পোস্টস

চিন্তা

রিলেশনশীপ বিষয়ক ভাবনা

১০ জুন ২০২৪

জিসান আকরাম

মূল লেখক জিসান আকরাম

মানুষের রোমান্টিক রিলেশনশীপ নিয়ে কিভাবে চিন্তা করা উচিৎ?
কিভাবে এগুলো ঠিকঠাক ভাবে ডিল করা যায়?
প্যারা কম নেয়া যায়।

-

রিলেশনপশীপ অউন করা উচিত। এইটা খালি রোমান্টিক রিলেশনের জন্য না, যেকোন রিলেশনের জন্য। রিলেশনের দরকার কেন? এই যে মা বাপের, ভাই বইনের লগে, বন্ধুদের লগে বা রোমান্টিক পার্টনারের লগে। এইসব মূলত ব্যক্তির নিজের জন্যই দরকার হয়। মানে, আপনার প্রয়োজনেই আপনে ঐটাতে আছেন।

 

 অউন করার মানে হইল এর ঔনারশিপ নিয়া, রিলেশনরে নিজের কোম্পানি বা মালিকানার বস্তু হিশাবে দেখা। সেইক্ষেত্রে, যখন ব্যক্তি এই রিলেশনশিপের জন্য কাজ করবেন, তার মনে হবে না যে তিনি অন্য ব্যক্তিটার জন্য কাজ করছেন, স্যাক্রিফাইস করছেন।

 

তার পরে, অন্য সম্পর্কদের চাইতে রোমান্টিক সম্পর্কের জটিলতা থাকে স্বাভাবিক ভাবেই বেশী। কারণ এই সম্পর্কে মানুষেরা সাধারণত নিজেদের মুখোশ খুলে পরস্পরের সাথে থাকেন। এইক্ষেত্রে তাই যত বেশি এম্প্যাথী থাকবে, ততো ভালো। অর্থাৎ অন্য পক্ষরে তার দিক থেকে বুঝার চেষ্টা।

ইগোর দ্বন্দ্বগুলা নিয়া সচেতন থাকা।

      এইসব সম্পর্কের বেশিরভাগ দ্বন্দ্বই মূলত ইগোর ক্ল্যাশ।

দুইজন ব্যক্তি যদি এইটা ধরতে পারেন, যে কেন তাদের ক্ল্যাশগুলা হইতেছে, এবং 
তারা আন্ডারস্ট্যান্ডিং থাকেন, পরস্পরের প্রতি এম্প্যাথি রাখেন, তাহলে এইসব ক্ল্যাশগুলা ডিল করতে করতে তারা মিচুয়াল মনস্তাত্ত্বিক ডেভলাপমেন্টের ভেতর দিয়া যান, ও পরস্পররে পূর্ণ করেন। 

 

বিখ্যাত রকি ফিল্মে, অখ্যাত ও আনলাকি বক্সার রকির সাথে আদ্রিয়ানের যখন প্রেম হয়, তখন আদ্রিয়ানের ভাই রকিরে জিজ্ঞেস করছিল, আমার বইন তো উইয়ার্ড, তোমাদের প্রেম হইল কেমনে? রকি বলেন, আমরা পরস্পরের গ্যাপ ফীল করি।

 

এইটা স্পোর্টস ফিল্মের মত করে বানানো রোমান্টিক ফিল্ম। এই কনসেপ্টই দেখানো হইছে যে, রকিরে আদ্রিয়ান পূর্ণ করে, আর আদ্রিয়ানরে রকি, প্রথমদিকে আদ্রিয়ানরে যেইরকম উইয়ার্ড হিশাবে উপস্থাপন করা হইছে, পরবর্তীতে ওইভাবে রাখা হয় নাই, তারে ফ্লারিশ করা হইছে, যেইভাবে রকি তার বক্সিং এ আগাইয়া গেছে।

   

     এইটার এক ক্রিটিক করতে পারেন কেউ যে, পিতৃতান্ত্রিক স্টেরিওটাইপ অনুযায়ীই দেখানো হইছে। যেহেতু বাজেট কম, আর এন্টারটেইনিং ফিল্ম হিশাবে বানানো, তাই এগুলা এক্সপ্লোর করে নাই, জাস্ট টাচ দিয়া গেছে।

বা যেকোন রোমান্টিক ফিল্মে দেখবেন, একেবারে সাধারণ বাংলা সিনেমাতেও, নায়ক নায়িকার প্রেমে বাঁধা দেখবেন। হয় নায়িকার বাপ বা নায়কের বাপ বা এইরকম কিছু। তাদের স্ট্রাগল করতে হয়। এই স্ট্রাগলের গল্পই লোকে দেখেন। এইসব প্রেমের গল্পে যেই স্ট্রাগল দেখানো হয়, প্রত্যেক রোমান্টিক কাপল এইটা ফেইস করবেন, যেইখানে ভিলেন, তাদের নিজস্ব ইগো, ডেজায়ার, এইসব। সম্ভবত, কোন ভাবে তারা রোমান্টিক এইসব সিনেমার গল্পের সাথে নিজেদের মিলটা অনুভব করতে পারেন না বুঝলেও, তাই দেখতে থাকেন।

 

প্রেম মানে তাই, অন্যতে বিলীন হবার বাসনা, স্পিরিচুয়াল দিক থেকে, যেহেতু এই প্রেমনির্ভর ধর্মই বাংলার মাটি থেকে জন্ম নেয়া, তাই এই প্রসঙ্গও আসে। এখন বিলীন হইতে লাগে কী? হাছন রাজা বলেন, আমার আমিত্ব ছাড়িয়া দিয়া যাতে হইছি লয়। অর্থাৎ, নিজের আমিত্বরে, ইগোরে না ছাড়তে পারলে কেউ পূর্নভাবে প্রেমিক হইতে পারে না।

 

 

আধ্যাত্মিক স্তর থেকে বাস্তব স্তরে নামি। বাস্তবের রোমান্টিক কাপলের প্রেম ঐ বৈষ্ণব ভগবান প্রেমের মত না যদিও, কিন্তু এরই ভগ্নাংশ অনুসরণ করে। যেহেতু এইটা প্রেমই। ফলে এইখানেও স্থানে স্থানে ইগোর কবল থেকে নিজেরে ছাড়াইয়া ছাড়াইয়া ভাবতে হয়।