পোস্টস

ফিকশন

The Last Rainbow

১০ জুন ২০২৪

শাহ আমান উল্লাহ

The Last Rainbow 

 

 প্রথম অধ্যায়: রহস্য ডাক 

 

কাঞ্চনপুরের একটি ছোট্ট গ্রাম। এখানে শান্তি ও সৌহার্দ্যের হাওয়া বয়ে যায়। প্রত্যেক দিনই একইভাবে শুরু হয় এবং শেষ হয়। কিন্তু একদিন গ্রামের প্রধান মন্দিরে এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। মন্দিরের পুরোহিত শ্রীধর ঠাকুর রাতের বেলা একটি রঙিন রশ্মি দেখতে পান। রশ্মিটি মন্দিরের শিখরে গিয়ে মিলিয়ে যায়।

পুরোহিত ভীত হয়ে গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিদের ডেকে পাঠান। প্রবীণরা এই ঘটনাটির রহস্যময়তার কথা শুনে চমকে উঠেন। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেন, গ্রামের পণ্ডিত ভবেশ চক্রবর্তীকে ডাকা হবে। ভবেশ বাবু ছিলেন জ্ঞানী ও বিজ্ঞ ব্যক্তি। তিনি অনেক প্রাচীন গ্রন্থ ও পুরাণের গল্প জানতেন।

 

দ্বিতীয় অধ্যায়: ভবেশ বাবুর অনুসন্ধান

 

ভবেশ বাবু ঘটনা শুনে মন্দিরে আসেন। তিনি মন্দিরের শিখরে গিয়ে রশ্মিটির উত্স খোঁজার চেষ্টা করেন। অনেক অনুসন্ধানের পর তিনি খুঁজে পান একটি পুরনো মূর্তি। মূর্তির নিচে একটি খোদাই করা মানচিত্র। ভবেশ বাবু মনে করেন, এই মানচিত্রটি নিশ্চয়ই কোনো গুপ্তধনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

তিনি মূর্তিটি সরিয়ে মানচিত্রটি হাতে নেন এবং গ্রামের লোকদের বলেন, “আমাদের এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ রহস্য লুকিয়ে আছে। এই মানচিত্রে একটি গুপ্তধনের সন্ধান দেওয়া হয়েছে।”

 

তৃতীয় অধ্যায়: গুপ্তধনের সন্ধান

 

ভবেশ বাবু ও গ্রামের কয়েকজন সাহসী যুবক মিলে মানচিত্র অনুসরণ করে। মানচিত্রটি অনুসরণ করতে করতে তারা পৌঁছে যান একটি পুরানো দুর্গে। দুর্গটি ছিল জঙ্গলের গভীরে। দুর্গের ভেতরে প্রবেশ করার পর তারা খুঁজে পান একটি বিশাল দরজা। দরজাটি ছিল শক্তপোক্ত ও ভারী।

তারা দরজাটি খোলার চেষ্টা করেন, কিন্তু কোনো উপায়ে খোলা যায় না। ভবেশ বাবু তাদের বলেন, “এটি একটি মায়াবী দরজা। এখানে প্রবেশ করতে হলে মন্ত্র উচ্চারণ করতে হবে।”

 

চতুর্থ অধ্যায়: মায়াবী মন্ত্র

 

ভবেশ বাবু একটি প্রাচীন গ্রন্থ থেকে মন্ত্র উচ্চারণ করেন। মন্ত্রটি ছিল এমন, “ওম হরি হরি রে, গুপ্তধনের দ্বার খোলো তুমি।”

মন্ত্র উচ্চারণ করার সাথে সাথে দরজাটি ধীরে ধীরে খুলে যায়। দরজার ভেতরে প্রবেশ করার পর তারা দেখতে পান এক বিশাল কক্ষ। কক্ষের মাঝে একটি সোনার মূর্তি। মূর্তির চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মূল্যবান রত্ন ও সোনা। তারা সবাই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যায়।

 

পঞ্চম অধ্যায়: শেষ রেইনবো

 

গুপ্তধনের সন্ধানে এসে তারা দেখতে পান একটি রঙিন রশ্মি। রশ্মিটি সোনার মূর্তি থেকে বের হচ্ছে। ভবেশ বাবু বলেন, “এটি শেষ রেইনবো। এই রেইনবো আমাদের গ্রামকে সমৃদ্ধি দেবে।”

গ্রামের লোকেরা আনন্দে উদ্বেলিত হয়। সবাই মিলে গুপ্তধনের সোনার মূর্তি ও রত্নগুলো গ্রামে নিয়ে আসে। গ্রামে ফিরে এসে সবাই মিলে মহোৎসব করে। তাদের গ্রামের নাম হয় “রেইনবো গ্রাম”।

গ্রামটি ধীরে ধীরে সমৃদ্ধ হতে থাকে। রেইনবো গ্রাম হয়ে ওঠে দেশের অন্যতম সুন্দর ও সমৃদ্ধ গ্রাম। গ্রামের লোকেরা তাদের এই অভিযানের গল্প সবাইকে বলে এবং প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই রহস্যময় গুপ্তধনের গল্প ছড়িয়ে পড়ে।

 

শেষ অধ্যায়: রহস্যের উত্তর

 

কিন্তু ভবেশ বাবু জানতেন, এই গুপ্তধনের রহস্য এখনো পুরোপুরি উন্মোচন হয়নি। তিনি একদিন মন্দিরে এসে বলেন, “আমাদের এখনও অনেক কিছু শেখার আছে। এই রহস্যের প্রকৃত ইঙ্গিত আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।”

ভবেশ বাবুর কথায় সবাই নতুন উদ্দীপনা পায়। তারা আবারও মিলে মন্দিরের মূর্তির নিচে খোঁজ শুরু করে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তারা খুঁজে পায় আরেকটি মানচিত্র। এবার মানচিত্রটি তাদের নতুন অভিযানের পথে নিয়ে যায়।

রেইনবো গ্রামের লোকেরা এখন নতুন অভিযানে নামবে। তাদের পথের শেষে অপেক্ষা করছে আরও বড় রহস্য এবং আরও বড় সমৃদ্ধি। রেইনবো গ্রামের গল্প এভাবেই ধীরে ধীরে ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে যায়।

---