পোস্টস

কবিতা

গুচ্ছ কবিতা

১৪ জুন ২০২৪

শরীফ এমদাদ হোসেন

গুচ্ছ কবিতা -- শরীফ এমদাদ হোসেন []না চাওয়া[] ======== দূরের স্টেশনে ছুটছে গায়েবি ট্রেন-- রাতের দুঃখ শেষে চোখের খেয়াযানে ভেসে মিথ্যে হুইসেলে পাখিরাও কেঁদে ওঠে বুকের গভীরে তবু স্বপ্নের বাতিঘর আড়ষ্ট হতে হতে দুরন্ত ঘূর্ণি থামালে মনের অকস্মাৎ থামে যদি সময়ের চাকা ট্রেন থেমে যাবে পৃথিবীর ইচ্ছেরে তাই জলাঞ্জলি দিতে চাই না আর []কবিতার শোক[] =============== ভাবতে পারিনা মোটে অগুনতি ভাবনারা জাল ফেলে নিয়ে গেছে আমার ভাবনারে মাথা আর মগজে বাসা বাঁধে আড়ষ্ট রোগ তাই আজ কবিতার শোক অনেক জুলুম অত্যাচার চলেছে মগজের পর দিনরাত অস্থির হাসি কান্না বেদনার উপশমে কখনো পায়নি অবসর তবু আজ সনদ পাই দারিদ্র্যতার এ আমার দুঃখ নয় আমার অহংকার আজন্ম পালন করি কল্পনার ইঞ্চি ইঞ্চি জমি চাষ করি বুকের ভেতর রাশি রাশি কষ্ট শুধু নয় শ্রম আর মেধায় নিষ্ঠায় অগুনতি ভালোবাসা পেলাম জীবনটায় কবিতায় আঁধার আসেনা জানি অক্ষয় ফুল হয়ে কস্তূরী ঘ্রাণ ছড়াক পৃথিবীর পর যানজটের মগজে আসুক সত্য সুন্দর ভাবনা নিরন্তর []কবিতার প্রচ্ছদ[] ============= সূর্য আঁকি সবসময় আপাতত সবুজ প্রচ্ছদে গুঁজে দিচ্ছি ধুতির আস্তিন ঘূর্ণি বাতাসেও বেরিয়ে না হাসে নিষ্ঠুর যন্ত্র উরুর ঝুলে থাকে থাক শতাব্দীর পেন্ডুলাম ভালোবাসতে ইচ্ছে হলে যদি জেগে ওঠে উঠুক বিপুল বিক্রমে কেবল চুমু খাবো সুউচ্চ পর্বতে চুষে খাবো অমায়িক ঘ্রাণ নিঃসরণের চিত্রে দেশ ভেজে ভিজুক ফলাফল হোক কাঙ্ক্ষিত সময় আর সৌন্দর্যে কমুক বয়স পৃথিবীর চাঁদের ক্ষরণে অবিশ্বাস অবক্ষয় চাইবো না আর জোছনার প্লাবনে হাসুক কবিতার প্রচ্ছদ []যাই চলে[] ========= আহ্ কী দেখছি ! বর্তমান দুর্মূল্য অনাচার ভবিষ্যৎ হোঁচটে ভরা ছিলো যে আজন্মকাল জীবনের দারুণ খরা মাঝে মাঝে মনে হয় এই দুর্মুখ পৃথিবীকে পেছনে ফেলে প্রতিভাকে নিয়ে অন্য আমি কোথাও সরে পড়ি আছে নাকি এমন ভূখণ্ড কোথাও ? যেখানে নীলাকাশ নামে গভীর স্নেহে নদীও নারীর মতো পেলবতা আনে মনে যেখানে হাওয়া বয় শ্বাপদ- সংকুল নির্জন স্থানে যাই চলে সেইখানে যাই চলে নিরালা কৈশোরে। []যখন আমার আমি[] =============== যখন আমার বুকের মধ্যে বৃষ্টি হলো ধনুকের মতো বাঁকা রংধনু উঠলো মনের আকাশে রোদ ঝলসিত একটি বিকেল কেঁদে উঠলো বৈকালিক ভ্রমণ বিলাসী পাখিরা ভুলে গেলো গান ওরা আমার বুকের মধ্যকার ঝমঝম বৃষ্টির গানে বেমালুম ভুলে গেলো নিজস্বতা জল ছুঁয়ে আমি তখন রংধনু রঙে সাজি যখন আমার মনের ভেতরে তুমি এলে কৈশোরে, শৈশবে নাকি জন্মাবার বহু আগে আমি আর আমার থাকলাম না জোছনা যেমন আমার একার নয়,রোদ্দুর নয় সমস্ত সবুজ চত্তর, আকাশ যেমন আমার একার নয় ছু্ঁয়ে গেলেও চোখের জল আমার একার থাকলো না ভাগাভাগি হয়ে গেলো লেলিহান স্বাদ আর যখন আমার আমি স্মৃতির কাছে হেঁটে যাবো! ভাবতে পারিনা আর.... ওই চাঁদ জোছনা ছড়াবে তবু []স্বপ্নের দাম[] ========= আমি এক স্বপ্ন মানুষ কেবল দুঃস্বপ্নেই বেঁচে আছি বৃথা গেলো সব আয়োজন প্রত্যাশার গান হলোনা আর অসাধারণ এই তাপিত জীবন হলো আর কই ফুল কই পাখি কই কোথায় উৎসের নদী তরুবীথি গিরিপথ উতলা ভূমি গমনের শেষ অবধি ব্যর্থতার সিঁড়ি ভাঙি হররোজ কস্তূরীর খোঁজে দাবানলে ঝরে পড়ে হৃদয়ের সঞ্চিত ঘাম কী দিয়ে মাপবো বলো স্বপ্নের দাম জানলো না কেউ এই পথ চলা এই প্রত্যাশা প্রত্যাশার কী পরিনাম বুনেছি স্বপ্ন আকাশের সোনার চেয়েও কতটা যে স্বপ্নের দাম []উর্বরা[] ======= ভরা যৌবনের মৌসুম বলে জাম্বুরা তলে যে আকাশ খাটো হতে হতে কপাল ছোঁয়, সে আকাশে চাঁদ ডুবে গেছে, নদীও ভরো ভরো অন্ধকার তাড়ানোর কৌশলে নাভীমূলে সাঁতরায় নিশিপাখি, কতটা দৌড়াতে পারো রাতের ইঁদুর কতটা কাটতে পারো শ্রমের ফসল, কাটো। রোদের চমকে মেঘ চিকচিকে ঠোঁট, এক ফসলি উর্বরা জমিন । [] সখ্যতা [] খাল পাড়ে জোছনা রেখে পার হই সাঁকো ওখানে বৃক্ষদের নিবিড় উষ্ণতা, ওখানে নিস্তব্ধ কক্ষে কার যেন অতীত আর ভবিতব্য আঁকা, ওখানে নীল বাক্সে নীল খামে স্বপ্নগুলি ভেঙ্গেচুরে রাখা সকাল হলে তারা ফোটে ঘাসে, জোয়ার জলে ভাসে রাজহাঁস মনপাখি তবু ওড়েনা। খালের মধ্য জলের মধ্যে রাতের সখ্যতা। []দক্ষিনা[] =========== মেঘ রোদের চমকে ভেজাল সন্ধ্যে নামে। প্রজাপতি তবু দুলতে থাকে ফুল মধুর ঘ্রাণে শয্যাশায়ী পৃথিবী দেখে লোভী দালাল চমকে উঠে ডানহাতটা ঘষে বামহাতে। মেডিকেলের পূর্বগেটে শেখ হাসিনার ছবি বরাবর প্রচণ্ড জ্বরে কাঁপছে রোগী নগদ গুনে যেতে যেতে রাত, আসছে না চিকিৎসক শেষরাতে কাঁপুনি ঝাঁকুনি দিয়ে ট্রেন আসে বাড়ির উঠোনে পথ দেখাবার আয়োজনে যেই হাত সাহসী ছিল শাপলা ফুলের সাথে ভেসে যেতে যেতে সেই হাতে পুরো রঙধনু আকাশ রাঙালো। []মন চায় ফেরাতে সময়[] ================ চমকে উঠি তবুও প্রহর গুনি ভরপুর বুকে বেঁধে রাখি আকাঙ্ক্ষিত সোনালী দুপুর! আরেকবার মুগ্ধ হতে চাই আরেকবার কাঁকনের শব্দে থমকে যেতে চাই দেখতে চাই উঠোনের পাশ দিয়ে হাঁটা সেই দুরন্ত কৈশোর উড়ুক্কু ভালোবাসা মোহন বাঁশীর মতো চেনা কণ্ঠস্বর। হায়! আমি শুদ্ধ হয়ে যাই বার বার খুলে রাখি বেদুইন জানালা, স্মৃতি তমসার! ঘুম নেই। কেবল এক বুক স্বপ্নে ব্যাকুল জানুক পৃথিবী কোন সন্ধিক্ষণে কোথায় হবো মিল যুগল ঠোঁটের ওপর এখনো কী ভাসে সেই মোহময় তিল !! **************************************** টুঙ্গিপাড়া,