পোস্টস

গল্প

এনেস্থেশিয়া

১২ জুন ২০২৪

আহাদ কনক প্রত্যয়

সঠিক সময়টা মনে করতে পারছি না, খুব সম্ভবত- খুলনায় ভর্তি হওয়ার কয়েকমাস আগের ঘটনা। তখন প্রায় বিকেলে আমি চা খেতে বের হতাম৷ সেরকম এক বিকেলে অদ্ভুত একলোকের সাথে আমার দেখা হয়।

অদ্ভুত ক্যানো বলছি? তাহলে, পুরো কাহিনীটা শুনুন,

আমি যে দোকানে চা খেতে বসি, তারপাশেই একটা খোলা ড্রেন ছিলো। যারা এই এলাকায় চলাফেরা করে, তারা কমবেশি সবাই এই ড্রেন সম্পর্কে জানে।

হঠাৎ, এক বৃদ্ধলোক ড্রেনে পড়ে গ্যাছে৷ সবাই মিলে তাকে ধরাধরি করে উঠানো হলো। বৃদ্ধলোকটার গোড়ালির উপরে রগ বরাবর ভালোই কেটে গ্যাছে৷ ফিনকি দিয়ে রক্ত পড়ছে।

পাশেই ফার্মেসীর দোকান ছিলো, বৃদ্ধলোককে বার বার বললাম- ফার্মেসির দোকানে চলেন৷ ব্যান্ডেজ করা লাগবে। নাহলে, রক্ত পড়া থামবে না। কিন্তু উনি মোটেও যেতে আগ্রহী হলেন না৷ উলটো বললেন, "বাবা, একটা শক্ত ত্যানা দিতে পারবা? বেশি তো কাটে নাই৷ একটু বাইন্ধা নিলেই হইবো।"

প্রায় জোর করেই উনাকে ফার্মেসীতে নিয়ে গেলাম। বড়শির মতো বাকানো সুই দিয়ে (হাতুড়ে!) ডাক্তার সেলাই শুরু করলো। ওই দৃশ্য দেখেই আমার শরীর কাটা দিয়ে উঠতেছিলো; অথচ এতে লোকটার কোনো প্রতিক্রিয়া নাই৷ বিমর্ষচিত্তে বাইরের দিকে তাকায়-ই রইছে।

- কাকা, আপনি ব্যথা পাচ্ছেন না?

- নাহ বাবা, চিন্তা করতাছি - ডাকটরের বিল কেমনে দিমু!

সেদিন বুঝতে পারলাম, " 'টাকার চিন্তা'-এর চেয়ে বড় 'এনেস্থেশিয়া/চেতনা নাশক' দুনিয়ায় নাই।"