জমিলার কোলের উপর জিনিসগুলো রেখে লিপিকা বেগম উঠে চলে আসেন। পায়ের আওয়াজে আওয়াজে মনের ভেতর কষ্ট বাজে। তবু পরম তৃপ্তি নিয়ে শয়ন কক্ষের দিকে পা বাড়ান তিনি। এই ভেবে সুখে ভাসছেন যে, নিজের জীবনের উল্টোপিঠে স্বামীর জন্য একটা খসড়া জীবন বিছিয়ে দিয়েছেন। এখন তিনি ইচ্ছে মতো খসড়া লিখে যাবেন। ...মনের পুঞ্জীভূত দুঃখ-কষ্টকে চাপা দিলেন শাড়ি পাল্টানোর মধ্যে সময় কাটিয়ে। স্বামীর এই মাথা ব্যথার আহ্বানে সাড়া দেয়ার ইচ্ছে থাকলেও তাঁর সামর্থ্য নেই। কষ্টের আগুন বুকের ভেতর দাউ দাউ করে জ্বলছে। কিন্তু উপায় নেই। কৌশিককে তৈরি করে নিয়ে বাইরে বেরোলেন। কিছু কেনাকাটা করবেন বলে। বের হওয়ার সময় প্রশ্নবোধক দৃষ্টি রেখে জিজ্ঞাসা করেছিলন- তোমার জন্য কিছু আনতে হবে?...কেনাকাটা শেষ করে সন্ধ্যা পেরিয়ে সাড়ে নয়টা নাগাদ লিপিকা বেগম যখন বাসায় ফিরলেন, মিন্নাত আলী তখন মাথা ব্যথার শেষ প্রান্ত পেরিয়ে নাক ডেকে ঘুমুচ্ছেন।
জমিলার ওপর চোখ পড়তেই লিপিকা বেগমের বুকটা পাথর ভাঙা শব্দে আচমকা দুলে ওঠল। নিজেকে সামলে কোনরকমে বললেন- জমিলা আমাকে বরফ মিশিয়ে একটু ঠাণ্ডা পানি দে।
কোনরকম সাড়া শব্দ না পেয়ে লিপিকা বেগম খুঁজতে খুঁজতে রান্না ঘরের দরজায় এসে দাঁড়ালেন। রান্না ঘরের এক কোণে হাঁটু মুড়ে বসে চুপচাপ কেঁদে চলেছে জমিলা। লিপিকা বেগম সবই বুঝেন। ঘরের ভেতর এসে জমিলাকে কাছে টেনে নিয়ে আদর করতে করতে বলেন- কাঁদিস কেন?