আমার নাম অন্তর,
আমি হয়তো খুব অস্বাভাবিক কেউ নই। তবে দীর্ঘ সময় ধরে একটা বই পরলে সেই বইয়ের চরিত্র আমার মধ্যে এসে যায়। এজন্য আমি একটু কম বই পড়ার চেষ্টা করি। কিন্তু খুব সাম্প্রতিক আমি ৩-৪ টা বই পরেছি এরপর থেকে আমার মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন এসে গেছে। ইদানীং দেখা যাচ্ছে আমি একটানা এক ঘুমে ১-২ দিন পার করে দিচ্ছি কোনো প্রকারের ঘুমের ঔষধ ছাড়া। আমি এই সবে মাত্র ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষে পরছি তবে বয়স অতটাও কম নয় ২১-২২ হবে কিছু একটা। ইদানীং আমার মধ্যে কিছু নতুন অভ্যাস যোগ হয়েছে যা কোনো বই-পুস্তকে পড়ি নি এই প্রথম এমন হচ্ছে, আর কেমন যেনো প্রতিদিন স্বপ্নে দেখছি আমি আমি থাকবোনা পরিবর্তন হয়ে নতুন অন্তরে রুপান্তর হবো।
এমন আগেও হয়েছে আমি পরিবর্তন হয়েছি তবে সেইগুলা বই-পুস্তক পড়ার পর সেই বইয়ের চরিত্রে কেমন জানি রূপান্তরিত হতাম কিন্তু এখন একটু আলাদা।
প্রতিদিন এক স্বপ্ন দেখতাম যে আমি এমন হয়ে যাচ্ছি যেমনটা মানুষ কল্পনা করে এবং অনেক মানুষ হয়তো হতে চায় এমন কোনো অভ্যাস আমার মধ্যে এসে গেছে। হঠাৎ করেই আমার স্বপ্ন দেখা বন্ধ হয়ে যায় আর ঘুমালেই আমার মনে হয় যে কত ঘন্টা ঘুমালাম মিন্তু উঠে দেখি সবে মাত্র একঘন্টা হয়েছে আর আমার মনে হয় ১০-১২ ঘন্টা হয়ে গেছে তাই আর ঘুমাতাম না। রাতে ১২-১ টায় ঘুমালে ১-২ টায় উঠে যেতাম।তখন কী করবো কিছু তো করার নেই প্রথম কয়েকদিন টেলিভিসন বই ইত্যাদি পরে সময় কাটাতাম এরপর বাইরে হাটাহাটি করা আরম্ভ করি। হঠাৎ একদিন ভাবলাম স্বপ্ন কেনো হলো অনেক ভেবে বুঝলাম যে পরিবর্তন এখন শুরু তাই হয়তো আর সাবধান করছে না আর এতদিনের স্বপ্ন মনে হয় কোনো হুমকি স্বরুপ ছিলো। আগেই বললেই আমার পিতা ছিলেন অনেক বড় একজন সন্যাসি যিনি আমার জন্মের পর তার জীবদ্দশায় আর আমি তাকে দেখিনাই মৃত্যুর পর যদিও স্বপ্নে দেখেছিলাম কিন্তু জীবিত অবস্থায় দেখা হয়নি কখনো। চিঠি পেয়েছি বহুবার যাতে তিনি বলেছিলেন : পুত্র আমি চাই তুমি আমারই মতোন কোনো সন্যাসী হবে।
আরো অনেক কিছুই লিখতেন যা আমার জন্য শিক্ষাস্বরুপ ছিলো।
আমার হাটাহাটির অভ্যাস অনেক গাড় হলো আবার সাথে চা খাওয়ারো নতুন এক অভ্যাস হলো। আমি মাসে প্রায় এক - দুবার আমার ছোট্টবেলার বন্ধু আসিফের বাসায় যাই তবে ইদানীং সেটাও বন্ধ করে দিয়েছি কারন ওর চাচাতো বোন আমার প্রতি দূর্বল অনুভব করে আর আমি প্রেমে জরাতে চাইনা।
কারন আমার পিতাজি বলেছিলেন তুমি যখন প্রেম করবে তখন তোমার ব্রেইনের ৩ ভাগের ২ ভাগ জুরেই সেই ব্যক্তি থাকবে তাকে ছাড়া অন্য কিছু ভাবতেই পারবেনা। ২৩শে ডিসেম্বর একবার উপস্থিত হয়েছিলাম ওরা অনেক করে বলল অন্তর তুই একটু ৩১ শে ডিসেম্বর আসিস অনেক বড় করে প্রোগ্রাম করবো তোকে গান গাইতেই হবে! (আমার গান গাওয়ার খুব ভালো অভিজ্ঞতা ছিলো যদিও কন্ঠ খুব একটা ভালো ছিলোনা। কিন্তু আগ্রহ নিয়ে গাইতাম বলে শুনতে মধুর কন্ঠ মনে হতো)
আমি ঘুরে নাসরিনের চোখের দিকে তাকিয়ে বললাম হ্যা জানি! নাসরিনের চোখে তাকাতেই মনে হলো আমি যেনো পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী নারির চোখে তাকিয়ে আছি এতো মায়াবি চোখ। এর আগে যদিও নাসরিনের দিকে কখনো তাকাইনি তাই হয়তো দেখিনি। এত অপরুপ নারী। আমার মনে হচ্ছিলো চারিদিকে কেমন যেনো একটা ঘোর তৈরি হয়ে আছে। হালকা মৃদু হাওয়াও আসছিলো চোখ অন্ধকার হয়ে আসছে এতো সুন্দরি এক রমনির মুখে ভালোবাসার কথা শোনার পর তার দিকে যখন আমি ভালো করে দেখি তখনই বুঝতে পেরেছি কেনো এমন মনে হলো। আসলে মানবমস্তিস্ক এমমই যদি কাউকে ভালোবাসা হয় তবে চেহারা খারাপ হলেও মনে হয় সেই সবথেকে সুন্দর। এবার যেনো নাসরিন তার মৃদু সুরে গুন গুন করে গান আরম্ভ করে দিলো তখন থেকে আমি আর কিছু মনে করতে পারছিলাম না শুধু মনে হচ্ছিলো ওই মেয়ে কি কোনো জাদুকর? হ্যা অবশ্যই সে রুপের জাদুকর। তা নাহলে কেনো আমি এতটা বিশন্য হচ্ছি?। এই ভাবতে ভাবতেই আমার শরিরে ধাক্কা পৌছালো কে দিলো ধাক্কা টা নাসরিন? না ওর হাতে চুরি ছিল ধাক্কা দিলে অবশই শব্দ হতো তাহলে কে? আসিফ? এবার যেনো কানে আওয়াজ এসে পৌছালো হ্যা আসিফের ই আওয়াজ তখনই আমার ঘোর টা ভাংলো। আশেপাশে দেখি নাসরিন নেই তাহলে? এতক্ষন যা হচ্ছিলো তা কি স্বপ্ন ছিলো? না তাহলে আমি ছাদে কেনো আসিফকে জিজ্ঞাসা করবো? না তা ঠিক হবেনা যদি স্বপ্ন হয় তবে সে কি মনে করবে আমি তার চাচাতো বোন সম্পর্কে যাতা বলছি না। আমি এইসব ভেবে ওখান থেকে চলে আসি এরপর যদিও আর ওখানে আর যাওয়া হয়না।