শীতের এক সন্ধ্যা। ঢাকার এক ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ির হর্ণের শব্দ আর মানুষের কোলাহল। রাস্তার ধারে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান। দোকানের সামনে বেঞ্চিতে বসে আছেন বৃদ্ধ মিজানুর রহমান। মাথার চুল সাদা হয়ে গেছে, মুখে গভীর চিন্তার ছাপ।
এক যুবক তার পাশে এসে বসে। চা অর্ডার করে বৃদ্ধের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলেন। বৃদ্ধ তাকিয়ে বললেন, "ছেলে, তুমি কী চাও?"
যুবক উত্তর দিল, "চাচা, আপনার গল্প শুনতে ইচ্ছে করছে।"
বৃদ্ধ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, "আমার গল্প? শুন, অনেক বছর আগে আমি একজন স্কুল শিক্ষক ছিলাম। প্রতিদিন বাচ্চাদের পড়াতাম, তাদের স্বপ্ন দেখাতাম। কিন্তু জীবন আমাকে অন্য পথে নিয়ে গেল। চাকরি হারালাম, সংসারের চাপ, সবকিছু মিলে পথ হারালাম।"
যুবক গভীর মনোযোগে শুনছে। বৃদ্ধ আবার বললেন, "কিন্তু তাতে কী? জীবন তো চলছেই। এখন আমি এই চায়ের দোকানে বসে মানুষের গল্প শুনি, নিজের গল্প বলি। প্রতিদিন নতুন কিছু শিখি।"
যুবক বলল, "চাচা, আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখলাম। জীবন যেমনই হোক, চলতে হবে।"
বৃদ্ধ মৃদু হাসলেন। যুবকের চা শেষ হয়ে গেছে। বৃদ্ধ তাকে বিদায় জানিয়ে বললেন, "যাও ছেলে, তোমার পথের দিকে তাকাও। নতুন কিছু শিখবে প্রতিদিন।"
যুবক উঠে দাঁড়িয়ে বলল, "ধন্যবাদ চাচা। আপনার গল্প আমার জন্য অনেক মূল্যবান।"
বৃদ্ধ মিজানুর রহমান একা বেঞ্চিতে বসে রইলেন। তার মুখে মৃদু হাসি। জীবনের গল্পগুলো এভাবেই বয়ে চলে, এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে।