সুরভির সাথে বোধহয় আমার প্রেম ছিল।কতদিনের ছিল তা জানি না।তবে যতদিন ধরে ওকে চিনি ততদিন ধরেই আমাদের প্রেম ছিল বলে বিশ্বাস করি।
সুরভি আমার জুনিয়র ছিল।কিন্তু আমাদের “সম্পর্ক” এর মধ্যে সে-ই ছিল সিনিয়র!
মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে ওকে বলতাম,
“এমন মা-মাসীর মত আচরণ করো না তো। ভাল লাগে না।”
তখন রাগ না করে উলটো সে জবাব দিত,
“তাহলে কি বউয়ের মত আচরণ করব?”
আমি শুধু হাসতাম,কোনো উত্তর দিতে পারতাম না।
বয়স বেড়েই চলছে, আমাদের ভালবাসাও গভীর হচ্ছিল।
একদিন সুরভি বলে,
“এই শহরে সবচেয়ে কমদামী বাসা কোনটা?যেখানে সবচেয়ে কম ভাড়ায় থাকা যাবে?”
আমি অবাক হয়ে জিগ্যেস করি,
“কাদের জন্য?”
সুরভি অল্প শব্দে উত্তর দেয়,
“আমাদের জন্য?”
অবাক হয়ে জিগ্যেস করি,
“কেনো?বাসায় বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছি?”
সুরভি দীর্ঘশ্বাস ফেলে। সে জানে আমি যে চাকুরী করি আর তার হাতখরচের টিউশনির টাকায় এই শহরে আমাদের দুইজনের চলা সম্ভব নয়।
আমি নিশ্চুপ বসে থাকি। কোন উত্তর দিতে পারি না। সুরভি আমার দিকে তাকিয়ে থাকে,হয়তো কোনো ইতিবাচক উত্তরের আশায়।কিন্তু সব বিফলে যায়।
একদিন হঠাৎ শুনি তার বিয়ে। আমাকে ডেকেছে শহরের সবচেয়ে বড় পার্কে।তাও সকাল ৭ টায়।
সুরভি এসে অনেক কথা বলল। আমাদের সম্পর্কের শুরু থেকে আজ অব্দি নানা কথা। আমি শুনেই যাচ্ছি,ও বলেই যাচ্ছে।
তারপর, হঠাৎ জিগ্যেস করে,
“শেষবারের মত কিছু চাওয়ার আছে তোমার?”
আমি তার দিকে তাকিয়ে থেকে বলি,
“থেকে যাও সুরভি...”
সুরভি মুচকি হাসি দিয়ে চলে যায়।আমি আমি দাঁড়িয়ে থাকি কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে।
- - -
“তারপর কি হলো বাবা?”
“তারপর, তোমার মা,মানে আমার সুরভি সব ছেড়ে চলে আসল আমার কাছে।আমার শেষ ইচ্ছাটা রাখার জন্য!!সুরভি থেকেই গেলো,মাঝখানে কেটে গেল ২০ টি বছর।”
---