পোস্টস

চিন্তা

নিস্তব্ধ সবাই

১২ জুন ২০২৪

সাহা

মানুষের মধ্যে নীরবতা চরম সীমায় পৌঁছেছে। আর চুপচাপ থাকা বা যেকোনো কিছু থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়াটা সবারই মানসিক অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অন্যের বিপদ থেকে বা সমাজের যেকোনো কিছু থেকে নিজেকে চুপ  রেখে মানুষ মনে করে যে সে নিজেকে সব অন্যায় বা খারাপ কাজ থেকে বিরত রেখেছে।

আমরা যদি আজ নীরব মানুষদের পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করি, তাদের মানসিকতা হল "তাদের চিন্তাভাবনা বা এগিয়ে আসার মানসিকতার মূল্য দেওয়া হবে না, অথবা তারা একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি বা একটি সংস্থার উচ্চকণ্ঠে তাদের এগিয়ে আসতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে অভিভূত বোধ করে ।"

কবির ভাষায় - " নীরবতা চূড়ান্ত ছদ্মবেশ। এটি সত্যকে ঢেকে রাখে এবং মিথ্যাকে ধামাচাপা দেয়।"

 

একটি গল্পের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা করা যাক, ঢাকা জেলার সয়দাবাদ বাসস্ট্যান্ডের সামনে একটি রেস্তোরাঁর বাইরে এক ভদ্রলোক তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হলেন। শিশুটির বয়স আনুমানিক 10 বছর হবে। পরের মুহুর্তে প্রায় 5 থেকে 6 বছরের একটি ছোট বাচ্চা তাদের কাছে খাবারের জন্য আসে কিন্তু লোকটি খুব খারাপ ভাষায় শিশুটিকে এমনভাবে তাড়িয়ে দেয় যেন শিশুটি ছোট মনে হয় তার ভাষা বা জ্ঞান নেই। ক্ষুধা তাকে ভাষার এই জ্ঞান থেকে দূরে রাখে। তাই শিশুটি নড়াচড়া না করে ছেলেটির হাত ধরলে লোকটি শিশুটিকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয় এবং গালিগালাজ করে। এখানে অনেক লোক উপস্থিত আছে কিন্তু তারা এটা নিয়ে কিছু করে না। একজন মহিলা যিনি সন্তানের মা হতে পারেন তিনি এগিয়ে আসেন তৎক্ষণাৎ লোকটি এবং তার স্ত্রী মহিলাটির সাথে খারাপ ভাষা ব্যবহার শুরু করে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। না রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ না উপস্থিত লোকজন। বরং, কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধমের  আইকন এটি নিয়ে ভিডিও তৈরি করে, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধমে ভাইরাল হয়ে যা। আর এই ভিডিও দেখার পর মানুষটির নিন্দা করেছেন লোকটির।

 

এই গল্পের বেশিরভাগ লোককে এগিয়ে আসার জন্য তাদের নীরবতা একপাশে রাখা দরকার ছিল। সমস্যা সমাধানে সাধারণ মানুষের এগিয়ে আসা উচিত ছিল এবং নারী ও শিশুদের পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল। রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল সমস্যাটি সমাধান করা এবং প্রয়োজনে পুলিশকে জানানো কারণ এই ঘটনাটি তাদের রেস্টুরেন্টের সামনে ঘটেছিল যা তাদের প্রতিফলিত করে। দর্শকদের নীরবতা লোকটিকে তার আপত্তিজনক আচরণ চালিয়ে যেতে দেয়, শিশুটিকে নীরবে কষ্ট পেতে দেয়।

এটি বর্তমান সমাজ বা রাষ্ট্রের প্রতিফলন, যেখানে নীরবতা একটি অভ্যাসে পরিণত হয়েছে এবং মানুষ কথা বলতে ভয় পায়। এই নীরবতা কেবল শব্দের অভাব নয়, বরং উপেক্ষা, সমালোচনা বা আক্রমণের ভয়ের প্রকাশ।