ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক সালমান রুশদি জার্মান বুক ট্রেডের মর্যাদাপূর্ণ শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। ২২ অক্টোবর জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টের সেন্ট পলস চার্চে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে এই শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
৭৬ বছর বয়সী এই লেখক কয়েক দশকের হুমকি এবং সহিংসতা সহ্য করেও লেখা চালিয়ে যাওয়ার জন্য জার্মান বুক ট্রেড কর্তৃপক্ষ তাকে ২০২৩ সালের শান্তি পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করেছিল।
জার্মান সংবাদ সংস্থা ডিপিএ জানিয়েছে, ব্রিটিশ-আমেরিকান এই লেখক বর্তমান যুগকে এমন একটি সময় হিসাবে নিন্দা করেছেন যখন স্বৈরাচারী এবং জনতুষ্টিবাদী রাজনীতিসহ সকল পক্ষের দ্বারা মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর আক্রমণ চলছে।
জার্মান প্রাইজ জুরি বলেছেন, ‘আমরা সালমান রুশদিকে সম্মান জানাই তার অদম্য চেতনার জন্য, তার জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাবের জন্য এবং তার গল্প বলার মাধ্যমে আমাদের বিশ্বকে সমৃদ্ধ করার জন্য।'
২০২২ সালের আগস্টে নিউইয়র্কে একটি সাহিত্য উৎসবে মঞ্চে বক্তৃতা দেওয়ার সময় ছুরিকাঘাতের শিকার হন রুশদি। এই হামলার ফলে তার এক চোখ অন্ধ হয়ে যায়। তার লিভারের ক্ষতি হয় এবং তার বাহুর স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে একটি হাত অকার্যকর হয়ে যায়।
এদিকে তিনি এই হামলার ঘটনা নিয়ে একটি স্মৃতিকথা লেখার ঘোষণা দিয়েছেন। ‘নাইফ: মেডিটেশনস আফটার অ্যান অ্যাটেম্পটেড মার্ডার’ নামের বইটি ২০২৪ সালের ১৬ এপ্রিল প্রকাশিত হবে।
১৯৮৮ সালে লেখা ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’ বইয়ের জন্য রুশদি মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক সমালোচিত হন। এই বইয়ের মাধ্যমে ধর্ম অবমাননা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ১৯৮৯ সালে তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া দেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনি। ফলে তাকে ৯ বছর লুকিয়ে থাকতে হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালে জার্মান প্রকাশক ও বই বিক্রেতা সমিতি জার্মান শান্তি পুরস্কার চালু করে। এর আগে হেরমান হেস, অ্যাস্ট্রিড লিন্ডগ্রেন, ভ্যাক্লাভ হ্যাভেল এবং মার্গারেট অ্যাটউড এই পুরস্কার পেয়েছেন।
সূত্র: কিরকাস