনি অশিষ্ট নন—আপনি সামাজিক ভারসাম্য ফিরিয়ে আনছেন। হয়তো মানুষ অবাক হবে, কিন্তু বিবর্তনের বিচারে আপনার সময়জ্ঞান চমৎকার।
১. স্বপ্ন দেখা ও রাতের মস্তিষ্ক কার্যকলাপ
স্বপ্ন অদ্ভুত, অর্থহীন বা একেবারে পাগলামি মনে হতে পারে। কিন্তু বিবর্তনমূলক মনোবিজ্ঞান বলছে—এর একটি গুরুত্বপূর্ণ টিকে থাকার ভূমিকা আছে। ‘থ্রেট সিমুলেশন থিওরি’ অনুযায়ী, স্বপ্ন মস্তিষ্ককে নিরাপদ পরিবেশে বিপজ্জনক পরিস্থিতির মহড়া দিতে সাহায্য করে।
• তাড়া খাওয়ার স্বপ্ন—শিকারি থেকে পালানোর অনুশীলন
• বন্ধুর সঙ্গে ঝগড়ার স্বপ্ন—সামাজিক কৌশল পরীক্ষা
• উড়ন্ত চা-কেতলি?—হয়তো সৃজনশীলতার জন্য
REM ঘুমে মস্তিষ্ক আবেগ প্রক্রিয়াজাত করে, স্মৃতি সংহত করে, পরদিনের চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত হয়। দুঃস্বপ্ন অপ্রীতিকর হলেও হুমকি চেনার ক্ষমতা বাড়ায়।
তাই পেঙ্গুইন, জেট স্কি আর ট্যাক্স অডিট নিয়ে স্বপ্ন দেখে জেগে উঠলে চিন্তা করবেন না। আপনার মস্তিষ্ক শুধু অফিস-আওয়ার্সের পর টিকে থাকার প্রশিক্ষণ নিচ্ছে।
আপনি অদ্ভুত নন।
আপনি বিবর্তনের দিক থেকে অত্যন্ত দক্ষ।