Posts

প্রবন্ধ

অ্যান্টি গ্র্যাভিটি

June 20, 2024

জিসান আকরাম

Original Author জিসান আকরাম

আ্যন্টি গ্ৰ্যাভিটি সম্পর্কে কিছু কথা ~~

 মহাবিশ্বের চারটি পরিচিত মৌলিক শক্তি রয়েছে, তবে মহাজাগতিক বিশালতার মাপকাঠিকে চিন্তা করলে তাদের মধ্যে শুধুমাত্র একটিই গুরুত্বপূর্ণ, সেটি হলো মহাকর্ষ। 

অন্য তিনটি মৌলিক শক্তি হলো –

 ▪️শক্তিশালী পারমাণবিক বল, যা প্রোটন এবং নিউট্রনকে একসাথে ধরে রাখে 

▪️দুর্বল পারমাণবিক বল, তেজস্ক্রিয় ক্ষয় এবং কোয়ার্ক এবং লেপটনের মধ্যে পরিবর্তনের জন্য দায়ী 

▪️ তড়িৎ চুম্বকীয় বল, যা তড়িৎ নিরপেক্ষ পরমাণু গঠন করে। 

এই তিনটি মৌলিক বল মহাজাগতিক স্কেলে মূলত অপ্রাসঙ্গিক। এর কারণ খুবই সহজ। 

যখন আপনি কণার যথেষ্ট বড় সেট একত্রিত করেন, তখন বড়ো দূরত্বে এগুলি একটি আপাত ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থায় চলে যায়। যথেষ্ট বৃহৎ স্কেলে পদার্থ এই তিনটি বলের সাপেক্ষে "নিউট্রাল" থাকে এবং কোনো "নেট" ফলাফল পাওয়া যায় না। কিন্তু মহাকর্ষের ক্ষেত্রে তা হয় না। আসলে, মহাকর্ষ এই অর্থে অনন্য। 

মহাকর্ষের শুধুমাত্র "ধনাত্মক চার্জ" রয়েছে, এর ক্ষেত্রে ভর এবং/অথবা শক্তি সবই ধনাত্মক পরিমাণ।

      মহাকর্ষ বল শুধুমাত্র ক্রমবর্ধমানভাবে আকর্ষণ করে, এবং তাই এরা একের পর এক যোগ হয়ে যায়। কিন্তু কেন এই ভাবে হয়? কেন এর বিপরীত ঘটনা দেখা যায় না? ঋণাত্মক মহাকর্ষ বলে কিছু দেখা যায় না কেন? 

সাধারণ মানুষের কাছে স্থানকালকে ব্যাখ্যা করার জন্য প্রায়শই একটি মডেলের কথা উল্লেখ করা হয়। 

      মডেলটি হল একটি বিছানার চাদরের উপর রাখা ভারী বল। বলের ওজন সমতল চাদরকে বিকৃত করে এবং কাছাকাছি থাকা ছোট বলের গতিপথ ফুটিয়ে তোলে। 

চাদরটি নীচের দিকে ঝুলে থাকে। কিন্তু এটা মনে হওয়া যুক্তি সম্পন্ন হতে পারে যে বিছানার চাদরটি তো বিপরীত দিকেও বিকৃত হতে পারতো, মানে উপরের দিকে ফুলে উঠতে পারতো। তাহলে ভারী বলের কাছাকাছি থাকা হালকা বল চাদরের বিকৃতি অনুসারে দূরে চলে যেতে পারতো। আমরা কখনই এই ঘটনাটি লক্ষ্য করি না। কেন?

        উপরের তুলনামূলক মডেলে সাধারণ আপেক্ষিকতার একটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। স্থান (এবং স্থানকাল) কেবল একটি ফ্যাব্রিক, এবং সমস্ত বস্তু (ভরহীন এবং বিশাল ভরযুক্ত বস্তু সহ) এই ফ্যাব্রিকের মধ্যে বিদ্যমান। এক জায়গায় যত বেশি ভর (এবং/অথবা শক্তি) থাকবে, সেই ভর/শক্তির উপস্থিতি দ্বারা তত বেশি স্থান বাঁকা হবে এবং ফ্যাব্রিকটি বিকৃত হওয়ার পরিমাণ তত বেশি হবে। 

        কিভাবে সমস্ত জিনিস, বৃহদায়তন এবং ভরবিহীন উভয়ই এর মধ্য দিয়ে যাবে, সেটি নির্ধারণ করবে সেই স্থানের বক্রতা (অর্থাৎ, ফ্যাব্রিকটি যে পরিমাণে এবং যে দিকে বিকৃত হয়েছে)। কিন্তু এই মডেলটি সম্পর্কে কিছু আপত্তি রয়েছে। 

   ▪️ এটি স্থানকে ত্রি-মাত্রিকের পরিবর্তে দ্বি-মাত্রিক হিসাবে বর্ণনা করে। 

▪️স্থানের বিকৃতি (বা বক্রতা) দেখায় "নিচের" দিক হিসাবে। যেন মহাকর্ষ এই বিকৃতি ঘটাচ্ছে (বিছানার চাদরে ভারী বলের মতো)। 

▪️এটা মনে হয়, একটি বিশাল ভর থেকে অনেক দূরে, স্থান আর বক্র থাকে না। এই জিনিসগুলির কোনটিই সত্য নয়, এবং তাই আপনাদের মধ্যে যাদের এই আপত্তি আছে, তাঁদের আমি বলবো স্থানকে ত্রি-মাত্রিক গ্রিড হিসাবে কল্পনা করতে (যদিও অন্য যেকোনো ফিজিক্যাল মডেলের মতো এটিও আপেক্ষিকতাকে পুরোপুরি বর্ণনা করে না)।

   এই গ্ৰিডটি একটি "কার্টেসিয়ান" গ্রিডের মতো নয়, যেখানে সমস্ত রেখা তিনটি মাত্রায় পারস্পরিকভাবে লম্ব হিসাবে থাকে। এটিকে একটি গ্রিড হিসাবে মনে করুন যেখানে লাইনগুলি ভরের উপস্থিতি দ্বারা 'sucked' হয়ে ভিতরের দিকে যায়, যেন কেউ একগুচ্ছ সুতো ভিতরের দিকে টেনে ধরেছে। আমাদের যে প্রশ্নটি বিবেচনা করা দরকার তা হল কেন মাধ্যাকর্ষণ বিকর্ষণ করতে পারে না। 

এটা এমন যে স্থান শুধুমাত্র একটি দিকেই "বক্ররেখা" তৈরী করতে পারে: যে দিকটি মহাকর্ষকে আকর্ষণকারী করে তোলে। বিছানার চাদরের আ্যনালোজিতে, পদার্থ এবং শক্তি শুধুমাত্র স্থানকে "নিচে" বক্র করে দেয়, সে "উপরের" দিকে বাঁকে না এবং তাই শুধুমাত্র আকর্ষণ থাকে, বিকর্ষণ নয়। "3D গ্রিড" মডেলে, পদার্থ এবং শক্তি শুধুমাত্র সেই রেখাগুলি "অভ্যন্তরীণ" ভাবে বাঁকতে পারে, বাইরের দিকে ফুলে ওঠে না এবং তাই শুধুমাত্র আকর্ষণ আছে, বিকর্ষণ নয়। এর একটি গভীর এবং গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে, যার ফলে মাধ্যাকর্ষণ একটি অনন্য (unique) বিষয়। 

  চারটি মৌলিক শক্তির মধ্যে মহাবিশ্বে মহাকর্ষীয় "চার্জ" -এর জন্য শুধুমাত্র একটিই "চিহ্ন" রয়েছে, সেটি হলো ধনাত্মক রাশি। সাধারণত আমরা এভাবে মহাকর্ষ সম্মন্ধে ভাবি না। আমরা মহাকর্ষীয় চার্জ সম্পর্কে কথা বলি না; মাধ্যাকর্ষণের ক্ষেত্রে আমরা "ভর" এবং "শক্তি" নিয়ে কথা বলি। কিন্তু সমস্ত ফিজিক্যাল সত্তার মধ্যে, ম্যাক্রোস্কোপিক এবং কোয়ান্টাম জগতে (যেগুলির অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়েছে), "ঋণাত্মক ভর" বা "ঋণাত্মক শক্তি" -এর মতো কোনও জিনিস আবিষ্কৃত হয়নি। 

ভর এবং শক্তি, সামগ্রিকভাবে সবসময় ধনাত্মক হিসেবেই দেখা যায়। আপনি একে তড়িৎ চুম্বকীয় বলের সঙ্গে তুলনা করলে অবিলম্বে পার্থক্যটি দেখতে পাবেন। যখন বৈদ্যুতিক চার্জের কথা আসে, তখন আপনার কাছে শুধু "এক ধরনের" চার্জ থাকে না; আপনার কাছে দুটি চার্জ আছে: ধনাত্মক (+) এবং ঋণাত্মক (-)। 

তড়িৎ চুম্বকীয় বলের ক্ষেত্রে আকর্ষণ অথবা বিকর্ষণের ঘটনাটি নির্ভর করে যখন চার্জগুলি একই রকম (তখন তারা বিকর্ষণ করে) অথবা বিপরীত (তখন তারা আকর্ষণ করে) কিনা, তার উপর। 

ক্লাসিক্যাল পদার্থবিদ্যায় নিউটনের সার্বজনীন মাধ্যাকর্ষণ আইন এবং ইলেকট্রোস্ট্যাটিক (electrostatic) বলের জন্য কুলম্বের সূত্র প্রায় অভিন্ন। 

কিন্তু দুটি ক্ষেত্রে এক ধরনের চার্জ বনাম দুই ধরনের চার্জের মৌলিক পার্থক্য তড়িৎ চুম্বকীয় বলের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনার জগৎ খুলে দেয়। আবার তড়িৎ চুম্বকীয় বল মহাকর্ষীয় বলের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। আপনি যদি দুটি (ধনাত্মক চার্জযুক্ত) প্রোটনকে একসাথে রাখেন এবং (বিকর্ষক) বৈদ্যুতিক শক্তি পরিমাপ করেন এবং (আকর্ষণকারী) মহাকর্ষীয় বলের সাথে তুলনা করেন, আপনি দেখবেন বিকর্ষণটাই জিতেছে, প্রায় 10^36 গুণ ফ্যাক্টরে। 

এখানে প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক, তাহলে মহাকর্ষীয় বলের পরিবর্তে বৈদ্যুতিক বল মহাবিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করে না কেন? কারণ বড়ো পরিমাপে মহাকর্ষের সাথে তড়িৎ চুম্বকীয় বলের কোনো তুলনাই হয় না, যদিও যথেষ্ট কাছাকাছি থাকলে তড়িৎ চুম্বকীয় বল অনেক অনেক বেশি শক্তিশালী। মহাবিশ্ব বৈদ্যুতিকভাবে নিরপেক্ষ, যেখানে ধনাত্মক চার্জের পরিমাণ এবং ঋণাত্মক চার্জের ভারসাম্য থাকে। পরমাণুগুলি বৈদ্যুতিকভাবে নিরপেক্ষ, নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক বৈদ্যুতিক চার্জ এটিকে প্রদক্ষিণকারী ইলেকট্রনগুলির ঋণাত্মক বৈদ্যুতিক চার্জের দ্বারা ঠিক ভারসাম্যপূর্ণ।

 গ্রহ, নক্ষত্র এবং গ্যালাক্সিগুলিও প্রধানত পরমাণু দিয়ে তৈরি এবং সামগ্রিকভাবে বৈদ্যুতিকভাবে নিরপেক্ষ। মাধ্যাকর্ষণ বল অত্যন্ত বড় মহাজাগতিক স্কেলে এটি সম্ভবত একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বল। কারণ এটি এত ক্ষুদ্র হলেও, এটি cumulative, ক্রমবর্ধমান। 

সেখানে শুধুমাত্র এক ধরনের মহাকর্ষীয় চার্জ রয়েছে এবং এটি সময়ের সাথে সাথে যোগ হয়। অন্য দুটি (পারমাণবিক) বলও বড় পরিসরে প্রভাবশালী নয়। তারা মহাবিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মূল ভূমিকা পালন করলেও পরমাণুর বাইরে তাদের কার্যকলাপ নেই। সুতরাং মহাজাগতিক স্কেলে আমাদের কাছে কেবল মহাকর্ষ‌ই পড়ে থাকে। সমস্ত ভর ধনাত্মক, সমস্ত শক্তি ধনাত্মক। ভর ও শক্তি স্থানের মধ্যে থাকে এবং সেগুলি স্থানিক বক্রতা নির্ধারণ করে। এবং স্থানিক বক্রতা মাধ্যাকর্ষণ নির্ধারণ করে, তাই মহাকর্ষীয় বল অবশ্যই সর্বদা আকর্ষণকারী (ধনাত্মক) হতে হবে। এখনও পর্যন্ত আমরা যা দেখেছি, মহাবিশ্ব এরকম‌ই। কিন্তু আমরা একটি খুব আলাদা রকমের মহাবিশ্বের কল্পনা করতে পারতাম: একটি যেখানে ঋণাত্মক ভর বা ঋণাত্মক শক্তির অবস্থা থাকতে পারে। 

তখন যেমন তড়িৎ চুম্বকীয় বলের ক্ষেত্রে, যেখানে এক‌ই চার্জ বিকর্ষণ করে এবং বিপরীত চার্জ আকর্ষণ করে, কিন্তু মহাকর্ষ তার বিপরীত হবে। ▪️ ধনাত্মক ভর/শক্তির দশা ধনাত্মক ভর/শক্তির দশাকে আকর্ষণ করবে, 

▪️ধনাত্মক ভর/শক্তির দশা ঋনাত্মক ভর/শক্তির দশাকে বিকর্ষণ করবে,

 ▪️ ঋনাত্মক ভর/শক্তি দশা ধনাত্মক ভর/শক্তি দশাকে বিকর্ষণ করবে. 

▪️ ঋনাত্মক ভর/শক্তি দশাকে ঋনাত্মক ভর/শক্তি দশা আকর্ষণ করবে। 

    যদি আমাদের বাস্তবতার একটি অংশ হিসাবে ঋনাত্মক ভর এবং/অথবা ঋনাত্মক শক্তি থাকে, আমরা সেগুলিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপায়ে ব্যবহার করতে সক্ষম হব। আমাদের সাধারণ মহাকর্ষীয় বল থেকে সেই ঋনাত্মক দশার সিস্টেমকে "ঢাল" বা শিল্ড হিসাবে ব্যাবহার করতে পারি। তখন সাধারণ ভাবেই আমরা "ওজনহীনতা" অনুভব করতে পারি। তার জন্য বিশেষ করে মুক্তভাবে পতনশীল অবস্থা সৃষ্টি করার প্রয়োজন হবে না। তাহলে এমনিতে বিশাল বিশাল ভারী বস্তুকে আমরা একটি আঙুলের সাহায্যেই তুলতে পারবো। অবশ্য পৃথিবীর বুকে এসব করা বিদঘুটে রকমের অবস্থা তৈরী করতে পারে। পৃথিবীতে বসে পৃথিবীর অভিকর্ষকে একেবারে নাকচ করা মোটেও ভালো কাজ নয়। বস্তূর অন্তত কিছুটা ওজন থাকা ভালো। যাইহোক তখন আমরা এরকম অনেক কিছুই ঘটনা ঘটাতে পারবো, যা এখন আমাদের কল্পনার বাইরে। যদি আমাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণে ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক শক্তির অবস্থা থাকে, তাহলে আমরা তাদের একটি ওয়ার্প ক্ষেত্র (warp field) তৈরি করতে ব্যবহার করতে পারি। 

     যেখানে – ▪️একটি মহাকাশযানের সামনের স্থানটি ধনাত্মক ভাবে বক্র এবং সংকুচিত,

 ▪️মহাকাশযানের পিছনের স্থানটি ঋনাত্মক ভাবে বক্র এবং প্রসারিত বা বিচ্ছিন্ন,

 ▪️এবং মহাকাশযানটি যে স্থানটিতে অবস্থিত সেটি সমতল অবস্থায় থাকে।

 এভাবে আমারা‌ সাধারণ আপেক্ষিকতার আইনের মধ্যেই একটি Alcubierre ড্রাইভ গঠন করতে পারি। 

সেটি ঋণাত্মক ভর/শক্তি দশার অস্তিত্বের উপর নির্ভর করে ওয়ার্প ড্রাইভের আশা জাগিয়ে তোলে। এর ফলে মহাবিশ্বের দূর-দূরান্তরে আমাদের পৌঁছনো সম্ভব হতে পারে। যাইহোক, মহাবিশ্বের মৌলিক স্তরে কোন ঋনাত্মক ভর/শক্তির অবস্থাকে খুঁজে পাওয়া যায় না। বিজ্ঞানীদের মহাজাগতিক ধ্রুবক (অর্থাৎ, ডার্ক এনার্জির প্রভাব) পরিমাপের দ্বারা নির্ধারিত হিসাবে, ভ্যাকুয়ামের অন্তর্নিহিত মোট শক্তির পরিমাণ ধনাত্মক — খুব অল্প, তবে শূন্যের চেয়ে বেশি। 

এবং কোনো জানা উপায়ে আপনি ফাঁকা স্থান থেকে সেই শক্তি কমিয়ে নিয়ে বা সরিয়ে নিয়ে শূন্যের নীচে (অর্থাৎ, ঋণাত্মক) নিয়ে আসতে পারবেন না। আপনি কোনো একটি উপায়ে একটি অঞ্চলে অন্য অঞ্চলের তুলনায় কম শক্তির অবস্থা তৈরি করতে পারলেও কার্যকরভাবে ঋনাত্মক (গড় ভর/শক্তির অবস্থার সাথে সম্পর্কিত) শক্তি অঞ্চল তৈরি করতে পারেন। 

কিন্তু সেখানেও মহাকর্ষীয় বল আকর্ষণ‌ই করবে, বিকর্ষণ করবে না। আপনাকে কোনো উপায়ে স্থানের কার্ভেচারকে বিপরীত দিকে বাঁকাতে হবে। তবে কি সেই অদেখা, অজানা, হাইপোথেটিক্যাল হোয়াইট হোল-এ আ্যন্টি গ্ৰ্যাভিটি থাকতে পারে?

 কারণ আপেক্ষিকতাবাদ অনুযায়ী আদতে মহাকর্ষ মানে স্থানকালের বক্রতার প্রকাশ। এখন হোয়াইট হোল-এ সেই বক্রতা বিপরীত দিকে! 

তবে এই সকল বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণা করা সম্ভব হয় নি। তবে এটা মনে রাখা দরকার যে "মহাকর্ষ" স্থান এবং সময়ের মধ্যে ঘটে এরকম কিছু নয়। স্থান এবং সময়কে বিকৃত হয়েই মহাকর্ষ তৈরী হয়। তাই অ্যান্টি গ্র্যাভিটির জন্য আমাদের প্রয়োজন হবে ঋণাত্মক স্পেস এবং ঋণাত্মক সময়। 

কিন্তু সমস্যা হলো আমাদের বিজ্ঞানের মধ্যে থেকে এগুলিকে ব্যাখ্যা করা যায় না। 

আবার ঋনাত্মক ভর মানে ঋনাত্মক শক্তি (E = mc^2)। যার অর্থ হল যে যদি ঋণাত্মক শক্তির উপাদান বিদ্যমান থাকে তবে ভ্যাকুয়াম এর মধ্যে ক্ষয়িত হতে পারে। তখন এটা অত্যন্ত অস্থিতিশীল জগত তৈরি করবে। প্রকৃতপক্ষে, কিছু বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে চরম প্রারম্ভিক মহাবিশ্বে, প্রতিসাম্য ভাঙার যুগের সময়, তখন হিগস ক্ষেত্রের ঋণাত্মক শক্তি মহাবিশ্বকে মৌলিকভাবে অস্থির করে তুলেছিল। তার ফলে সেই সময়ের মহাবিশ্বের সবকিছু বদলে যায়, সে বর্তমান মহাবিশ্বে ক্ষয়িত হয়েছিল। হিগস ক্ষেত্র কিছু কণাকে ভর দেয়, হিগস মেকানিজম এবং পারমাণবিক মিথস্ক্রিয়াগুলির ফর্ম তৈরি করে, যা আমরা আজ দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু এখন যদি এই ধরনের ভাঙ্গন ঘটে থাকে... আমাদের জানা মহাবিশ্ব, সমস্ত পদার্থ সহ পদার্থবিদ্যার কিছু মৌলিক নিয়মের অস্তিত্ব লোপ পাবে। কিন্তু আমরা সেই পরিস্থিতি চাই না। 

তাই হয়ত এটা একটা ভালো জিনিস যে আমরা কখনই ঋনাত্মক ভর-শক্তির সাথে পদার্থের রূপগুলিকে এবং আ্যন্টি গ্ৰ্যাভিটিকে পর্যবেক্ষণ করিনি। সুতরাং আ্যান্টি গ্ৰ্যাভিটি জিনিসটা এখনও স্রেফ একটি ইন্টারেস্টিং কল্পনা হয়েই রয়ে আছে। তবে শেষ কথা কে বলবে?

Comments

    Please login to post comment. Login