রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটির কয়েকটি শব্দ পরিবর্তন করে গাওয়ার কারণে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ৫ ডিসেম্বর নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছিল ২৯তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। এই উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজ্য সঙ্গীত হিসেবে এই গানটি গাওয়া হয়। তবে কালজয়ী এই গানের কয়েকটি শব্দ পরিবর্তন করা হয়েছিল। এর ফলে রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে কবির সুমনের মত জনপ্রিয় গায়কও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বদেশ পর্বের একটি গান। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এই গানটি লিখেছিলেন তিনি। এই গানটিকে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সঙ্গীত হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।
গত আগস্ট মাসে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এই গানটির কয়েকটি শব্দ পরিবর্তন করে এটিকে রাজ্য সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এই গানের ‘বাঙালির পণ, বাঙালির আশা’ লাইনটি পরিবর্তন করে ‘বাংলার পণ, বাংলার আশা’ করা যায় কিনা, সেটা জানতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে অনেকেই আপত্তি জানানোয় এই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়। গানটির শব্দে কোনো পরিবর্তন না করেই এটিকে রাজ্য সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচিত করার কথা জানিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
তবে ৫ ডিসেম্বর কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী মঞ্চে পরিবর্তিত শব্দে এই গান গাওয়া হলে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বিধানসভায় রাজ্য সংগীত সংক্রান্ত বিল পাশ হওয়ার পরেও কীভাবে শব্দ বদল করে রবীন্দ্রসঙ্গীতটি রাজ্য সঙ্গীত হিসেবে গাওয়া হল, তা নিয়ে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
তবে ৫ ডিসেম্বর কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী মঞ্চে পরিবর্তিত শব্দে এই গান গাওয়া হলে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বিধানসভায় রাজ্য সংগীত সংক্রান্ত বিল পাশ হওয়ার পরেও কীভাবে শব্দ বদল করে রবীন্দ্রসঙ্গীতটি রাজ্য সঙ্গীত হিসেবে গাওয়া হল, তা নিয়ে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
ফেসবুকে কবির সুমন লিখেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বলা উচিত তারা ভুল কাজ করেছে। এমন কাজ আর হবে না। কারুর রচনাই অন্য কেউ পাল্টে দিতে পারে না। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচিত প্রকাশ্যে বলা, রবীন্দ্রনাথের একটি গানের কথা পাল্টে শিল্পীদের দিয়ে পরিবেশন করিয়ে তাঁরা অনুচিত কাজ করেছেন। এ কাজ আর কখনও করবেন না তাঁরা।'
এদিকে রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য পবিত্র সরকার বলেছেন, ‘এটা অপকর্ম। যারাই ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে, তাদের আমি তীব্র ধিক্কার জানাই। ইতিহাস নিয়ে আমি মাথা ঘামাচ্ছি না। এই গানে রবীন্দ্রনাথ কথা লিখেছেন, সুর দিয়েছেন। এটা বদল করা যায় না।‘
সূত্র: ডি ডাব্লিউ, আজতক বাংলা