প্রিয় চৈতালী ,
আজও বুঝি তোমার বড্ড অভিমান হচ্ছে। বৃষ্টির দিন তবুও আমি অফিসের কাজে বসে আছি। তুমি নিশ্চয়ই ওপারে বেলকুনিতে বসে আছো।বৃষ্টি ভিজবার বায়নায় বুঝি আজও রান্না করিও। তুমি সেই লাল শাড়ি পড়ে কি আমার অপেক্ষায় আছো যে দুজন বৃষ্টিতে ভিজবো। রাগ করো না। আমি তোমার লাল শাড়ি নিয়ে অল্প কিছু দিনের মাঝেই ফিরছি। এখন তো আর চোখ তেমন দেখি নাহ। তবুও তোমার গন্ধ শুকে লাল শাড়িটা ঠিক করে নিয়ে আসবো। দেখো,একটুও ভুল হবে নাহ।
আজকাল রোজ আমার মাথাটা ঝিমঝিম করে। তুমি যখন থাকতে তখন তো তুমি সরিষের তেল আমার নাকে মুখে মেখে দিতে। তাত কেমন যেন আমার সব ক্লান্তি নিমিষেই উড়ে যেতো। তুমি একটু অপেক্ষা করো। সেই সরিষের তেলের বোতল টা আমি খুব জোরসে টিপি আটকিয়ে রেখেছি। কয়েক ফোটা আছে। তা নিয়ে আমি শীঘ্রই তোমার কাছে ফিরছি।
সেদিনের কথা কি তোমার মনে পড়ে। তখন আমাদের খুব করে হলে বিয়ের বয়স দিন দশেক এ গড়িয়েছে। আমি একটা খুশবুর বোতল বাজার থেকে কিনে এনেছিলাম। তুমি ওই গন্ধটা খুব ভালবাসতে। তুমি চলে যাওয়ার পর আমি আর একফোটাও ব্যবহার করি নি। রেখে দিয়েছি এই বিশটা বছর। নিয়ে আসবো সাথে করে। অপেক্ষা কর আমি মেখে আবার তোমার মনের দুয়ারে যাবো।
তখন আমাদের প্রথম প্রথম দেখা হতো। কালো গোলাপের বেশ ছড়া দাম ছিলো। মনে পড়ে রীতি ভেঙ্গে তুমি আমায় একটা কালো গোলাপ দিয়েছিলো। বিয়ের পর তোমায় আমি ওটা আর ধরতে দেই নি। এবার তুমি একটু অপেক্ষা করো সঙ্গে করে নিয়ে আসবো। তুমি দেখো কালো গোলাপ কি অপরূপ দেখায়।
কালো ক্যাসিং এর ক্যাসিও ঘড়ির কথা নিশ্চয় তোমার মনে পড়। যেটা তুমি টাকা জমিয়ে আমাদের প্রথম বিবাহ বার্ষিকীতে আমাকে দিয়েছিলে। ঘড়িটা বছর দুয়েক পর নষ্ট হয় গেছিলো। তুমি ওটাকে ড্রয়ার থেকে ফেলে দিয়েছিলে। আমি কিন্তু কুড়িয়ে রেখেছি। আরেকটু অপেক্ষা করো। ওটা আবার হাতে লাগিয়ে তোমার কাছে। তুমি দেখো,আমাকে খুব সুন্দর দেখাবে।
ওহ আচ্ছা বলাই হয় নি। আজ আমাদের সুবলের ছেলের জন্মদিন। ওদিকে ডাক পড়েছে। তুমি একটু অপেক্ষা কর। আমিও ফিরছি। এই তো আর মাত্র কয়টা দিন।
৮২/৮৩ ঠিকই তোমার কাছে পৌঁছছি।
অপেক্ষা কর। আমিও আসছি।