বিশ্বজুড়ে ৫০০ জনের বেশি শিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা, লেখক এবং সংস্কৃতি কর্মীরা ফিলিস্তিন ইস্যুতে জার্মানির কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রীয় অনুদানপ্রাপ্ত জার্মান সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো বয়কটের ডাক দিয়েছেন। এদের মধ্যে নোবেলজয়ী ফরাসি লেখক অ্যানি এরনো এবং ফিলিস্তিনি কবি ও অ্যাকটিভিস্ট মোহাম্মদ আল কুর্দও রয়েছেন।
‘স্ট্রাইক জার্মানি’ নামের একটি পিটিশনে এরনোসহ ৫০০ জনেরও বেশি লেখক, শিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং সংস্কৃতি কর্মীরা স্বাক্ষর করেছেন। এই বয়কটের উদ্দেশ্য হল ফিলিস্তিনপন্থী অ্যাক্টিভিস্টদের বিরুদ্ধে জার্মানির স্বৈরাচারী দমন-পীড়ন, সেইসাথে গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস হামলার প্রতি দেশটির সমর্থনের বিষয়ে সাংস্কৃতিক জগতের সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা।
গত সপ্তাহে এই প্রচারণা শুরু হয়েছে। লেখক এবং সংস্কৃতি কর্মীদের অভিযোগ, ফিলিস্তিনের প্রতি যারা সমর্থন প্রকাশ করে তাদের বিরুদ্ধে জার্মানি ম্যাককার্থিস্ট পলিসি গ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করা হচ্ছে।
স্ট্রাইক জার্মানির প্রচারণার মাধ্যমে লেখক, সংস্কৃতি কর্মীরা জার্মান সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে দুটি দাবি জানিয়েছেন। এগুলো হল, শৈল্পিক স্বাধীনতার সুরক্ষা এবং কাঠামোগত বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা।
এদিকে জার্মানির বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনপন্থী অ্যাক্টিভিজমকে দমন করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ধরনের অ্যাক্টিভিজমকে ইহুদিবিরোধী বলে অভিহিত করেছে জার্মান সরকার।
স্ট্রাইক জার্মানির সঙ্গে যুক্ত লেখক এবং সংস্কৃতি কর্মীরা বলেছেন, জার্মানিতে সাংস্কৃতিক কর্মীদের ফিলিস্তিন নাকি ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন রয়েছে তা পরীক্ষা করে দেখা হয়।
ফিলিস্তিনি কবি মোহাম্মদ আল কুর্দ, আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘যখন জার্মান সমর্থিত ইসরায়েলি সেনাবাহিনী নজিরবিহীনভাবে ফিলিস্তিনি জনগণকে হত্যা করছে, তখন জার্মান সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সর্বাত্মকবাদী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে। তবে আশার কথা হল, ভাল লোকেরা ফিলিস্তিনবিরোধী বর্ণবাদকে দৃঢ়ভাবে এবং প্রকাশ্যে প্রত্যাখ্যান করে। তারা সেই সংস্থাগুলোকেও বয়কট করে যারা এ ধরনের বর্ণবাদ ছড়াতে সাহায্য করে।'
তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘যারা বর্তমানে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর চালানো ইসরায়েলি গণহত্যাকে অস্বীকার করে এবং ন্যায্যতা দেয় তাদের সঙ্গে কোনো সহযোগিতা করা যাবে না। এটা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।'
নোবেলজয়ী ফরাসি লেখক অ্যানি এরনো দীর্ঘদিন ধরেই বিডিএস আন্দোলনকে সমর্থন করে যাচ্ছেন। এই আন্দোলনের মাধ্যমে ইসরায়েলকে বয়কটের আহ্বান জানানো হয়। এখন তিনি গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যার নিন্দা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, অ্যানি এরনো ২০২২ সালে সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ পান। তিনিই প্রথম ফরাসি নারী লেখক যিনি মর্যাদাবান এই সাহিত্য পুরস্কারটি জয় করেন।
সূত্র: লিটহাব