পোস্টস

নিউজ

ইসরায়েলি বোমা হামলায় গাজার প্রধান পাবলিক লাইব্রেরি ধ্বংস

৬ ডিসেম্বর ২০২৩

নিউজ ফ্যাক্টরি

Featured Image
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার প্রধান পাবলিক লাইব্রেরি ইসরায়েলি বোমা হামলায় ধ্বংস হয়েছে। গাজা শহর কর্তৃপক্ষ এই ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে শহরের প্রধান পাবলিক লাইব্রেরিটি ধ্বংস করেছে। এছাড়া আরও বেশ কয়েকটি লাইব্রেরি এবং সাংস্কৃতিক কেন্দ্রও ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।  

প্রায় দুই মাস ধরে চলমান এই যুদ্ধে গাজা মিউনিসিপ্যাল ​​লাইব্রেরি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি রাশাদ আল শাওয়া সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটিও ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ২৫ বছর আগে এই কেন্দ্রে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন এবং ইয়াসির আরাফাতের মধ্যে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। এই কেন্দ্রেও একটি ছোট লাইব্রেরি ছিল।        

গাজা শহর কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বিমানগুলো পাবলিক লাইব্রেরি ভবনকে লক্ষ্যবস্তু করে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। লাইব্রেরির হাজার হাজার বই এবং ঐতিহাসিক  নথিপত্রও ধ্বংস করেছে। সেইসাথে লাইব্রেরির ভাষা শিক্ষার হল এবং অন্যান্য সুবিধাগুলোও ধ্বংস করেছে।      

কর্তৃপক্ষ এই হামলাকে ফিলিস্তিনিদের ইতিহাসকে মুছে ফেলার একটি প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেছে। পৌরসভা কর্তৃপক্ষের তোলা ছবিগুলোতে দেখা গেছে মূল লাইব্রেরি ভবনটি ভিতর থেকে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। ধ্বংসাবশেষ এবং ধুলোয় ঢাকা মেঝেতে বই ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, তবে কয়েকটি তাক অক্ষত রয়েছে।

গাজা মিউনিসিপ্যাল লাইব্রেরি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহৃত হত। এখানে শিশুদের জন্য একটি লাইব্রেরিও ছিল। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর প্রতি এই হামলার নিন্দা জানানোর আহ্বান জানিয়েছে। 

গাজা পৌরসভার ওয়েবসাইট অনুসারে, মিউনিসিপ্যাল লাইব্রেরিটি ১৯৯৯ সালে ফরাসি শহর ডানকার্কের সঙ্গে একটি যৌথ চুক্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বিশ্বব্যাংক এতে অর্থায়ন করেছিল। দোতলা এই ভবনটিতে আরবি, ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষায় ১০ হাজারের বেশি বই ছিল।

মানবাধিকার এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবিষয়ক সংস্থাগুলো জানিয়েছে, গাজার জাদুঘর, প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যবাহী স্থান এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলো ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়েছে।   

এদিকে গাজাভিত্তিক কবি এবং মার্কিন ম্যাগাজিন নিউ ইয়র্কার এর কন্ট্রিবিউটর মোসাব আবু তোহা ২০২০ সালে জানিয়েছিলেন, ২০১০ সালে ফিলিস্তিনের কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর করা এক জরিপ অনুযায়ী গাজা উপত্যকায় ১৩টি পাবলিক লাইব্রেরি রয়েছে। তোহা ২০১৭ সালে গাজায় প্রথম ইংরেজি ভাষার বইয়ের লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ফিলিস্তিনি সাহিত্য সমালোচক এবং যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক প্রয়াত এডওয়ার্ড সাঈদের সম্মানে এই লাইব্রেরিটির নামকরণ করা  হয়েছিল।     

এডওয়ার্ড সাঈদ লাইব্রেরিতে পুলিৎজার প্রাইজ বিজয়ী মার্কিন উপন্যাসিক ভিয়েত থান নগুয়েন বেশ কিছু বই দান করেছিলেন। তবে এই লাইব্রেরির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে এখ্নও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

সূত্র: দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট, লিটহাব