নরম ঘাঁসে শুয়ে মাথার উপর মস্ত বড় বিমান উড়ে যেতে পণ করেছিলাম বড় হয়ে আমি এমন এক বিমান কিনবো। বিমানে চেপে বসতে নয় , সাই করে উড়ে যেতে দেখবে আর কি যে হাসি যে হাসবো। কিন্তু বড় হলাম এখন চেপে বসতে ইচ্ছে হয় , নরম ঘাঁসে শুতে গেলে ঘাস এখন ব্যাথা দেয়। আমি এখন তাদের নই।
এরপর এক সন্ধ্যে জোনাক দেখে ইচ্ছে হল। ইস ! যদি জোনাক হতাম মিট মিট করে জ্বলে উড়ে বেড়াতাম। তারপর কিছু বয়স হলে জোনাক বোতালে বন্দি করে অন্ধকারে ইচ্ছে হত ইশ ! এ জোনাক যদি আমি হতাম। বন্ধ বোতালে জ্বলে মানুষের সুখের সঙ্গি হতাম । সেই জোনাকের খোঁজ নেই ।
কারণ এখন আমি তাদের নই।
ঠিক সন্ধ্যে নামার গানে পাখির কিচিরমিচিরে তাদের একজন আমি হতাম। কিন্তু এখন তাদের আমি আর কেউ নই।
শীতের সকালে শিশির ভিজে থাকা ধান গাছে হাত বুলিয়ে বলে বেড়াতাম- বড় হলে আমি তোমাদের হব। কিন্তু বড় হয়েছে কিন্তু আমি আর তাদের কেউ নই।
রজনী বিরহে সিক্ত হাসনাহেনার গন্ধে আমি ঘুমের ঘোরে আশ্বস্ত করলাম - ভয় নেই । আমি ও তোদের হব। কিন্তু বড় হলাম তারা এখন কই?
ঠিক পখর দুপুরে দূরের ওই তাল গাছকে বলেছিলাম একা কেন ? আমি আসছি। এরপর কত বসন্ত গেল কিন্তু তারা এখন আমার নয়।
বাবুই পাখিরে তোর ভয় নেই। আমার বাসা হবে তোর পরে। বর্ষায় স্বাধীনতার সুখে বয়ে বেড়াবো এই বলে আমি তোমাদেরই ছেলে। ছেলে আমি তাদের কিন্তু তারা তো এখন আর আমার কেউ নই।
এখন আমি মধ্য রাতে এক বিলাতি পাখি উষ্ণ ভালোবাসার খোঁজে সব ঘরে ভিখারি হয়ে ফেরি করি। আমি এখন সন্ধ্যে প্রদীপ বাতি যার পুরো শরীর জুড়ে আলোর ঘুড়ি। নাটাই ছিড়ে দূর আকাশে একা একা ঘুরি। আমি এখন দিয়াশলাইয়ের কাঠি ,আলো জ্বালিয়ে নিজেই অন্ধকারে লাপিয়ে পড়ি।
আমি তেমন একজন যারা পুরো বসন্ত জোড়া শালিক পাখি।
অবেশেষ আমার গায়ে এখন বসন্ত গুটি।