পাশ্চাত্যে যৌথ পরিবার আদৌও কী জন্ম নিয়েছিলো কিংবা যৌথ পরিবার কি আগে থেকে ছিলো তা জানা নেই। তবে আমার ধারনা এক সময় ছিলো এবং তাদের সভ্যতা বিবর্তনের সাথে সাথে ৮,৪,২ এভাবে পরিবর্তিত হতে হতে একক পরিবারের রুপ লাভ করেছে।তবে বঙ্গ দেশ তথা ভারতবর্ষে পরিবারে যৌথতার বিষয়টি নিয়ে মতভেদ রাখবনা, কারণ সুপ্রাচীন কাল হতে যৌথ পরিবারই যে বাঙ্গালী সমাজ ব্যবস্থার মূল চালিকাশক্তি এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ইতিহাস পরিক্রমায় দু কদম এগোলেই চোখে পরার মতো বিষয়। তবে আধুনিক যুগে যৌথ পরিবার ক্ষয়ে যেতে যেতে জীবাশ্ম হবার সময় এসেছে। যৌথ পরিবারের সদস্য দেখলেই যেন মিউজিয়ামে পুরে দেবার লোভ সংবরন করাও দায়। কিন্তু কথা হচ্ছে এ ব্যবস্থার(একক পরিবার) কী আদৌ দরকার ছিলো কিংবা এ মানসিকতা কোন চিন্তাভাবনা গুলোর দ্বারাই মদদপুষ্ট?
উত্তরটা দুভাবে দেয়া যেতে পারে।
উদ্ভূত পরিস্থিতি বিচারে এ ব্যবস্থার দিকে দৃষ্টিপাত করলে দেখা যাবে উন্নতজীবন ও সভ্যতর সমাজ সন্ধান এবং মূল কথা স্বার্থ সিদ্ধির( তা ব্যক্তিক হোক বা পারিবারিক) তাগিদে একতা এককে পরিণত হচ্ছে।
আবার ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি বিচারে বলা যায় পাশ্চাত্যের প্রভাব, আধুনিকতা, সহজতর ও পরিবর্তিত ভাবধারা একক পরিবারের সৃষ্টির মূল উৎস। মূলত প্রথমে বর্নিত মতের বর্ধিত ও বাহ্যিকতারই নামান্তর এই দৃষ্টিভঙ্গি। তবে এই ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিরই যথার্থতা যে পূর্ণমাত্রায় বিকশিত তা সহজে দৃষ্টি অগোচর হবার কথা নয়।
আর এই ক্ষেত্রে দোষ আধুনিকতা বা পাশ্চাত্য প্রভাব কারোরই নয়। সমস্যা হলো গ্রহণ পদ্ধতির দিক থেকে।
পাশ্চাত্যে একক পরিবার আসে স্বভাব জাত হিসাবে। আর বঙ্গ দেশে তা ছড়িয়ে পরে আধুনিকতা নামক ঔপনিবেশিকতার জাহাজে চড়ে অনুকরণপ্রিয়তার তেজস্ক্রিয় ছায়ামূর্তির আগমনের পর পরই। যা প্রত্যেক সুস্থ সবল চিন্তা শক্তিতে স্বার্থকেন্দ্রিকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিচ্ছে অনবরত।