জাতির পিতার নেতৃত্বে সূচিত মহান ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ৬ দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণআন্দোলন ও ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ প্রতিটি প্রেক্ষাপট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক। ১৯২০ সালে অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতীয় বাংলার টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেন এক রাজনীতির কবি। ডাক নাম খোকা। কারো কাছে বড় ভাই। বাঙালির বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশের জাতির জনক, আজ তিনি বিশ্ববন্ধু। তিনি শেখ মুজিবুর রহমান। পরাধীন ব্রিটিশ ভারতে এই খোকা জন্ম নিয়ে মনেমনে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন," বাংলা মাগো তোমার আঁচলে আমি সোনার হরিণ জড়াবো।" বাস্তবে তাই করেছিলেন খোকা।
১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ১ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। মূলত এখানে পড়াশোনাটা হতো অক্সফোর্ড মডেলের। পাশ্চাত্যের (যুক্তরাজ্য) অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির আদলে প্রাচ্যের ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনে পূর্ববাংলার পিছিয়ে পড়া মুসলিমদের শিক্ষিত করে ব্রিটিশ আনুগত্য সৃষ্টি করাই ছিল প্রধান কারণ। পূর্ববাংলার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়েছে বটে কিন্তু ব্রিটিশ শাসনের অনুগত্য মেনে নেয়নি কখনও। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনসহ বহু আন্দোলন-সংগ্রারের সূতিকাগার এই বিশ্ববিদ্যালয়। বাঙালির সবচেয়ে বড় অর্জন একাত্তরের মুক্তির সংগ্রামের আঁতুরঘর এটি।
শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে কলকাতা থেকে স্থায়ীভাবে ঢাকায় চলে আসেন, ওঠেন ১৫০ মোগলটুলীর ‘ওয়ার্কার্স ক্যাম্প’ অফিসে এবং তাঁর বন্ধু শওকত আলীর সঙ্গে বসবাস শুরু করেন। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। তাঁর রোল নম্বর ছিল ১৬৬। স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের সংযুক্ত ছাত্র ছিলেন তিনি। সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হলের ১২ নং কক্ষে মতান্তরে ১৫২ নং কক্ষে থাকতেন বলে জানা যায়। নিয়মিত আড্ডা দিতেন ফজলুল হক মুসলিম হলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে তিনি অধিকাংশ সময় কাটাতেন ১৫০ নম্বর মোগলটুলির পার্টি হাউজ নামক বাড়িতে। একটি সাইকেলে চড়ে আসতেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থে লিখেছেন, ‘আমি ঢাকায় এলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি, আইন পড়ব। বই পুস্তক কিছু কিনলাম।’ [পৃষ্ঠা ৮৭] কলিকাতা থেকে বিএ পাস করে ঢাকায় আসার চার মাসের মধ্যে (১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি) তিনি গঠন করেন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ। ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আহূত ধর্মঘটে পিকেটিং করার সময় গ্রেফতার হন তরুণ ছাত্র শেখ মুজিব।
১৯৪৮ সালের ১১ মার্চের আন্দোলনের এক বছর পরের ঘটনা। ১৯৪৯ সালের ৩ মার্চ। দীর্ঘ সময়ের বঞ্চনা আর ক্ষোভ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিম্ন বেতনভোগী ৪র্থ শ্রেণি কর্মচারীদের অসন্তোষ ধর্মঘটে রূপ নেয়। বঙ্গবন্ধু অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থে লিখেছেন, ‘এখন এটাই পূর্ব বাংলার একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্র অনেক বেড়ে গিয়েছিল। কর্মচারীদের সংখ্যা বাড়ে নাই।… চাউলের দাম ও অন্যান্য জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। চাকরির কোনো নিশ্চয়তাও ছিল না। ইচ্ছামত তাড়িয়ে দিত, ইচ্ছামত চাকরি দিত।’ [পৃষ্ঠা ১১২] কর্মচারীদের ধর্মঘটের সমর্থনে ঐ দিন ঢাবির সংগ্রামী ছাত্র সমাজ ক্লাস বর্জন করে। ৫ মার্চ পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের আহ্বানে পূর্ণ ছাত্র ধর্মঘট শেষে অপরাহ্নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছাত্র সভায় কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া পুরণ না হওয়া পর্যন্ত সহানুভূতি সূচক ধর্মঘট অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ছাত্র নেতা ও একজন যুবকর্মী হিসেবে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে কর্মচারীদের আন্দোলন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
আন্দোলন মোকাবেলায় ১১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ও আন্দোলন অনুসারী/নেতৃত্বে যুক্ত ২৭ জন ছাত্রছাত্রীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ৬ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চার বছরের জন্য এবং ১৫ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হল থেকে বহিষ্কার করা হয়। বহিস্কৃত ছয় জনের একজনকে ১০ টাকা এবং শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৫ জনকে ১৫ টাকা করে জরিমানাসহ মুচলেকা প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
শাস্তিপ্রাপ্ত অনেকে শর্তমেনে জরিমানা পরিশোধ করে ছাত্রত্ব ঠেকালেও শেখ মুজিব দৃঢ়তার সাথে তা প্রত্যাখান করেন। এমন প্রেক্ষাপটেই তাঁর সিদ্ধান্ত উপাচার্যের বাসভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। ১৮ এপ্রিল মিছিল নিয়ে গেলেন উপাচার্যের বাসভবনে। রাতেও অবস্থান বজায় থাকল। ১৮ এপ্রিলের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘উপাচার্যের বাসভবনে ছাত্রদের সভায় শেখ মুজিবুর রহমান ও গোলাম মহম্মদ বক্তৃতা করেন। তারা বলেন, ‘আগামীকাল সকালে উপাচার্যের বাসার কাজের লোকদের বাজারে যেতে দেওয়া হবে না।’ [‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টালিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দি ন্যাশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১২৩]
কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ২০ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক হরতাল ও অবস্থান ধর্মঘট পালিত হয়। নিম্নবেতনভোগী কর্মচারীদের পক্ষে উপাচার্য ড. মোয়াজ্জেম হোসেনের বাসভবনে অবস্থান শুরু করেন। উপাচার্য পুলিশ ডাকেন। নির্ভীক শেখ মুজিবুর রহমানকে পাঠানো হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে।
১৯৪৯ সালের এপ্রিল মাসে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কৃত হয়ে কারাগারে নিক্ষিপ্ত হওয়ার সময় বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘ছাত্র হিসেবে না হলেও আবার ফিরে আসব।’ [বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশের জন্ম- কাজী আহমেদ কামাল, পৃষ্ঠা ৩৯] দুই মাসের বেশি জেলে থেকে তিনি ফিরে এসেছিলেন ১৯৪৯ সালের ২৬ জুন।
এ ঘটনার ২৩ বছর পর ১৯৭২ সালের ২০ জুলাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ চৌধুরী ও কয়েকজন শিক্ষককে উদ্ধারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের অফিসে আসেন। বঙ্গবন্ধুর কাছে অবরোধের খবর গেলেও সেদিন তিনি পুলিশকে ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হুকুম দেননি।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ৬ মে বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক সমাবেশে ভাষণ দেন। তাকে ডাকসুর আজীবন সদস্যপদ প্রদান করা হয়। তিনি ছাত্রদের লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, "দখলদার বাহিনী শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের হত্যা করেছে। এ সব মনীষির শূন্যস্থান ছাত্রদেরই পূরণ করতে হবে।" এ সময় তাকে ১৯৪৯ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিস্কারের আদেশের অনুলিপি প্রদান করা হয়। সমাবেশস্থলে বঙ্গবন্ধুর সামনে তাঁর ছাত্রত্ব বাতিলের আদেশের কপি ছিঁড়ে ফেলা হয়। আর বহিষ্কারের ৬১ বছর পর, ২০১০ সালের ১৪ আগস্ট সেই অন্যায় আদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ২০১০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেট সভায় বঙ্গবন্ধুর ছাত্রত্ব বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে তার অনেক পরিকল্পনা ছিল। এরই অংশ হিসাবে ১৯৭৩ সালে রাষ্ট্রপতির ১১ নম্বর আদেশের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা লাভ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডারের পার্ট-১-এর প্রথম পাতায় উল্লিখিত তথ্য অনুযায়ী, এই আদেশ ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর বলে গণ্য হয়।
১৯৭৩ সালের আইনের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সংস্থা হিসেবে সিনেট গঠন করেন। শিক্ষক এবং সাবেক ও বর্তমান ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব এ সংস্থায় নিশ্চিত হয়।
রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর হিসাবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগদান করে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করবেন-এমন পরিকল্পনা ছিল তার। (১৫ আগস্ট) বঙ্গবন্ধুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য, সেই সোনালি আলোর ভোর আর হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুজ্জ্বল ইতিহাসের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে আছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর নাম।
♦️স্বাধীনতার পর দেশে খাদ্য সংকটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই বেলা ভাতের ব্যবস্থার আশ্বাস দিতে প্রটোকল ছাড়াই আরেকদিন এসেছিলেন।
♦️১৯৭২ সালের শেষভাগে ছাত্ররা অটোপ্রমোশনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কিছু শিক্ষককে ঘেরাও করে। বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে আসেন। ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করেন।
♦️ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্ত্বশাসন দেন বঙ্গবন্ধু। জারি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ ১৯৭৩। বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে এসেছিলেন।
♦️১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য তাঁকে আমন্ত্রণ জানায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আমন্ত্রণটি সাদরে গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু। তখন বঙ্গবন্ধু ছিলেন রাষ্ট্রপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোররাতে একদল বিপদগামী সেনা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করে। বাঙালি চিরতরে হারায় তাদের মহান নেতাকে।
♦️ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি:
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর আগমন উপলক্ষ্যে তাঁর জন্য একটি চেয়ার তৈরি করা হয়েছিল। সেই চেয়ারটি যত্ন করে রেখে দেওয়া হয়েছে। সেদিন বঙ্গবন্ধুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি মানপত্র দেওয়ার কথা ছিল। মানপত্রটি ২০১০ সালে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেওয়া হয়।
♦️ ১৯৮৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৪ সালে হলটির নাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান করা হয়। ১৯৯৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রতিষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ স্মরণে ২০১৮ সালে রোকেয়া হলে ৭ মার্চ ভবন উদ্বোধন হয়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু টাওয়ার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মরণোত্তর সম্মানসূচক ডিগ্রি 'ডক্টর অব লজ' দেওয়া হয়েছে
♦️২৯ অক্টোবর ২০২৩ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মরণোত্তর ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি প্রদান করা হয়।বঙ্গবন্ধুকন্যা ও সমাবর্তন বক্তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে সম্মাননা পত্র গ্রহণ ও ডিগ্রি গ্রহণের রেজিস্ট্রারে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাক্ষর করেন।
♦️রাজনৈতিক নেতা এবং স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে পরবর্তীকালে তিনি বারবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এলেও ১৯৪৭ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ১৯৪৯ সালের ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত; ১ বছর ৪ মাস ১৮ দিন তিনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।
♦️বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে অসংখ্য বই লেখা হয়েছে, গবেষণাও হয়েছে বিস্তর। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গবেষণার প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ, ১৯৭৩ এর অধীনে ১৮তম সংবিধি সংযোজনের মধ্য দিয়ে ঢাবিতে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টি’ নামে স্বতন্ত্র একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
♦️ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর পিস অ্যান্ড লিবার্টি’ এর উদ্যোগে ২০২২ সাল থেকে ‘বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক’ প্রবর্তন করা হয়েছে। প্রতি বছর ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীতে শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে এ স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।
ছাত্রনেতা, যুবনেতা, আওয়ামীলীগ নেতা, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব-জাতির পিতার সব অভিধা, পরিচিতি, কার্যবলয় ও কর্মবলয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে।
লেখক: আন্তর্জাতিক কবি ও গবেষক।