পোস্টস

কবিতা

মৃত্যুবরণ

১৬ জুন ২০২৪

মোহাম্মদ সাকিব (সাকু মিয়া)

মূল লেখক সাকু মিঞা

 দ্বিপ্রহরে বেরিয়েছিলুম সুখের সন্ধান করিতে।
প্রভাতকালে ঊষা যেনো! দৌড় প্রতিযোগিতায় মাতে। পথে চলিতে চলিতে যাহার খোজ করিয়াছিলাম তাহার দেখা কি আর পেয়েছিলুম??

দিবা রাত্রি পার করিয়াছি প্রত্যাহ তবু যেনো অনুভব  করিতে লাগিলাম দিন যেনো পার হইয়াও হইতেছিলোনা। হইবে কেমন করি।  দিনগুলো মোর কাটিতো খুব হতাশায়। প্রভাতবেলায় উঠিয়া আমি শয়নগৃহে বসিয়া গ্রন্থ হাতে বসিতাম! বসিয়া বসিয়া কতো দিন যে পার করিয়াছি তাহা বলা খুব কঠিন।  

এভাবে হতাশার সাথে দিন কাটাইয়া কাটাইয়া যখন মৃত্যুর কোলে ঢেলিয়া পরিলাম।  তখন অনুভব করিলাম আমাকে বাচিতে হইবে। বাচিবার জন্য হইলেও জীবিত থাকা খুব প্রয়োজনীয়।

গ্রন্থ হাতে দিন পার করিলেও তাহা এক বিন্দু সুখকর ছিলো না। গ্রন্থ হাতে করিয়া বসিয়া বসিয়া কতো যে অশ্রুবিষর্জন করিয়াছি।  তাহা শুধুই আমি কহিতে পারি।

প্রভাত বেলা হাটিতে হাটিতে এক গায়ে আসিয়া উপস্থিত হইলাম। এখানে আসিয়া লক্ষ করিলাম! এখানে বধুরা তাহাদের স্বামীদের সঙ্গে কতো স্নেহ ভালোবাসা করিতেন। পতীরা তাহাদের স্ত্রীদিগকে কতো সোহাগ করিতেন। তাহা দেখিয়া আমার হৃদয়বক্ষের মধ্যখান ফাটিয়া যাইতেছিলো । 
একটি দুখ বুকে লইয়া গা ত্যাগ করিয়া অন্য গায়ে আসিলাম।  তবু একটি বিরহের স্মৃতি আমাকে তরপাইয়া তরপাইয়া মারিতেছে।


আজ দীর্ঘ দেরটি যুগ হইয়া গিয়াছে আমি নিজ গৃহ ত্যাগ করিয়াছি। ত্যাগ করিয়াছিলাম বিরহের শোক গ্রহন করিতে না পারিয়া।

সে দু:খ বুকে লইয়া বেরিয়ে পরিলাম গৃহহীন হইয়া। আজ আমার স্থান জোটে মসজিদের প্রাঙ্গনে। কখনো বা রাস্তার কোনে। এমনি করিয়া একদিন হয়তো শেষ নিশ্বাস বের হইয়া যাইবে। তবু বিরহের শোক কাটিবেনা। যেথা হতে পেয়েছিনু বিরহের স্বাদ সেথা এরকম প্রভাব পরেনি যাহা আমার নিকট পরিয়াছে। তাহাকে বলিয়াছিলাম তোমা হতে ধোকা পাওয়া জমের হতে দোয়া পাওয়া একই বিষয়। তবু সে তা না মানিয়া আমার কথাতে কর্ণপাত না করিয়া সে আমায় ছাড়িয়া অন্য গৃহে বাস করার জন্য পারি জমাইয়াছিলো।

আজ সপ্তম দিন। এক ফোটা জল অবধি স্পর্শ করিতেছিনা। শুনিয়াছি সে বড্ড সুখী হইয়াছে আমার অনুপস্থিতিতে।  আমার অনুপস্থিতি তাহাকে খুব আনন্দ দিতেছিলো। যাহা শুনিয়া খুব আনন্দিত হইলাম এবং অন্য গ্রহন ছাড়িয়া দিলাম। আজ সপ্তম দিন। এমন স্থানে অবস্থান করিয়াছি যেথা গলা ভিজাইবার জন্য জল অবধি নেই। হয়তো আজ মৃত্যু আমায় নিজ বুকে টানিয়া লইবে। তাহাতে কি! এ বিশ্বব্রহ্মান্ড আমার যোগ্যতার কোনো অবপ্রকাশ পাইলোনা। পাইবার আগেই আমি তোমাদিগকে ছাড়িয়া চলিয়া যাইতেছি।

তোমরা মোরে অনুভবে রাখিয়া দিও। এভুবনে খুব সুন্দর কবিতা আমার হাতে রটা সম্ভব ছিলো। হয়তো ইতিহাসে অনেক সুন্দর কিছু কাব্য উপন্যাস উপহার দিতে পারিতাম। তবে এক বিরহ মোরে তাহা করিতে দিলোনা। ভালো থাকিয়ো দুনিয়াবাসী।
ভালো থাকিও প্রিয়তমা!  তোমায় আমি আজও বড্ড ভালোবাসি।  মোর এ চিঠিখানি পড়িয়া চোখের পানি মুছিয়া মুছিয়া ভাবিও এ-ভুবনে এমন একজন ছিলো যে তোমাকে ভালো বাসিতো। যার নিকট এ বিশ্বের সবচেয়ে উৎকৃষ্টতম মানুষ ছিলে তুমি। তবে এখন হয়তো কেহ নেই। সেই ব্যাক্তিটি এ দুনিয়ার মায়া রহয়তো ত্যাগ করিয়া চলিয়া গিয়াছে। তুমি সঙ্গে থাকিলে সে হয়তো এ ব্রহ্মান্ডে প্রেমের কাব্য রটিয়া ভরিয়া ফেলিতো। যাহা ইতিহাস সংস্কৃতি করিয়া রাখিয়া দিতো ।  তবে সে যুদ্ধে অংশ নেয়ার আগেই যোদ্ধা মৃত্যুবরণ করিলো। সুখে থেকো প্রিয়তমা।


চিঠি পরিতে পরিতে মেঘবালিকার হাতে থাকা চিঠিখানি অশ্রুজলে ভিজিয়া গেলো। তাহার কাছে অধিক শোক লাগিলো। সে যাহা ভাবিতে পারেনি তাহা আজ হইলো। 
কাগজখানি ভিজিয়া একেবারে নষ্ট হইয়া গেলো। হয়তো চিঠির লেখা তাহার মালিকের নিকট উড়িয়া গিয়াছে।