বয়ঃসন্ধিকাল। অতিরিক্ত দুষ্টু হবার কারণে পাড়ার অভিভাবকরা তেমন একটা পাত্তা দিত না। পরিবারে কলহ ছিল। সঙ্গ দেয়ার কোন ভাই ছিল না। এক বন্ধু ছিল। মাস্টারের ছেলে। তাকে পেতাম না। সারাক্ষণ পড়ত ও। আমার একঘেয়ে লাগতো খুব। আস্তে আস্তে কোলাহল, আড্ডা ছেড়ে দিই। বইয়ে থিথু হয়ে পড়ি।
মানুষ নানান বই পড়ে। মেলায় ও স্টলে কাজের চেয়ে অকাজের সস্তা প্রেম কাহিনীর বই ও সিনেমা বেশি। সাথে আছে অপরাধের সহস্র চিত্র তুলে ধরা অপরাধের স্বর্গরাজ্যের কাল্পনিক বা অন্য কোন প্রান্তের বিচ্ছিন্ন সত্যমিশ্রিত সাজানো ঘটনার আকাল। হিন্দি সিরিয়াল, বলিউড, ঢালিউড, তার খালাতো ভাই টলিউড... এমন সব উদ্ভট উটের পিঠে চড়ে চড়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম বড় হয়ে উঠেছে।
এসব গল্প সবার পড়া উচিত না। এসব সিনেমা কারোরই দেখা উচিত না। এদেশে সুন্দর ভাবনার, সিস্টেম চেঞ্জিং, প্রব্লেম সলভিং নাটক-সিনেমা লেখা হয়না। লেখা হয় শুধু অন্ধকার, কুৎসিত অবিশ্বাস, কামোত্তেজনা, বিশ্বাসঘাতকতা, প্রতারণা, অপরাধ আর ভায়োলেন্সের গল্প। দর্শক ও পাঠকরা সাইকোলজিক্যালি সেভাবেই গড়ে উঠে এসব পড়ে পড়ে। তারা সাব-কন্সাসলি নৈতিকভাবে ডিমুটিভেটেড হয়। সব কিছুতে রহস্য খুঁজতে থাকে। মনে সন্দেহের বীজ পুঁতে রেখে দেয়। তখন সুন্দর কিছু আর চাইলেও ভাবতে পারেনা। এভাবে ধীরে ধীরে সন্তর্পণে পৃথিবীতে নেমে আসে অনিন্দ্য সুন্দরের অপমৃত্যু।