Posts

কবিতা

অপরিনত

June 13, 2024

জাকারিয়া সিজিয়াম

86
View

আজ কি আমি পরিনত?
আজ কি জানি? কেমন করে পাল্টে যায়
ভালোবাসা নামের চিরচাওয়া ক্ষুধা?
শীতল বাতাসের প্রথম পরশের মত
আমি যে ভেবেছিলাম ভালোবাসা এমনই।
শিহরীত করবে আমাকে, শিরদাড়া বেয়ে নামা
একদল শীতল রক্ত।

প্রাচীরের শ্যাওলা বেয়ে বাহিরের আকাশ,
ঝলসে গেল সূর্যালোকে চোখ।
বুঝলাম আবেগী একটা জুয়া;
হার জিতে বার বার ছুটে যাওয়া জুয়ারীই
প্রেমিক বীর-পুরুষ। এত যুদ্ধ
চারপাশে, আমার আমিকে আবেগহীন
একটা কাপুরুষের লজ্জায় ঢেকে দিত।
চোরাবালির শীর্ণ পথে আমার পা যখন
আবেগের কাটায় বিদ্ধ। তখন জানি “বীর-পুরুষ কি”?

একটা পা ফেলতে গিয়ে টলতে টলতে বুঝেছি “কাম”।
জীবনের সুধা রসকে আস্মাদনে আমি নেমেছি
আবার; কালো, আধারে, গহীনে।
ফিরে আসছি জোৎসনা রাতের মায়ায় আর
অবাক চোখে দেখছি আমাকে!
বর্ণমালার আকিবুকি রথে চড়ে যখন
ঢুকছি এসে স্তরে স্তরে; জীবনের বানানো ব্যবধানে
অবাক হয়েছি।
সিঁড়ি বেয়ে উপরের দরজায় আমি,
ভালোবাসাকে খুঁজছি যে তখনও।

কত আহাল্লাদের বিচারে গড়া
একেকটা ভালোবাসার ইট; বাহুল্যের সুরকি।
আমি উপর-তলার ভালোবাসার ফুটিত কদমে
কখনও কদর্য দেখতে চাইনি; জানতে চাইনি যে
কি খেলাময় ছায়া চারপাশে, আতশবাজীর মত
চোখ ধাধাচ্ছে। আবারও চিনেছি
বলে ফিরে এসেছি ভালোবাসার দ্বার থেকে।
নেমে যখন আবার যুদ্ধ দেখলাম
ভালোবাসার সাথে জীবনের!
মানবতার সাথে ক্ষুধার!
কাম যেখানে হাতিয়ার, মিলন যেখানে প্রলেপ;
জীবন সেখানে প্রহসন, ভালোবাসা সেখানে অতিরঞ্জন।

এই যুদ্ধে ভালোবাসার হার-জীত নেই; যখন যোদ্ধা
জানেনা সেই কিসের যুদ্ধ? কিসের ভালোবাসা?
উপর তলার মত স্বার্থলোভী দেহ পিপাসুর মত
ভালোবাসা আসেনা দৈহিক জোয়ারে।
দগ্ধ আশার অদৃশ্য প্রতিহিংসায় এখানে বিদ্ধ হচ্ছে নারী
নিজ ঘরে স্বামীর কামে ধর্ষীতা হচ্ছে গৃহবধূ।
ভালোবাসতে চাইলেও যে, দুমুঠো ভাত
আর একটা শান্তির ঘুমে। কিসের ভালোবাসায়
গলির মোড়ে শত কামুক ঘৃণ দৃষ্টির মাথায়,
জীর্ণ শাড়ি খানা ঢিলে করে পড়ে কান্নার মত
চেয়ে থাকা? কিসের ভালোবাসায়
শীর্ণ ঠোটে বেরঙ্গা লিপিস্টিক? অযাচিত দেহ আর্তনাদ?
স্বামীর ক্ষুধাতুর পেটের সমস্ত নীশি সংগ্রাম
যন্ত্রণা আর প্রতিহিংসার
বলী হচ্ছে বিনিদ্র বধূ। অগোচরে।

এটাই ভালোবাসা আমি যখন জানলাম।
একটুও এগুতে চাইনি ভয়াবহতায়।
জানতে চাইনি ভালোবাসা, যদি এরপরে আরো কঠিন আসে।
আরো কঠিন ভালোবাসা।
সমস্ত দিনের অভুক্ত ঢিলে শাড়ির রমণীর
কথা জানতে চাইনি। মিটেছিল কি ক্ষুধা তার?
নাকি অপেক্ষা কামুকের? নাকি ভালোবাসা হয়েছিল
বিক্রি, ভাতের বিনিময়ে? জীবনের পরাজয় কিনা?
অথবা রাতভর হাপড়ের কয়লায় পুড়ে যাওয়া আগুনের মত;
সিক্ত বসনে ব্যাথাতুর যন্ত্রণায় সে যে সুখ পেল,
ভাত-দাতার কাছে তাইতো ভালোবাসা।
রাতের তৃপ্ত ভালোবাসা নিয়ে সে আবার ভাত বিনিময় করবে।

আমি আজ আর খুঁজতে চাইনা ভালোবাসা কি?
আমি কাপুরুষ অথবা অপরিণত।

Comments

    Please login to post comment. Login