যদি কোনও বালক ১৪-১৫ বছর বয়সেও তার মা-বাবার সামনে নগ্নতা প্রদর্শন বন্ধ না করে, তবে সেটি কি স্বাভাবিক? বাবা-মায়ের সামনে একজন সন্তান কত বছর বয়স অবধি নগ্ন হতে পারে?
প্রথমে নবী মুহাম্মদ (স.) এর একটি হাদিস লক্ষ্য করছি,,,
عَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا: أنَّ رَسُولَ اللهِ ﷺ مَرَّ عَلَى رَجُلٍ مِنَ الأنْصَار وَهُوَ يَعِظُ أخَاهُ في الحَيَاءِ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ ﷺ: « دَعْهُ، فَإنَّ الْحَيَاءَ مِنَ الإيمَانِ ». متفقٌ عَلَيْهِ
ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আনসার ব্যক্তির পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন। যিনি তার ভাইকে লজ্জার ব্যাপারে উপদেশ দিচ্ছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে ছেড়ে দাও। কেননা লজ্জা ঈমানের অঙ্গ।
লজ্জা ঈমানের অঙ্গ। যার লজ্জা নেই, সে যা ইচ্ছে করতে পারে। আর লজ্জা মানুষকে প্রকৃত মানুষ রূপে গড়ে তোলে।
নবী (স.) এর সিরাত থেকে জানা যায় যে,, শিশু বয়সে যখন নাকি নবী (স.) এর লজ্জা স্থানের কাপড় সরে যেতো,,তখন শিশু মুহাম্মদ (স.) সজোরে কেঁদে উঠতেন। সিরাত থেকে এই শিক্ষা পায় যে,,লজ্জা শিশুদেরও ভূষণ বৈকি
এছাড়াও পবিত্র কোরান বলেনঃ
وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
(31
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
And say to the believing women that they should lower their gaze and guard their modesty; that they should not display their beauty and ornaments except what (must ordinarily) appear thereof; that they should draw their veils over their bosoms and not display their beauty except to their husbands, their fathers, their husband's fathers, their sons, their husbands' sons, their brothers or their brothers' sons, or their sisters' sons, or their women, or the slaves whom their right hands possess, or male servants free of physical needs, or small children who have no sense of the shame of sex; and that they should not strike their feet in order to draw attention to their hidden ornaments. And O ye Believers! turn ye all together towards Allah, that ye may attain bliss.
উপরোক্ত আয়াতে ঈমানদার নারীদেরকে যৌনকামনামুক্ত পুরুষ (শিশু) ও বালকদের সামনে পর্দা করতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ বাবা-মায়ের সামনে একজন সন্তান শিশু ও বালক অবস্থা থাকা পর্যন্ত নগ্ন থাকতে পারবে।সুতরাং,, ১৪-১৫ বছর বয়সের পূর্বে।
১৪-১৫ বছরের সন্তানদের ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান
সন্তানের বয়স যখন হিজরি বর্ষ হিসাবে ১৫ বছর পূর্ণ হবে, তখন প্রত্যেককে বালেগ গণ্য করা হবে। ১৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর কোনো আলামত পাওয়া না গেলেও সে বালেগ বলেই বিবেচিত হবে। (আল ইনায়া শারহুল হেদায়া ৮/২০১; আদ্দুররুল মুখতার ৬/১৫৩; তাফসিরে কুরতুবি ১২/১৫১)
এ বিষয়ে হাদিস শরিফে এসেছেঃনাফে (রহ.) হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, উহুদ যুদ্ধের দিন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে (সবার সামনে) পেশ করেন, তখন আমি ১৪ বছরের বালক। (ইবনে ওমর বলেন) তিনি [মহানবী সা.)] আমাকে (যুদ্ধে গমনের) অনুমতি দেননি। পরে খন্দকের যুদ্ধে তিনি আমাকে পেশ করেন ও অনুমতি দেন। তখন আমি ১৫ বছরের যুবক। নাফে (রহ.) বলেন, আমি খলিফা ওমর ইবনে আবদুল আজিজের কাছে গিয়ে এ হাদিস শুনালাম। তিনি বলেন, এটাই হচ্ছে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্ত বয়সের সীমারেখা। তারপর তিনি তাঁর গভর্নরদের লিখিত নির্দেশ পাঠালেন যে (সেনাবাহিনীতে) যাদের বয়স ১৫ হয়েছে, তাদের জন্য যেন ভাতা নির্দিষ্ট করা হয়। (বুখারি, হাদিস নম্বর ২৬৬৪, ৪০৯৭; মুসলিম, হাদিস নম্বর ১৮৬৮)
অর্থাৎ ১৪-১৫ বছর বয়সে সন্তানরা বালেগ অবস্থায় উপনিবেশ করে।তখন তাদের উপর শরিয়তের নিয়মকানুন মানা জরুরি হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে তার আমলনামায় ভালো-মন্দ কাজও লিপিবদ্ধ হয়।সুতরাং,, বালেগ অবস্থায় উপনিবেশ করার পরে কাহারও ব্যাপারের শরিয়তের কোন ছাড় নেয়।
সুতরাং,, ১৪-১৫ বছর বয়সে বাবা ও মায়ের সামনে নগ্নতা প্রদর্শন করা স্বাভাবিক নয় বরং অস্বাভাবিক।
বিঃদ্রঃ আপনার সন্তানকে লজ্জাশীল হওয়ার উপদেশ প্রদান করুন। নিশ্চয় লজ্জাশীলতা ও শালীনতা একজন ভালো মানুষ হতে সাহায্য করে।
ধন্যবাদ,, 💞