"একটি অফিসে বা প্রতিষ্ঠানে তিন ধরনের কর্মকর্তা থাকেন।
প্রথম দল যারা সম্পদ নিয়ে কাজ করেন,
দ্বিতীয় দল যারা আপদ নিয়ে কাজ করেন আর
তৃতীয় দল যারা বিপদ নিয়ে কাজ করেন।
প্রথম দল সম্পদ নিয়ে যারা কাজ করেন তাদেরকে মোটামুটি হাইফ্লায়ার হিসাবে দেখা হয়। তারা নতুন প্রোডাক্ট বানান, প্রোডাকশন করেন, নতুন প্রজেক্ট করেন, বিভিন্ন টিম টেকওভার করেন। মুলত কোম্পানির চোখে তারা স্টার, তারা অতি দ্রুত বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে প্রোমোশন পান খালি তরতর করে উপরে উঠতে থাকেন।
দ্বিতীয় দল মানে যারা বিপদ নিয়ে কাজ করেন তারা মূলত সবাই, প্রতিষ্ঠানের অবস্থা যখন খারাপ থাকে তখন সবাই ঝাপিয়ে পড়েন। দ্বিতীয় দল মানে যারা আপদ নিয়ে কাজ করেন, তারা হচ্ছেন কোম্পানির আসল শক্তি।
একজন ইমপ্লয়ির আসলে মূল কাজ কি?
আমার মতে একজন ইমপ্লয়ির মূল কাজ বসের স্ট্রেস বা মানসিক চাপ কমানো।
তৃতীয় দলের লোকগুলো ঠিক এই কাজটাই করেন। কি বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে? তাহলে একটা উদাহরন দেই।
ধরেন আপনি নতুন একটা গাড়ি কিনেছেন। এই গাড়ি আপনাকে বহুদুর নিয়ে যাবে, এটা হচ্ছে সম্পদ।
আপনি গাড়ি এক্সিডেন্ট করলেন, ইঞ্জুর্ড হলেন। আপনার পাশে আপনার পরিচিত প্রায় সবাই এসে দাঁড়াবে। তৃতীয় দলের এরা হচ্ছে বিপদের সঙ্গী আর আপনার গাড়ি রাত ৩ টায় হাইওয়েতে ব্যাটারি নষ্ট হয়ে গেল। তখন আপনি আপনার যে বন্ধুকে ফোন করলে সব ফেলে রাত তিনটায় আপনাকে সাহায্য করতে আসবে, সে হচ্ছে আপদের বন্ধু। এই কাজ করতে কিন্তু সবাই আসবে না অথচ এই কাজে আপনার স্ট্রেস সবচেয়ে বেশি।
আপদের ইমপ্লয়ি হচ্ছে তারা যারা প্রতিদিনের খুটিনাটি সমস্যা বস বলার আগেই বা বলা মাত্রই দূর করে দিতে পারে। এদের এই কাজের রেজাল্ট কিন্তু পারফর্মেন্স এপ্রেইজালে আসবে না। বাৎসরিক গোলের মধ্যেও এইটা নাই। আপনি এ কাজের জন্য কাউকে প্রোমোশন বা বোনাস দিবেন না কিন্তু এই কাজগুলো না হলে আপনি চরম সমস্যায় পড়বেন।
এদেরকেই বলা হয় সাইলেন্ট পারফর্মার বা ইনভিজিবল ইমপ্লয়ি। এদের কাজের ইম্প্যাক্ট তখন বুঝা যায়, যখন তারা থাকে না।
কোম্পানি পার্স্পেক্টিভে গাড়ির মডেল আপগ্রেড করা ইঞ্জিন ভাল করা এগুলো সম্পদ করে কিন্তু নিয়মিত চাকায় হাওয়া, গ্যাস ভরা এই কাজগুলো যারা করে তারাই আপদের বন্ধু ইমপ্লয়ি, তারা কখনো রিকগনিশন পায় না। তারা সব গুছিয়ে দেয় আর আপনাকে কাজ শেষ হবার পর হ্যান্ডওভার করেন।