দৃষ্টি কাটাবনের ফুটপাত দখল করে থাকা এক ছোট্ট " শেষ বেলার সাজগোজ " নামক দোকানে, তাকে সাজিয়ে রাখা খাকি প্যাকেট ভর্তি চা পাতা, সাদা পলিতে মোড়ানো কর্পূর আর পাশে থরে থরে সাজানোর মসৃণ কাফনগুলো। তার সাথে কাঁচা কাঠের কফিনগুলো না থাকলে মনে হয়ে দোকানটি বেমানান।
আচ্ছা একটি প্রশ্ন, মৃতের শরীরে গোলাপ জল ছেটানো হয় কেন! সেই গোলাপের সুগন্ধ কি মৃতের নাক অব্দি পৌছায়? তার তো নাকে তুলো গুঁজে রাখা হয়। নাকি গোলাপ জল তার শেষ বিদায়ের একটি অংশ মাত্র!
চা পাতার কি কাজ! মনে হয় সদ্য বেরিয়ে যাওয়া আত্মা ছাড়া নিথর দেহ সতেজ রাখতে, যেনো জীবনের ফেলে যাওয়া চিহ্নের দুর্গন্ধ না ছড়িয়ে পড়ে?
দোকানের চৌকিতে বসা সাদা জুব্বা গায়ে বয়স্ক ভদ্রলোক,তার চোখ দেখে মনে হলো সে যেনো কার অপেক্ষায়। তৎক্ষনাত বুঝতে না পারলেও শেষে আর বাকি রইলো না, সে তো কোনো শেষ সংবাদ নিয়ে ছুটে আসা ব্যক্তির খোঁজে। কিছুক্ষন লক্ষ্য করে দেখলাম অচেনা এক ব্যক্তির আগমনে দোকানির ঠোঁটের কোনে অদৃশ্য হাসি ফুটে উঠলো। বোধহয় ঐ লোক কারো জন্য শেষ কেনাকাটা করতে এসেছে।
যাই হোক, কফিনগুলো কি কাজে লাগে! আচ্ছা বেওয়ারিশদের দাফন কিভাবে হয়?বেওয়ারিশদের শেষ সম্বল বোধহয় একটুকরো কাফন আর এই কফিন হয়। তাদের শরীরেও কি সুগন্ধি আতর আর গোলাপ জল ছেটানো হয়?নাকি কোনো মতো বিদায় জানানো পালা। বেওয়ারিশদের আত্মা কি তার মৃত্যুতে শান্তি পায়, শেষ বেলায় আপনজন ছাড়া পরপারে পাড়ি জমানোর যাত্রায় ?
এই উত্তর হয়তো সবার অজানা। জানা থাকবেই বা কিভাবে! মৃত্যু এমন এক স্বাদ যা নেয়ার পর তার বর্ননা দেবার সাধ্য অপূর্ণই থেকে যাবে।