আলতা মাসির সাথে আব্বার প্রেম কিছুটা ধুঁয়াটে ব্যপার। আসলেই প্রেম ছিলো কী ছিলো না আজ আর তা জানার উপায় নাই। কিন্তু আলতা মাসীর সাথে আব্বার প্রেমের কাহিনি খুব মুখ রোচক এই লোকালয়ে। বহুদিন লোকে আমাদের জিজ্ঞাসা করতো, তুই কোন তরফের? আলতা না জায়েদা? আমরা, মানে আমি আর আমার বোন চুপচাপ শুনলেও আমাদের ছোট ভাই কখনো শুনে ফিরে আসার লোক ছিলো না। সে যেই হোক তার মা'কে বিছানায় টেনে নিয়ে তবেই ফিরে আসতো। এত কুৎসিত গালি সে এই অল্প বয়সে কোথায় শিখেছে কে জানে!
আলতা মাসি আমাকে খুব আদর করতেন। কী কারণে আমি ঠিক জানি না। লোকের কথা সত্যিও হতে পারে। সবাই বলে আমার সাথে আলতা মাসীর চেহারার খুব মিল। আমি বিশেষ পাত্তা দিতাম না। বহুদিন আয়নায় নিজেকে দেখেছি। কিন্তু কখনো মনে হয় নাই চেহারায় মিল আছে। আমার বন্ধুরা পিছনে নানান কথা বলতো। আমি শুনেও না শুনার ভান করতাম।
আমরা কুপির আলোতে পড়তে বসতাম। আম্মা তসবিহ জপতেন। সারাদিন আব্বা বাড়িতে নাই। আব্বার কথা জিজ্ঞাসা করলে কিছু বলতেন না। পড় বলে তসবিহ'তে মন দিতেন। কোন কোন দিন মাঝরাতে শুনতাম আব্বা বলতেছে, কী বলো এই সব। এই রাইতে চইলা যাবা মানে? আম্মা বলতেন, কালভার্ট পর্যন্ত আগায়া দিয়া আসেন। আমি থাকবো না। আমার মরছে বাপের কিরা আমি থাকবো না। আমি চোখ কচলে উঠে বসতাম। আম্মা চুপ করে যেতেন। আমি একবার তাদের দিকে তাকায়া আবার ঘুমায়া পড়তাম।
৪ মার্চ, ২০১৯