ফ্রান্সের আরলেস শহর। ১৮৮৮ সালের ডিসেম্বর মাসের এক শীতের রাত। পল গঁগ্যা ওভার কোট গায়ে হেঁটে চলেছেন সরাইখানার উদ্দেশ্যে। রাস্তাঘাট বড় নির্জন, জনমানব শুন্য। দূরে কোথাও বিলাপ করে কাঁদছে কোন কুকুর। হঠাৎ করে গঁগ্যা পেছনে শুনতে পেলেন কারো দৌড়ে আসার পদশব্দ। তিনি কিছুটা ভীত হলেও আতঙ্কিত বোধ করলেন না। কিছুটা দ্রুতপায়ে হেঁটে ল্যাম্পপোস্টের নীচে এসে দাঁড়িয়ে পেছনে ফিরলেন তিনি। পায়ের শব্দ এখন অনেকখানি কাছে। আরেকটু কাছে এলেই গঁগ্যা দেখতে পাবেন লোকটিকে। কয়েক মুহূর্ত পরেই দেখা গেল মুখটা। মুখটা দেখেই একটা শীতল স্রোত বয়ে গেল গঁগ্যার শিরদাঁড়া বেয়ে। লোকটার হাতে ছুড়ির মত করে ধরা একটি রেজর, ল্যাম্পপোস্টের আলোয় চকচক করছে রেজরের ব্লেড। টালমাটাল পায়ে রেজর হাতে লোকটি তেড়ে আসছে গঁগ্যার দিকে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আঘাত হানলো লোকটা। ক্ষনিকের বিহ্বলতায় কি করবে বুঝে উঠতে পারছিলেন না গঁগ্যা কিন্তু আঘাতটা ঠিক সামলে নিলেন তিনি। লোকটি বরং আঘাত করতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পরলো রাস্তার ওপরে। মাতাল পায়ে আর উঠে দাঁড়াতে পারলো না আগন্তুক। গঁগ্যা আর দেরী করলেন না। দ্রুতপায়ে সরে এলেন তিনি ওখান থেকে, এখুনি ছাড়তে হবে এই শহর।
রাত আরও গভীর হলে আগন্তুককে আবিষ্কার করা গেল এক বেশ্যালয়ে। তার কান কেটে নিয়েছে কেউ অথবা নিজেই কেটে ফেলেছে সে। সেখান থেকে ঝরছে রক্ত । রিচেল নামের এক বেশ্যাকে তিনি তার কাটা কান নিবেদন করছেন। আর বার বার বলছেন- দেখো- এটা তোমাকে দিলাম, তোমার কাছে রেখো, যত্নে রেখো, অনেক যত্নে। বলতে বলতে জ্ঞান হারালো আগন্তুক। টলে পড়লো রিচেল এর বাহুতে।
এই আগন্তুক আর কেউ নন। বিখ্যাত পেইন্টার ভিনসেন্ট ভ্যান গগ। আজন্ম এক দুঃখগাথার জন্ম দিয়ে গেছেন যিনি। জন্ম যার নেদারল্যান্ডস এ ১৮৫৩ সালের ৩০ শে মার্চ এ। মৃত্যু শয্যায় যিনি তার ভাই থিওকে বলেছিলেন- “দুঃখরা চিরস্থায়ী”।
বেশ্যাকে কান নিবেদন করার গল্প ছড়িয়ে পরতে সময় নেয়নি। ভিনসেন্ট ভ্যান গগকে পরদিন পুলিশ আবিষ্কার করে তার রুমে। তিনি তখন আঁকছেন তার বিখ্যাত পেইন্টিং - সেলফ পোট্রেট উইথ ব্যান্ডেজড ইয়ার। তাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ সংবাদ পেয়ে তার ছোট ভাই থিও ছুটে আসেন তাকে দেখতে। থিও বেশ কিছুদিন ধরেই চিন্তিত ছিলেন ভাই এর মানসিক অবস্থা নিয়ে। তাই থিওই পল গঁগ্যাকে মাসখানেক আগে রাজি করিয়েছিলেন ভ্যান গগের সাথে সময় কাটানোর জন্যে। পল গঁগ্যাও ছবি আঁকতেন। থিও ভেবেছিলেন, ভ্যান গগের সাথে মিলে ছবি আঁকলে, দুজনের মধ্যে শৈল্পিক আদান প্রদানের মাধ্যমে ভাই এর মানসিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়ত হবে। ভ্যান গগকে এটা জানানো মাত্র তিনি খুশী হয়েছিলেন। অপেক্ষা করছিলেন পল গঁগ্যার জন্যে। তারা দুজনে একসাথে কাজ করা শুরু করেন। একসাথে আউট ডোরে গিয়ে কাজ করতে থাকেন। একই রুমে পাশাপাশি দুটো বেডে থাকতে থাকেন দুইজনে। আরও নতুন পেইন্টার দের সাথে দেখা করেন তাঁরা। কিন্তু দিনে দিনে তাঁদের সম্পর্কের অবনতি হয়। ভ্যান গগ নিজেকে পল গঁগ্যার সমকক্ষ ভাবতেন কিন্তু পল গঁগ্যা ছিলেন দাম্ভিক আর নিজেকে অনেক উঁচু মাপের পেইন্টার ভাবতেন তিনি। এতে করে ভ্যান গগ আরও বেশী হতাশায় ডুবতে থাকেন। দুজনের মধ্যে ঝগড়া বাড়তেই থাকে। শেষমেষ এই রেজর নিয়ে ধাওয়া করার ঘটনার পর দুজনের সম্পর্ক আর সামনে এগোয়নি। অ্যসাইলামে দিন কাটতে থাকে ভ্যান গগের।
ভিনসেন্ট ভ্যান গগ এর জন্ম হয়েছিলো উচ্চ মধ্যবিত্ত এক পরিবারে। বাবা ছিলেন ধর্মযাজক। কঠোর শাসনের মধ্যে তিনি পার করেছেন নিজের শৈশব। তাঁর ১৫ বছর বয়সে পারিবারিক দুরাবস্থায় তিনি বাধ্য হন লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে কাজে নেমে পড়তে। তিনি কাজ শুরু করেন তাঁর আঙ্কেল সেন্ট এর আর্ট ডিলার প্রতিষ্ঠান গৌপিল এন্ড সি আই ই তে। ১৮৭৩ সালে তাকে লন্ডনে বদলি করা হয়। সেখানে তিনি ইংলিশ কালচার এর প্রেমে পরে যান। চার্লস ডিকেন্স আর জর্জ ইলিয়টের লেখা পছন্দ হয়ে যায় তাঁর।
এই সময়েই তিনি প্রেমে পরেন তাঁর বাড়িওয়ালার মেয়ে ইউজিন লয়ার এর। কিন্তু লয়ার ব্যাস্ত ছিলেন প্লোম্যান নামক আরেক ভাড়াটিয়ার প্রেমে। প্রত্যাখ্যাত হন ভ্যান গগ। প্রত্যাখ্যাত হয়ে তিনি নিজের সব বই তিনি ছুঁড়ে ফেলে দেন। বাইবেলে আসক্ত হয়ে পরেন তিনি। পুরো পৃথিবী অর্থহীন মনে হয় তাঁর কাছে। কর্মস্থলে ক্লায়েন্ট দের সাথে দুর্ব্যবহার করতে থাকেন তিনি। যার ফলে চাকরি চলে যায় তাঁর।
জীবনের প্রতি সকল আসক্তি হারিয়ে তিনি ধর্মযাজক হতে মনস্থির করে ফেলেন। ধর্মতত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন তিনি। কিন্তু পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি। এরপর বেলজিয়াম এর কয়লা খনি তে তিনি শ্রমিকদের মধ্যে ধর্ম প্রচার করতে যান। সেখানে দুস্থ দের মাঝে ধর্ম প্রচারের পাশাপাশি তিনি খনি শ্রমিক দের ছবিও আঁকতে থাকেন। কিন্তু ধর্ম যাজকদের কমিটির কাছে তাঁর এই নিবেদন যথেষ্ট মনে হয় নি। তাকে বাধ্য করা হয় অন্য কোন পেশা বেছে নিতে। অতঃপর, ১৮৮০ সালে তিনি ব্রাসেলস এ গিয়ে পেইন্টার হতে মনস্থির করেন। তাঁর ভাই থিও তাকে অর্থ দিয়ে সাহায্য করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁর কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকার দরুন তিনি ভিজুয়াল আর্ট সম্পর্কীয় বই পরে ধারনা নিতে থাকেন। সাথে শিল্পচর্চা চালিয়ে যান।
ভ্যান গগ প্রেমে পড়েছেন বারবার। কিন্তু প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন সবখান থেকেই। কি স্ট্রিকার নামে তাঁর সদ্য বিধবা এক দূর সম্পর্কের বোনের প্রেমে পড়েন তিনি। কিন্তু কি স্ট্রিকার তাকে ফিরিয়ে দেন। ১৮৮২ সালে তাঁর সাথে রাস্তায় পরিচয় হয় ক্লাসিনা মারিয়া হুরনিক এর। যিনি ছিলেন মদ্যপ এক বেশ্যা এবং অন্ত:সত্ত্বা। হুরনিক কে তিনি তাঁর মডেল করে নেন। প্রেমে পড়েন হুরনিক এর। তাঁরা দুজনে বছর দেড়েক একসাথে কাটান। এদিকে ভ্যন গগের পরিবার থেকে হুরনিকের ব্যাপারে প্রবল আপত্তি আসে। শুধু বেশ্যা বলে নয়, হুরনিক ছিলেন একজন ক্যাথলিক ও। যেটা পরিবার মেনে নিতে পারেনি। ওদিকে ভালো রোজগারের জন্যে হুরনিকের মা তাকে বেশ্যাবৃত্তিতে ফিরতে চাপ দিচ্ছিলেন। সব মিলিয়ে এই সম্পর্কটাও টেকাতে পারেননি ভ্যান গগ।
১৮৮৫ সালে তিনি তাঁর প্রথম মাস্টারপিস পটেটো ইটার্স আঁকেন। কিন্তু ছোটভাই থিও ভাবছিলেন অন্য কথা। থিও তখন ফ্রান্সে থাকতেন। তখন চলছিল ইম্প্রেশনিজমের প্রবল জোয়ার। থিও ভাবেন ইম্প্রেশনিজমের এই প্রবল জোয়ারের মধ্যে ভ্যন গগের শিল্পকর্ম চলবে না।
এদিকে ১৮৮৬ সালে ভ্যান গগ ফ্রান্সে চলে আসেন থিওকে কিছু না জানিয়ে। থিও তাঁর ছোট এপার্টমেন্টে ভাইকে জায়গা দেন। সেখানেই প্রথম ভ্যান গগ ইম্প্রেশনিস্ট আর্ট এর সাথে পরিচিত হন। ইম্প্রেশনিস্ট আর্ট এর লাইট আর কালার তাঁর মনে দাগ কাটে। তিনি কয়েকজন আর্টিস্ট এর সাথে শিল্প চর্চা শুরু করেন। সেখানে তাঁরা খরচ বাঁচাতে পেইন্টিং এর মডেল ভাড়া করার বদলে নিজেরাই নিজেদের মডেল হওয়া শুরু করেন। সেখানে তাঁর সমসাময়িক পেইন্টার দের সাথে তর্ক হত।
১৮৮৬ সালে তাঁর সাথে পরিচয় হয় অগাস্টিনার। যিনি ফ্রান্সে লা টাম্বুরিন নামে একটি রেস্তোরাঁ চালাতেন । ব্যক্তিগত ভাবে তিনি এডওয়ার্ড মনের মত বহু বিখ্যাত পেইন্টার এর মডেল হিসেবে কাজ করেছেন। অগাস্টিনার সাথে ভ্যান গগের প্রেম ছিলো কিনা তা একটা তর্ক সাপেক্ষ ব্যপার। তবে পল গঁগ্যা দাবী করেছিলেন অগাস্টিনার প্রতি অত্যন্ত দূর্বল ছিলেন ভ্যান গগ। ভ্যান গগ এর পেইন্টার বন্ধু এমিল বার্নার্ড দাবী করেন অগাস্টিনা ভ্যানগগকে খাবার দেয়ার বদলে পেইন্টিংস হাতিয়ে নিতো। যদিও ভ্যান গগ তাঁর প্রথম পেইন্টিং প্রদর্শনী ক্যাফে টাম্বুরিনেই করেছিলেন।
১৮৮৮ সালে ফ্রান্স এর দক্ষিনের শহর আরলেস এ নিজেই একটি ঘর ভাড়া নিয়ে উঠে পরেন তিনি। ভাবেন তাতে ভাই থিও’র ওপর কিছুটা চাপ কমবে। সেখানেই পল গঁগ্যা তার সাথে থাকতে আসেন।
১৮৮৯ সালে সেইন্ট রেমির এসাইলামে থাকাকালীন তিনি তাঁর বিখ্যাত পেইন্টিংস গুলো করেছিলেন। একটি স্ট্যারি নাইটস, অপরটি আইরিসেস। এসাইলাম এর বাগানে বসে তিনি আইরিসেস আঁকেন। স্ট্যারি নাইটস এর ব্যাপারে তিনি এক চিঠিতে তাঁর ভাই থিওকে লিখেছিলেন, “ভোর রাতে আমার জানালা দিয়ে বাইরে গ্রাম দেখছিলাম। ভোর হতে তখনো অনেকটা সময় বাকী, সকালের এই তারা গুলোকে আমার বিশাল মনে হচ্ছে।” ধারনা করা হয় এই ভাবনা থেকেই তিনি স্ট্যারি নাইটস এর কাজে হাত দেন।
এসাইলামে থাকাকালীন সময়ে ব্রাসেলস থেকে একটি প্রদর্শনীতে ছবি দেয়ার আহবান পান তিনি। শিল্পী এসাইলাম থেকেই আইরিসেস, স্ট্যারি নাইটস সহ ছয়টি ছবি পাঠান।
১৮৯০ সালের জানুয়ারীর ৩১ তারিখে থিও ও তাঁর স্ত্রী জোহানার একটি পুত্র সন্তান হয়। তারা ভিনসেন্ট ভ্যান গগের নামানুসারে তারা তাদের সন্তানের নাম দেন ভিনসেন্ট উইলিয়াম ভ্যান গগ। এই সময়েই
থিও ভ্যান গগের প্রথম পেইন্টিং “দ্যা রেড ভিনিয়ার্ড” বিক্রি করেন। এদিকে ডাঃ পল গ্যাসে নামক অভরস এর ডাক্তার ভ্যান গগের চিকিৎসা করতে রাজী হন। ভ্যান গগ ও এসাইলাম ছেড়ে অভরস এ একটি ছোট রুম ভাড়া নিয়ে উঠে পরেন।
মে মাসে থিও শিল্পীকে দেখতে আসেন। এসময়ে থিও নিজেও অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভুগছিলেন। তিনি শিল্পীকে হিসেব করে খরচ করতে বলেন। শিল্পী নিজেও দিন দিন তাঁর ভবিষৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। ১৮৯০ সালের জুলাই মাসের ২৭ তারিখে শিল্পী একটি ক্যানভাস আর একটি লোডেড পিস্তল নিয়ে ছবি আঁকতে বের হন। ওই দিনই শিল্পী নিজের বুকে নিজে গুলি চালান। কিন্তু তিনি মারা যাননি। গুলিটি হয়ত তাঁর শিরদাঁড়ায় আটকে ছিলো। ওই অবস্থাতেই তিনি তাঁর রুমে ফেরত আসেন। দুজন ডাক্তার তাকে চিকিৎসা দেন। কিন্তু গুলি বের করা যায়নি। ছোট ভাই থিও কে জানানো হয়। খবর পেয়ে তিনি হাসপাতালে এসে দেখেন শিল্পী হাসপাতালের বেডে বসে পাইপ ফুঁকছেন। শিল্পী তাকে তাঁর ঘরে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানেই দুই দিন পর ভাই এর কোলে মাথা রেখে মারা যান কালজয়ী শিল্পী ভিনসেন্ট ভ্যান গগ। অভরস সিমেট্রিতে ভ্যান গগকে দাফন করা হয়।
থিও নিজেও সিফিলিস রোগে ভুগছিলেন। অর্থনৈতিক সঙ্কট আর ভাইয়ের মৃত্যুর আঘাতেও বিপর্যস্ত ছিলেন। ভ্যান গগের মৃত্যুর কিছুদিনের মধ্যে তারও স্থান হয় নেদারল্যান্ডস এর একটি এসাইলামে। সেখানেই ভাই এর মৃত্যুর ঠিক ছয় মাসের মাথায় তার মৃত্যু হয়। তাকে সেখানেই দাফন করা হয়। কিন্তু তাঁর স্ত্রী জোহানা ১৯১৪ সালে থিওকে অভরস সিমেট্রিতে তাঁর ভাই ভ্যান গগ এর পাশে পুনরায় সমাহিত করেন।
থিওর স্ত্রী জোহানা যতটুকু পারেন ভ্যান গগের সকল শিল্প কর্ম সংগ্রহ করেছিলেন। ভ্যান গগের নিজের মা যেখানে অকর্মন্য ছেলের বাক্সভর্তি পেইন্টিংস আবর্জনার মত ফেলে দিয়েছিলেন। জোহানা সেসব সংগ্রহ করেন। ১৯০১ সালে ভ্যন গগের ৭১ টা পেইন্টিংস নিয়ে প্রদর্শনী হয় প্যারিসে। ভ্যান গগের জনপ্রিয়তা হুহু করে বাড়তে থাকে। ভ্যন গগের মা তাঁর জীবদ্দশায় ছেলের এই জনপ্রিয়তা দেখে যেতে পেরেছিলেন। যেই ছেলেকে অকেজো ভেবে দূরে ঠেলে দিয়েছিলেন তিনিই শেষ পর্যন্ত পরিনত হন মানব জাতির ইতিহাসের অন্যতম সেরা পেইন্টার এ।
ভ্যান গগ তৈরী করে গেছেন স্ট্যারি নাইটস, পটেটো ইটার্স, সানফ্লাওয়ার এর মতন কালজয়ী সব শিল্পকর্ম। ৪৩টি সেলফ পোট্রেট পাওয়া যায় তাঁর করা। মৃত্যুর পর তার তৈরী শিল্পকর্ম বিক্রি হয়েছে রেকর্ড পরিমান দামে। অবিশ্বাস্য দামে শিল্পকর্ম বিক্রির সব রেকর্ড ভেঙ্গেছে তার পেইন্টিং গুলো। কিন্তু হায়, মৃত্যুর আগে তার ভাই থিও এর কল্যানে মাত্র একটি পেইন্টিংই তিনি বিক্রি করতে পেরেছিলেন। তিনি ছবি আঁকা শুরুই করেছিলেন সাতাশ বছর বয়সে। মারা যান সায়ত্রিশ বছর বয়সে। এই দশ বছরে তার তৈরী করা প্রায় একুশ শত চিত্রকর্মের হদিশ পাওয়া যায়। যার মধ্যে ৮৬০টি অয়েল পেইন্টিংস প্রায় ১৩০০ এর মত জল রং, স্কেচ এবং লাইন ড্রইং।
১৯৭৩ সালে নেদারল্যান্ডস এ সর্বসাধারনের জন্যে ভ্যান গগ মিউজিয়াম চালু হয়। তাঁর করা শিল্প কর্ম ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পৃথিবী বিখ্যাত সব মিউজিয়ামে।