শ্বশুরের বাইক নিয়ে লং ড্রাইভে বের হয়েছিলাম, উদ্দেশ্য রিকশা ভাড়া বাঁচানো। বাইক নিয়ে শ্বশুর বাড়ির লিঙ্ক রোড ছেড়ে কুমিল্লা বিশ্বরোডে উঠলাম। পুরো রোড ফাঁকা পেয়ে ও তেল খরচ বেশি হওয়ার ভয়ে একেবারেই ধীর গতিতে বাইক চালাচ্ছি। বাইক নিয়ে একটু সামনে যেতেই তাকিয়ে দেখি বাইকের লম্বা সিরিয়াল দাঁড় করিয়ে রেখেছে। পুরো রাস্তা ফাঁকা থাকার পরে ও সবাই সিরিয়ালে কেন দাঁড়িয়ে আছে তা দেখার জন্য আরেকটু সামনে যেতেই দু'জন পুলিশ ভাই হাত বাড়িয়ে বাইক থামিয়ে ধমক দিয়ে বললো, "দেখোস না সবার ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করছি! সবাই দাড়িয়ে আছে দেখে ও সামনে আসলি কেন- শা**? দেখি তো তোর ড্রাইভিং লাইসেন্স?"
বাইকের পিছনের টুল বক্স থেকে কাগজ দিয়ে মোড়ানো শ্বশুরের ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড বের করে পুলিশের হাতে দিলাম। পুলিশ কার্ড হাতে নিয়ে একবার আমার দিকে তাকাচ্ছে আরেকবার কার্ডের দিকে তাকাচ্ছে। কি যেন মিলছে না অবশেষে অনেক বিশ্লেষণ করে বললো, "এই কার্ড তো কোন ভাবেই তর হতে পারে না!"
"কেন পারে না, স্যার?"
"কার্ডে দেওয়া ব্যাক্তির ফটোতে মুখ ভর্তি দাড়ি আর তর মুখে তো কোন দাড়িই নেই, শা**!"
আমি বরফ শীতল গলায় বললাম, "এগুলো আমারই দাড়ি- স্যার, বিয়ের আগে কেটে ফেলেছিলাম। যেন সিস্টেমে বয়স বউয়ের চেয়ে ও কমিয়ে আনা যায়।"
পুলিশ আগের চেয়ে কঠিন গলায় ধমক দিয়ে বললো, "তর যে বিয়ের আগে মুখ ভর্তি এতো বড় বড় দাড়ি ছিল এটার প্রমাণ দেখা?"
আমি মানিব্যাগ থেকে এক হাজার টাকার একটি নোট পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললাম, "এই নিন তার প্রমাণ।"
"ঠিক আছে, এবার তাহলে যাও।" এই বলে আমাকে ছেড়ে দিলো। আমি একটু সামনে গিয়ে পিছনের দিকে তাকিয়ে হাসলাম। এই হাসি আন্তরিকতার হাসি নয়, ছয় মাস ধরে অনেক চেষ্টার পর ও এক হাজার টাকার জাল নোটটি চালিয়ে দিতে পারার হাসি!