Posts

প্রবন্ধ

স্টিল ফটোগ্রাফি ইন-সাইট-দর্শন ও ইমেজের চরিত্র।

June 5, 2024

সাইদ সুমন

আমরা মুভিং ইমেজে অনেকগুলো স্টিল ফটোর যোগ দেখি, আমরা আমাদের ভিউফাইনডার এ যে ছবি দেখি তা বহমান , এই চলমানতার মধ্যে দিয়ে একটা স্থির চিত্র কে ফটোগ্রাফার’রা ফ্রিজ করে, থামায়ে দেয় সময় কে , যা অলরেডি অতীত তাকে ক্যামেরায় ধরে রাখে, যেখান থেকে জানা যায় চলমান মুহূর্তের ভাঙ্গা অংশও আসলে একটা সম্পূর্ণ অংশ, একটি মানুষের হেটে যাওয়ার দৃশ্য অনেক গুলো স্টিল ইমেজের জোড়া।

 স্থির হয়ে যাওয়া একটা দৃশ্য প্রচণ্ড ভাবে আমাদের নাড়া দেয় অনেক সময়, স্থির চিত্র আমাদের গতিশীল করে তোলে , সিনেমার ভিজ্যুয়াল অনন্তকাল স্থির থাকার উপায় নাই, যখন সে transition করে একটা ফ্রেম থেকে আরেকটা ফ্রেমে তখনই মাইন্ডে পূর্ব স্মৃতি আর বর্তমান ভিজ্যুয়ালের মৈথুনে সত্তা তার ধ্যানী গুন হারায়, তাই বলা হয়েছে স্টিল ফটো ভিউয়ার কে কেন্দ্রভুত করে একটা ইমেজে, যেখানে ছবির বিশয় কখনও ফ্রেম ছেড়ে যায়না, যাকে একটা মোমেন্ট এর মৃত্যু বলা যায়, স্টিল ফটোগ্রাফি তাই ভিজ্যুয়াল শব্দের শব ও বটে।

 ফটোগ্রাফি স্টিল আর মুভিং দুটোই মেকানিক্যাল রিপ্রেজেন্টসন, যেখানে মেশিন কে ব্যবহার করে মানুষ, ভিজ্যুয়াল দিয়ে ডায়লগে যাওয়া সত্তার কাজ, ফটোগ্রাফির বিশয় শেষ পর্যন্ত টেক্সট, ফটোগ্রাফি টেক্সট আকারে ভিউয়ার এর সাথে আলাপে যায়, যেখানে শেষ পর্যন্ত অনুভুতির জন্ম নেয় ভিউয়ার এর মনে । 

প্রত্যেকটা ইমেজ এক একটা অনুভুতির সাজেশন, মানে আপনি যদি নির্যাতনের দৃশ্য দেখেন তাহলে আপনি ব্যাথা অনুভব করবেন যদি সাইকো না হন, ইমেজের বিশয় সব সময় নির্দিষ্ট একটা অনুভুতির সাজেশন দেয়, ভালো লাগা, বিস্ময়, ক্ষোভ, দুঃখবোধ, অনুভুতির অনেক গুলো নাম থাকতে পারে, তবে অনুভুতিকে পেইন ও প্লেজার এই দুই নাম দিয়ে নির্দিষ্ট করতে পারি, যুদ্ধের একটা নির্মম ছবি আমরা পেইন অনুভব করতে পারি কিন্তু ছবিটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি এন্সেল অ্যাডামস এর একটা ল্যান্ডস্কেপ দেখে আমরা প্রকৃতির আনন্দ অনুভব করি, আবার হয়ত রহস্যময় কোন ষ্ট্রীট ফটোগ্রাফি দেখে আমরা অবাক হতে পারি, ইমেজ সব সময় তার সাথে তার অর্থ বহন করে চলে।

 ফটোগ্রাফার তার ছবি দিয়ে ভিউয়ার কে অনুভুতির প্রস্তাব দেয়, একটা ছবি দেখে ভিউয়ার ক্যামন অনুভূতি প্রকাশ করবে তা নির্ভর করে ভিউয়ার এর মনন এর উপর, আবেগ এর প্যারামিটারে অনুভূতির প্রকাশ, ভিউয়ার এর সংবেদনশীলতার উপর নির্ভর করে একজন মানুষ কতটা আনন্দিত হবে বা দুঃখিত হবে।

 ফটোগ্রাফার এর প্রকাশ তার ফটোগ্রাফি, মানে একজন ফটোগ্রাফার এর ইনার সেলফ/ চেতন, অবচেতন ও অচেতন এর প্রকাশ তার ছবি , কারন ফটোগ্রাফার তার জ্ঞান দিয়ে যেমন একটা সেপ্স কে দেখে তেমনি জ্ঞান দিয়েই ঠিক করে তিনি ক্যামনে ছবি কম্পোজিশন করবেন, আর এই জ্ঞান মানুষের ইনার এলিমেনট, অতএব ইনার সেলফ দেখা ও কম্পোজ করা ও প্রিন্ট করার মধ্যে দিয়ে যে ফাইনাল সৃষ্টি করে তা ইনার সেলফ এর প্রতিবিম্ব আউটার-সেলফে।একজন সত্যিকারের ফটোগ্রাফারের ছবির মধ্যে তিনি থাকেন কোন না কোন ভাবে, মানে তার ইনার ফিলসফি ফটো কম্পোজিশনে প্রভাবিত করে।

 স্থির চিত্রের যে এই স্থবিরতা এটা যুগান্তকারী আবিস্কার, কারন ইমেজ ‘এজ ইট ইজ’ গুনে গুণান্বিত, পেইন্টিং যদি রিয়ালিজম দিয়ে একটা ফটো কে কপি করে তাও কখনও রিয়্যালিটি কে রিপ্রেজেন্ট করেনা শতভাগ, কিন্তু ক্যামেরা স্পেস কে ফটোকপি করার গুনের কারনে সুবিধা পেয়েই থাকে। এবং ফটোগ্রাফি মুভিং বা স্টিল দুটোই আমাদের হিস্ট্রি কে একটা স্যেপ দিয়ে যাচ্ছেন, যদিও রাজনীতি বিদ্যমান কি ইতিহাসে দেখানো হবে আর কি গোপন করবে, শাসক ও শোষক শ্রেণী ভিজ্যুয়ালের প্রবাহ নিয়ন্ত্রন করার মধ্যে দিয়ে মানুষের মনসতত্ত্ব নিয়ন্ত্রন করে থাকেন, কালেক্তিভ মানস নিয়ন্ত্রণে এখন ইমেজ অনেক শক্তিশালী, শাসক শোষক যেমন নিজেদের সুবিধাও নিচ্ছেন আবার মাঝে মাঝে বিস্ফোরক ভিজ্যুয়ালের প্রকাশে তারা বিপদেও পরছেন অনেক সময়।

Comments

    Please login to post comment. Login