‘অন্ধকার দেখে রাত চেনা যায়, সূর্যের আলো দেখে দিন কে চেনা যায়, কিন্তু রূপ দেখে মানুষ চেনা অনেক কঠিন।’
আমরা মানুষের বাহ্যিক রূপ দেখে, ব্যবহার দেখে, পূর্বপূরুষের খান্দান দেখেই ধারণা করি মানুষটা খারাপ কিংবা ভালো। আবার অহেতুক সেই ধারণা থেকে বিভিন্ন রকম মন্তব্যও করে ফেলি, পজেটিভ বা নেগেটিভ। প্রথাগত আবেশে যদিও এই সিস্টেমটি একেবারে খারাপ নয় তবুও প্রশ্ন হচ্ছে, সেটা কতটা যৌক্তিক?
হ্যা, স্বমূলে চেনা অসম্ভব হলেও ভার্চুয়ালি হোক আর বাস্তবিক হোক, জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে আমাদেরকে একে অপরকে অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হয়। এক্ষেত্রে আমরা অনেকটা বাধ্যই বলা যায়! আমাদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হয়, বন্ধুত্ব করতে হয়, প্রেম করতে হয়; এবং এই সম্পর্কগুলির প্রতিটির সাথেই চেনা-জানা বিষয়টি প্রকটভাবে জড়িত। তাছাড়া প্রকাশ করার প্রয়োজন পড়–ক আর নাই পড়–ক আমাদের চারপাশের ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে একটা সম্যক ধারণা হৃদয়ে পোষণ করতে হয়। প্রয়োজনে কথায়, কাজে, ব্যবহারে, লেখনিতে কাউকে কাউকে তার কর্ম অনুসারে মূল্যায়ন বা স্বীকৃতি দিতে হয়, কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সেই মূল্যায়নটা কিসের ভিত্তিতে করা উচিৎ, সম্পর্ক স্থাপনের জন্য চেনা-জানার প্রক্রিয়া কি ধরনের এবং কতটুকু পর্যন্ত হওয়া বাঞ্চনীয়?
মানুষের সাময়িক কথা-বার্তা বা আচার-আচরণ কখনোই তার প্রকৃত অবস্থান নির্দেশ করে না।
মানসিকভাবে সদা পরিবর্তনশীল এই স্বজাতির মূল্যায়নও তাৎক্ষণিক অনুমানে করা অযৌক্তিক। যে কোন ক্ষেত্রে মূল্যায়নের আগে মানুষের ভাল খারাপ দুটি স্বত্ত্বা এবং দুটি স্বত্ত্বারই পরিবর্তনশীল অবস্থান বিবেচনায় কিছু সময়, কিছু দিন, বছর, যুগ, অপেক্ষা করা উচিৎ। স্থান, ক্ষেত্র, ব্যক্তি, প্রেক্ষিত, সময় বিশেষে ভাল মানুষের খারাপ পরিচয় প্রকাশ হতে পাওে, আবার খারাপ প্রকৃতির মানুষও ভাল বনে যেতে পারে। মানুষ হয়ে স্বজাতির প্রতি যে কোন ধরনের মন্তব্য বা মূল্যায়নের আগে, যে কোন ধরনের সম্পর্ক স্থাপনের আগে অহেতুক অনুমান বা ধারণা পরিহারের পাশাপাশি সাবধানতা অবলম্বন ও সময় নেয়াটা অতীব গুরুত্বপূর্ণ এবং অবশ্যই করণীয়।