পোস্টস

পোস্ট

পরিশেষে জিহ্বার সংযত ব্যবহার আনে সকলের কল্যাণ।

৬ জুলাই ২০২৪

Madhab Debnath

কোন কিছু বলার আগে চিন্তা করে বলুনঃ

হুট করে কোন কথা বলে ফেলার চেয়ে বরং একটু সময় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করুন।আপনি কি বলতে যাচ্ছেন, যেটা বলতে যাচ্ছেন সেটা সম্পর্কে আপনার যথেষ্ট ধারণা আছে কি না এবং আপনার কথায় শ্রোতার কেমন প্রতিক্রিয়া হতে পারে? কথা বলার আগে একটু চিন্তা করার ফলে অনেক বেফাঁস কথা বলার হাত থেকে বেঁচে যাবেন এবং আপনার কথা হয়ে উঠবে অনেক বুদ্ধিদীপ্ত।আপনার কথা যতক্ষণ আপনার মুখের ভিতর আছে ঠিক ততক্ষন আপনি নিরাপদ, কথা মুখ ফস্কে বের হলেই আপনি কেমন তা নির্ধারিত হয়ে যাবে।

একটু বিরতি দিয়ে কথা বলুনঃ

আমরা যখন বাসায় বা বন্ধুদের সাথে কথা বলি তখন আমাদের খেয়াল থাকে না যে আমরা কি বলছি। হড়বড় করে সব কথা বলে ফেলি অনেক দ্রুত।এর চেয়ে একটু ধীরে প্রত্যেকটা শব্দের উপর পর্যাপ্ত জোর দিয়ে কথা বলার চেষ্টা করুন। এতে করে আপনার কথা সবাই প্রথমবারেই বুঝবে এবং আপনাকে দেখবে একটু আলাদা দৃষ্টিতে।

শব্দভান্ডার বাড়ানঃ

হোক বাংলা কিংবা ইংরেজি, সব ভাষার ক্ষেত্রেই পর্যাপ্ত শব্দ জানা আবশ্যক। এতে করে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না যে এই শব্দের পর আপনি অন্য কোন শব্দ ব্যবহার করবেন।আমরা দৈনন্দিন জীবনে যেসব শব্দ ব্যবহার করি, বাংলা অভিধান খুলে তার সমার্থক শব্দগুলো দেখে নিতে পারেন অথবা এমন অনেক শব্দ খুঁজে নিতে পারেন যেগুলো সাধারণ কথায়  আমরা খুব কমই ব্যবহার করি এবং তা প্রয়োগ করুন উপযুক্ত ক্ষেত্রে বুঝে। এতে আপনার কথা যেমন সুন্দর হবে তেমনি শ্রোতার মনে আপনার জ্ঞান সম্পর্কে ভাল ধারনা জন্মাবে।

অঙ্গভঙ্গিঃ

আপনার কথার মুল্য অনেকগুন বাড়িয়ে দিতে পারে সঠিক বডি ল্যাংগুয়েজ। আপনার এক্সপ্রেশন, দাঁড়ানো বা বসার ভঙ্গি, হাত নাড়ানো এসব দিকে মনযোগ দিন।কোন কিছুই অতিরিক্ত করার দরকার নেই। তবে কথার সাথে যেন অঙ্গভঙ্গি খাপ খায় সে চেষ্টা করুন।অনেকের অভ্যাস থাকে অন্যের সাথে কথা বলার সময় কাঁধে হাত দেয়া বা বারবার গায়ে খোঁচা দিয়ে নিজের দিকে মনযোগ ফেরানোর।আপনার যদি এমন কোন অভ্যাস থেকে থাকে, দয়া করে এখনি পরিহার করুন।

আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা বলুনঃ

ধরা যাক, ক্লাস বা অফিসের কোন প্রেজেন্টেশন।টপিক সম্পর্কে আপনার খুবই ভাল ধারণা থাকা সত্ত্বেও শুধু মাত্র আত্মবিশ্বাসের অভাবে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছেন আপনি, এবার আপনার ভয়েস টোন খানিকটা বাড়ান।যেখানে জোরে কথা বলা দরকার সেখানে জোরে, যেখানে আস্তে কথা বলা দরকার সেখাসে আস্তে কথা বলুন এবং এমন ভাবে কথা বলুন, যাতে শ্রোতার মনে ধারনা জন্মে আপনি যা  বলছেন তা সঠিক। এমনকি আত্মবিশ্বাসের সাথে মিথ্যা বলেও আপনি পার পেয়ে যেতে পারেন অনেক সময়!

শুনুন এবং বুঝুনঃ

শুধু মাত্র আপনিই হড়বড় করে সব বলে যাবেন, এটা স্মার্টনেসের মধ্যে পড়ে না বরং আপনি যার সাথে কথা বলছেন তার প্রত্যেকটা কথা শোনা এবং বোঝাও স্মার্টনেসের অন্তর্ভুক্ত।কেউ আপনার সাথে কথা বলার সময় তাকান সরাসরি তার দিকে, তার চোখের দিকে। কোন কথা বুঝতে সমস্যা হলে তার ঠোটের দিকে তাকিয়ে বুঝতে চেষ্টা করুন সে কি বলছে।এটাকে বলে ‘লিপ রিডিং’ যেটা কম শ্রবন শক্তির অধিকারী মানুষজন ব্যবহার করে থাকেন।তার কথায় সম্মতি জানান, মাথা বা হাত নেড়ে তাকে বোঝান যে আপনি তার কথা মন দিয়ে শুনছেন এবং কারো কথা শোনার সময় মন দিয়ে শুনুন এবং তার প্রশ্ন বুঝার চেষ্টা করুন কারণ প্রশ্ন ঠিক ভাবে বুঝলেই কেবল আপনি ঠিক উত্তরটা দিতে পারবেন, এতে অনেক ভুল বুঝাবুঝিও কমবে।

অনুসরণ করুন রেডিও বা টিভির সংবাদ উপস্থাপকদের বা নিজের কোন প্রিয় অভিনেতাকেঃ

প্রত্যেকটা মানুষই স্বতন্ত্র। আপনার অবশ্যই নিজস্বতা বজায় রাখা উচিত। আপনি নিজে যেভাবে কথা বলতে সাচ্ছন্দ বোধ করেন সেভাবেই বলবেন।অন্যকে অনুসরণ করতে গিয়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলার কোন মানেই হয় না। তবে শেখার জন্য একজন গুরু আবশ্যক।শিক্ষক ছাড়া আপনি কখনো কোন বিষয় ভালভাবে শিখতে পারবেন না।তাই কথা বলার স্টাইল শেখার জন্য বেছে নিতে পারেন নিজের কোন প্রিয় অভিনেতা, রেডিও বা টিভির কোন উপস্থাপককে।বোঝার চেষ্টা করুন, তিনি কিভাবে কথা বলছেন, টোন কখন কোথায় কেমন, এবং বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কেমন।এর পর আপনি পরিস্থিতি এবং পরিবেশ বুঝে তার কিছু অংশ প্রয়োগ করুন আপনার বাস্তব জীবনে।

পরিশেষে জিহ্বার সংযত ব্যবহার আনে সকলের কল্যাণ। সকলের কল্যাণ হোক, ধন্যবাদ।