-হ্যালো।কে বলছেন?
-আমি
-আমি কে?
-আপনি কে আপনি তা জানেন না?
-(রেগে গিয়ে আবার কিছুটা সামলে নিয়ে) না মানে আপনি কে?
-আমি একজন মানুষ। আপনার খুব বেশি পরিচিত আবার আপনি আমাকে একদমই চেনেন না।
-মানে কি!রাত আড়াইটার দিকে ফোন দিয়ে ফাইজলামি করেন??
-একজন মৃত্যুপথযাত্রী মানুষ মৃত্যুর আগে একটু ফাইজলামি করাটা বোধ হয় খুব বেশি অপরাধ না।
-হোয়াট???কি আবল তাবল বলছেন?আপনার মাথা ঠিক আছে!
-জ্বি! মাথা ঠিক আছে। এবং কিছুক্ষন পর আমি ২৮টি স্লিপিং পিল একসাথে খাব এবং মরে যাব।
-মরবেন তো মরেন, আমাকে ফোন করছেন কেন? পুলিশি ঝামেলায় ফেলবেন আমাকে মিছেমিছি!
-ঝামেলায় তো আপনি অলরেডি পড়ে গেছেন। মরার আগে লাস্ট ডায়াল নাম্বার টা আপনার।আর আমার রুমে একটা সুন্দর সাদা পৃষ্ঠায় চিরকুট লিখেছি, যাতে কিছু লাইনের সাথে স্পষ্ট করে লেখা আছে আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র রুপা দায়ী।বিশ্বাস না হলে আপনার হোয়াটস এপ চেক করেন, ছবি তুলে পাঠিয়ে দিয়েছি।
-আপনি কি আমার সাথে রসিকতা করার চেষ্টা করছেন? আর আপনি আমার নাম জানেন কিভাবে?
-আমি মোটেও রসিকতা করছি না। আর বলেছিলাম না আমি আপনার অনেক পরিচিত একজন।আচ্ছা আল্লাহ হাফেজ।ভাল থাকবেন।টেক কেয়ার।কিপ স্মাইলিং। আই লেবু এত্তগুলা সেনোরিতা।
টুট টুট টুট....লাইনটি কেটে গেল।
রুপা চমকে উঠল শুভ্র!! না হতেই পারে না, শুভ্রর নিশ্বাসের শব্দ পর্যন্ত তার মুখস্ত।এটা শুভ্রর গলা হতেই পারে না। তাহলে কে! সে আবার কয়েক বার ফোন করল কিন্তু নারী কণ্ঠ জানিয়ে দিল সংযোগ দেয়া সম্ভব না।রুপা দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল।খুব ভয় ও পেল।একটি নির্ঘুম রাতের সূচনা হল।
এদিকে শুভ্র মনে মনে পৈশাচিক আনন্দ পেল। রেইললাইনের বস্তির মার্কেট থেকে পুরোনো সিম কিনে, ভয়েস চেঞ্জার এপ দিয়ে কল করে, রুপাকে ভালই ভরকে দেয়া গেছে।এত ভালবাসে যারে তাকে একটু ভরকে দেয়া যেতেই পারে। সে ও তাকে কম ভড়কায় নি।গত দুবছর অনেক চেষ্টা করেও সে রুপার সংযোগ পায় নি, আজ রাত টা না হয় রুপা তার সংযোগ খুঁজে ব্যর্থ হোক।শুভ্র সিমটি তার সামনে জ্বলতে থাকা বেগুণী মোমবাতির নীল আলোয় পুড়িয়ে ফেলল।একবার ভাবল যে সত্যিই ঘুমের ঔষধ গুলো খাবে কিনা, মরে যেতে কেমন লাগে, জানার ইচ্ছা তার অনেক দিনের।