পোস্টস

নিউজ

পেন আমেরিকা: অরুন্ধতী রায়ের বিচার প্রত্যাহার করতে হবে ভারতকে

৬ জুলাই ২০২৪

নিউজ ফ্যাক্টরি

বুকারজয়ী লেখক অরুন্ধতী রায়ের বিরুদ্ধে বিচার করার জন্য ভারতের পরিকল্পনা প্রত্যাহারের দাবি করেছে পেন আমেরিকা। সম্প্রতি সংস্থাটির ওয়েবসাইটে এক বিবৃতির মাধ্যমে এই দাবি জানানো হয়েছে। 

১৪ বছর আগে কাশ্মীর নিয়ে মন্তব্য করার জন্য অরুন্ধতীর বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের (ইউএপিএ) অধীনে একটি মামলা এগিয়ে নেওয়ার জন্য ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা করেছে এই সংস্থাটি।  

পেন আমেরিকা দাবি করেছে, বুকারজয়ী এই লেখকের ওপর থেকে অবিলম্বে সমস্ত চার্জ প্রত্যাহার করা হোক এবং আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করার জন্য ইউএপিএ সংশোধন করা হোক।  

পেন আমেরিকার রাইটার্স এট রিস্কের পরিচালক কারিন কার্লেকার বলেছেন, ‘আমরা অরুন্ধতী রায়ের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা বাড়তি কৌশলের নিন্দা জানাই। এই মামলাটি খুব স্পষ্টভাবে দেখায় যে কীভাবে দীর্ঘায়িত আইনি হয়রানি, এখন নিপীড়নমূলক ইউএপিএ আইনের অধীনে মিলিত হয়ে স্বাধীন মতপ্রকাশের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত হয়রানির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।'      

তিনি আরও বলেছেন, ‘এই মামলাটি লেখক, কবি, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ এবং অ্যাক্টিভিস্টদের বিরুদ্ধে তাদের শান্তিপূর্ণ মতামত প্রকাশের জন্য কঠোর ইউএপিএ আইনের অধীনে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দ্বারা গৃহীত পদক্ষেপের একটি সিরিজের সর্বশেষ ঘটনা। এর ফলে কয়েকজনকে বছরের পর বছর জেলে কাটাতে হয়েছে।’  

তিনি যোগ করেছেন, ‘অরুন্ধতী রায়ের বিরুদ্ধে মামলাটি ভারতে বাকস্বাধীনতার জন্য আমাদের গভীর উদ্বেগকে তুলে ধরে। বিশেষ করে যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার তৃতীয় মেয়াদে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই আইনের ভুল প্রয়োগের অর্থ হলো ভিন্ন মতের অধিকারীরা সরকারের বিরুদ্ধে লিখতে বা কথা বলার জন্য বড় ঝুঁকি নিচ্ছে। আমরা মোদি সরকারকে আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই আইন সংশোধন করার জন্য অনুরোধ করছি।' 

১৪ জুন দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ইউএপিএ আইনের অধীনে এই লেখকের ২০১০ সালের বক্তৃতার জন্য বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষকে বিচার করার অনুমতি দেন। এই আইনে কোনো অভিযোগ ছাড়াই অভিযুক্তকে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়।      

২০১০ সালে মানবাধিকার একটি সংগঠন আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অরুন্ধতী রায় কাশ্মীর নিয়ে ভারত সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করেন। তিনি বলেছিলেন, ‘কাশ্মীর কখনই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল না। এটি একটি ঐতিহাসিক সত্য। এমনকি ভারত সরকারও এটা মেনে নিয়েছে।' 

পরবর্তীতে কাশ্মীরের একজন সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট বিখ্যাত এই লেখক এবং অ্যাক্টিভিস্টের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। 

উল্লেখ্য, অরুন্ধতী রায় ১৯৯৭ সালে ‘দ্য গড অব স্মল থিংস’ উপন্যাসের জন্য বুকার প্রাইজ জিতেছিলেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় নাগরিক যিনি সাহিত্যের মর্যাদাবান এই পুরস্কারটি পান। তার উল্লেখযোগ্য বইগুলো হলো দ্য মিনিস্ট্রি অব আটমোস্ট হ্যাপিনেস, আজাদি, দ্য এন্ড অব ইমাজিনেশন। 

সূত্র: পেন আমেরিকা