আজ আমি জানতে পারলাম রোবট মানবের ঘরে এক প্রিন্সেসের জন্ম হয়েছে। রোবট মানব বাবা হয়েছে! মানুষ কেমন বদলে যায়, ভেবে অবাক হই। একটা সময় ছিলো যখন তাকে পেতে চাইতাম আমি। কিন্তু আমি জানিনা তার বিয়ের কথা শুনে আমার যে অনুভূতি হয়েছে, আমার জায়গায় অন্য কোনো মেয়ে থাকলে এমনই হতো কিনা! আমি প্রথম বিয়ের সংবাদ শুনে কাঁদতে কাঁদতে আল্লাহকে বলেছি, ওদের জীবন সুখের হোক আল্লাহ। নিজ কষ্টে আমি নিজে পুড়েছি, কিন্তু তাকে পোড়াইনি। তার সন্তানের কথা শুনেও আমার কেমন যেন খুশি লাগলো ভীষণ। মনে হলো, সে ভালো আছে। বাচ্চাটাকে ভীষণ দেখতে ইচ্ছে হলো। অথচ একবারের জন্য মনে হলো না, এই বাচ্চার বাবা মায়ের জায়গায় তো রোবট মানব-জেসির নাম না থেকে জেসির জায়গায় আমার নাম থাকতে পারতো। হয়তোবা আমি ভুল মানুষকে ভালোবেসেছি তা আমার মনে আপনা আপনিই সেট হয়ে গেছে। এজন্যই তাকে নিয়ে অহেতুক ভাবনা, অপবিত্র ভাবনা আমার মাথায় আসে না। এজন্যই আমার কখনো মনে হয় না, কেন সে আমার হলো না!? আমি জানি লাইফে আর যা-ই হোক না কেন, স্ট্যাটাস অনেক বড় ব্যাপার। রোবট মানব ঢাকা ভার্সিটি পড়ুয়া, বর্তমানে প্রশাসন ক্যাডার। আর অন্যদিকে আমি ন্যাশনাল ভার্সিটি পড়ুয়া এক মেয়ে, যে নিজের খরচ চালাতে, পরিবারকে সাহায্য করতে একটা মাধ্যমিক স্কুলে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে জয়েন করেছে। রোবট মানব বিয়ে করেছে এক কলেজ লেকচারারকে। মেবি, ইট ইজ দ্যা বেস্ট ডিচিশান ফর হিম। না সে আমাকে জানে, না চেনে, তবে কোন কারণে তার স্টাটাসের সাথে মেলে না এমন এক মেয়েকে সে বিয়ে করবে?! প্রশাসন ক্যাডার তো অনেক দূরের কথা, সামান্য এক স্কুল শিক্ষকও বিয়ের প্রপোজাল নিয়ে আমাদের বাড়ি আসতে দশবার ভাবে। আর আসেও বা যদি, আমার ফেইক লুক দেখে ফিরে যায়। কিন্তু এরা জানে না দেখতে আসার মতো আনকম্পোরটেবাল সিচুয়েশনে কোনো মেয়েই তার আপনাকে প্রকাশ করতে পারে না। আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি, কোনো এক ব্যক্তি যদি সত্যিকার অর্থের আমাকে চেনে, সে ভুল করেও আমাকে হারাতে চাইবে না। রুপ খুব স্বল্প দিনের এট্রাকশান, তাই রুপ নিয়ে অহংকার করছি না আমি। আমি কেবল আমার ভাবনা নিয়ে প্রাউড ফিল করছি, কারণ এটা অন্য আর দশটা মেয়ের মতো নয়। আমার মনের অতলের এই পবিত্রতা কেউ একজন জানবে। এমন একটা মিরাকল ঘটবে একদিন, যেদিন একজন লোক আমার আমিত্বকে আবিষ্কার করবে। স্ট্যাটাসের ভাবনা ঝেড়ে ফেলে দিয়ে পাগলের মতো আমাকে চাইবে। আমি সেই দিনের অপেক্ষাতেই হাসিমুখে বাজে এই পরিবেশে টিকে আছি। আমি কোনো সংজ্ঞা দেবো না আমার পছন্দের, কেমন জীবনসঙ্গী আমার পছন্দ তা আমার আল্লাহ জানেন। আর আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, আল্লাহ আমাকে ভবিষ্যতে কষ্ট পাওয়া থেকে আগলে রাখবেন। কখনোই আমার আশা আর প্রাপ্তির মধ্যে বিস্তর ব্যবধান করবেন না। সে দিনের অপেক্ষায় আছি, যেদিন আমি সত্যিকারার্থেই ভালো থাকবো।